পূর্বের ঘটনায় থানায় ৩ মামলা

সীতাকুণ্ডে দুই সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন

উপজেলা প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৩৬
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৪৬

সীতাকুণ্ডের আলোচিত জঙ্গল সলিমপুর আবারও রক্তাক্ত সহিংসতায় উত্তাল হয়ে উঠেছে। এবার সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তু ছিল গণমাধ্যমকর্মীরা। রোববার দুপুরে সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন এখন টেলিভিশনের দুই সাংবাদিক। ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালানো হয় তাদের ওপর। আহত অবস্থায় দুজনকেই হাসপাতালে নেওয়া হয়। সাংবাদিকের ওপর এ নৃশংস হামলার ঘটনায় পুলিশের কার্যকর উপস্থিতি ও জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন করে সন্দেহ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

জানা গেছে, শনিবার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে জঙ্গল সলিমপুরে সংঘর্ষ ও ব্যাপক গুলিবিনিময় অপহরণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। রবিবার সে ঘটনার ফলো-আপ প্রতিবেদন তৈরির উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে যান এখন টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হোসাইন আহমেদ জিহাদ ও ক্যামেরাপারসন মো. পারভেজ। কিন্তু সেখানে পৌঁছেই তারা ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয় জিহাদকে, আর পারভেজকে বেধড়ক মারধর করা হয়।

বিজ্ঞাপন

হামলাকারীরা শুধু শারীরিকভাবে আঘাত করেই থেমে থাকেনি। তারা সাংবাদিকদের গাড়ি ভাঙচুর করে এবং ক্যামেরা, মোবাইল ফোন সহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় দুই সাংবাদিককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো একদিন আগে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষ, অপহরণ এবং হত্যার মতো ঘটনার পরও পুলিশের কোন তৎপরতা চোখে পড়ার মত ছিল না। তবে গতকালের ঘটে যাওয়া ঘটনায় দুটি মামলা হওয়ার কথা পুলিশ নিশ্চিত করলেও কতজনকে আসামি ও মামলার বাদী কে কিছু জানাতে পারেননি পুলিশ। 

এসব বিষয়ে সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন আমার দেশকে বলেন, পূর্বের ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। এই তিন মামলায় প্রায় ২ শত জনকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, জঙ্গল সুলিমপুর দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হবে।

আহত সাংবাদিক হোসাইন আহমেদ জিহাদ জানান, তারা কোনো পক্ষের হয়ে যাননি, শুধুমাত্র পেশাগত দায়িত্ব পালনে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো কিছু বোঝার আগেই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। ক্যামেরাপারসন পারভেজ বলেন, মারধরের সময় মনে হয়েছিল তিনি বেঁচে ফিরতে পারবেন না। আশেপাশে কোনো পুলিশ উপস্থিতি ছিল না বলেও জানান তিনি।

জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় এর আগেও অসংখ্যবার অবৈধ দখল, ভূমি জবরদখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এমনকি অস্ত্র কারবারের মত ঘটনা ঘটেছে। ৫ আগস্টের পরও সেখানে একাধিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এলাকাটি একাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপের দখলে রয়েছে। তাদের মধ্যে আছে ইয়াছিন, জামাই ইয়াছিন, ফারুক, মশিউরসহ আরও অনেকের নাম। প্রশাসন কি এদের সম্পর্কে জানে না? না জানার ভান করছে?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাংবাদিকদের ওপর এই হামলা চালিয়েছেন জঙ্গল সলিমপুর ও আলীনগর দখলে রাখা শীর্ষ সন্ত্রাসী ইয়াছিনের অন্যতম ক্যাডার জামাই ইয়াছিন, তার ভাই ফারুকসহ মশিউরের লোকজন।

জঙ্গল সলিমপুরে সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়ে নিন্দা ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গল সলিমপুরে যা ঘটছে, তা শুধু একটি এলাকার আইনশৃঙ্খলার সমস্যা নয়। এটি দেখায়, সেখানে রাষ্ট্রের উপস্থিতি কতটা দুর্বল। যখন কোনো এলাকা দিনের পর দিন সন্ত্রাসীদের দখলে থাকে, আর পুলিশ শুধু বলে তদন্ত চলছে বা ফোর্স পাঠানো হয়েছে। তখন মনে প্রশ্ন জাগে, এই জায়গাটি কি আদৌও প্রশাসনের আওতায় থাকা কোনো অঞ্চল, নাকি সরকারের নজর বহির্ভূত এক বিচ্ছিন্ন এলাকা? আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ করছি, সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে কে কার লোক কোন গ্রুপের লোক এটা আমাদের বিষয় না। দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। সাংবাদিকরদের কাজে নিরাপত্তা না থাকলে সাংবাদিকরা মাঠে নামতে বাধ্য হবে।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত