জোয়ারে ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত, পানিবন্দি হাজারো মানুষ

উপজেলা প্রতিনিধি, হাতিয়া (নোয়াখালী)
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২: ১৩

ভারী বর্ষণ, বৈরী আবহাওয়া, অমাবস্যা ও গভীর সমুদ্রে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল। এর ফলে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় প্রায় চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, অমাবস্যা ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে গত দুই দিনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন প্রায় চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জলোচ্ছ্বাসে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বেড়িবাঁধের বাইরের হাজার হাজার মানুষ। জোয়ারে নিঝুম দ্বীপ, সুখচর ইউনিয়নের ২, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড় ও সোনাদিয়া ইউনিয়নের চরচেঙ্গা ৪নং ওয়ার্ড, চরইশ্বর ইউনিয়ন ও হরণী ইউনিয়নে বেড়িবাঁধের বাহিরে অধিকাংশ এলাকা সম্পূর্ণ ডুবে গেছে। এসব এলাকায় জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বসতঘর, রান্নাঘর, আঙিনা, রাস্তাঘাট ও মাছের ঘের। কোথাও হাঁটুপানি, আবার কোথাও কোমরপানি জমে আছে।

সুখচর ছাড়াও নলচিরা, চরঈশ্বর ও নিঝুম দ্বীপের বিস্তীর্ণ জনপদেও পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া বেড়িবাঁধ না থাকায় উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন নিঝুম দ্বীপ, দমারচর, ঢালচর, চরগাসিয়া, নলেরচর, বয়ারচর, চর আতাউর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব চরে বসবাসকারী হাজারো মানুষ এখন বিপদাপন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

সোনাদিয়া ইউনিয়নের জেলেপল্লির আবুল কাশেম বলেন, শুধু চাই একটি বেড়িবাঁধ, যাতে অন্তত পরিবার নিয়ে বাঁচতে পারি। সোনাদিয়া ইউনিয়নের বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চরচেঙ্গা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মন্নান বলেন, উপকূল উন্নয়নে স্রেফ মানবিক সহানুভূতি বা বার্ষিক বরাদ্দ নয়, দরকার সুদূরপ্রসারী টেকসই বেড়িবাঁধ।

নলচিরা ইউনিয়নের তুফানিয়া গ্রামের বাসিন্দা খবির উদ্দিন বলেন, জোয়ারে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে লোনা পানি প্রবেশ করে কৃষিজমি ও মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া নদীর পাড়ে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো এলাকা হুমকির মুখে পড়বে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জামিল আহমেদ পাটোয়ারী আমার দেশকে বলেন, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারে নলচিরা ইউনিয়নের তুপানিয়া, আল-আমিন গ্রাম, সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড, চরঈশ্বর, হরণী ইউনিয়নের কিছু এলাকায় প্রায় চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আমার দেশকে জানান, হাতিয়ার বেশ কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত