আমার দেশে গত ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘ড্রাইভারে ‘জিম্মি’ কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ’ শিরোনামের সংবাদের পর অবশেষে ব্যবস্থা নিয়েছে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ। সরকারি গাড়িচালক রঞ্জন কুমার মজুমদারকে চট্টগ্রাম বোটানিক্যাল গার্ডেনে বদলি করা হয়েছে। এরআগে ৮ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল-মামুন।
গাড়িচালক রঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে সহকারী বন সংরক্ষক (টেকনাফ ও উখিয়া) দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. মনিরুল ইসলামকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হিসেবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আরো দুইজন কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বনবিভাগ সূত্র জানায়, ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে রঞ্জন কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরা হয়। অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ১৭ বছর ধরে একই দপ্তরে থেকে প্রভাব বিস্তার, পাহাড় কাটা ও গাছ কাটায় সহযোগিতা, বালু উত্তোলনে সুবিধা প্রদান, ফার্নিচার ব্যবসায়ীদের ‘লাইন পাস’ নিশ্চিত করা, অভিযানের গোপন তথ্য পাচার, অপরাধীদের কাছ থেকে মাসোহারা গ্রহণ সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত৷
বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, গাড়িচালক রঞ্জন কুমার মজুমদারকে বদলি করা হয়েছে। সংবাদে প্রকাশিত অভিযোগ আমরা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দক্ষিণ বনবিভাগের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, শুধু বদলিতে বিষয়টি সীমাবদ্ধ রেখে রঞ্জনের অপরাধ আড়াল করার চেষ্টা চলছে। তদন্ত কমিটিও ‘আইওয়াশ’ হতে পারে বলে তারা মন্তব্য করেন। কর্মকর্তাদের মতে, তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপরাধীদের সঙ্গে অসদৃশ সম্পর্ক নিয়ে অভিযোগে আলোচিত দক্ষিণ বন বিভাগের সরকারি গাড়িচালক রঞ্জন কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে আমার দেশ–এ প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে এবার আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করলো বিভাগ।

