চট্টগ্রামের রাউজানে বালুখেকোরা এবার সারার করে দিচ্ছে রাবার বাগান। এতে হুমকির মুখে পড়েছে রাবার বাগানটি।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের রাউজানে নির্বিচারে কেটে নেওয়া হচ্ছে ডাবুয়া রাবার বাগানের টিলাভূমির মাটি। মাটি কেটে নেওয়ার পাশাপাশি কেটে ফেলা হচ্ছে রাবার বাগানের গাছ । গাছ কেটে সেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ডাবুয়া মন্দাকিনী সেবাশ্রমের পেছনে থাকা রাবার বাগানে থাবা পড়েছে বালুখেকোদের । গত মঙ্গলবার দুপুরে বাগানের ভেতরে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
দেখা গেছে, বাগানের ভেতরের টিলাভূমিতে রয়েছে অন্য প্রজাতির একটি গাছের বাগান। ওই বাগান থেকে গাছ কাটছে কয়েকজন শ্রমিক। শ্রমিকদের সঙ্গে গাছ কাটার কাজে ব্যস্ত মোহাম্মদ মুছা নামে এক ব্যক্তি বলেন, বাগানের হেলে পড়া গাছগুলো তিনি কিনে নিয়েছেন জ্বালানি হিসেবে ইটভাটায় সরবরাহ করতে। বিক্রি করেছেন মিয়া মেম্বার। মুছার দাবি বাগানটি মিয়া মেম্বারের। নির্জন এ বাগানের ভেতরে একটি খাট পাতা দেখা গেছে। সেখানে লাকড়ি কুড়াতে ব্যস্ত কয়েকজন বলেন, যারা মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত, তারা রাতে এখানে থাকেন। এ খাটে বসে মাটি কাটা ও ট্রাকে মাটি সরবরাহের কাজ তদারক করেন। সন্ধ্যার পর এখানে এক্সকাভেটর আনা হয়। রাতভর মাটি কেটে ট্রাক পাঠানো হয় বিভিন্ন স্থানে নিচু এলাকা ভরাটের কাজে।
দেখা যায়, ইতোমধ্যে এ বাগানের কয়েক একর টিলাভূমি কেটে মাটি নিয়ে গেছে। মাটি কেটে নেওয়ার পাশাপাশি বহু রাবার গাছও উজাড় করে ফেলা হয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, ডাবুয়া রাবার বাগানের ভেতর সৃষ্টি করা হয়েছে বহু বালু উঠানোর ফাঁদ। এসব ফাঁদে আটকে পড়া বালু উঠিয়ে বাগানের ভেতর একেকটি বালুর পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে। মাটি ও বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বাগানের ভেতর গাছ থেকে বহু রাস্তা তৈরি করেছে। সৃষ্ট এসব রাস্তা দিয়ে রাতে ট্রাকে করে এসব মাটি ও বালু সরবরাহ করে থাকে। বাগানের ভেতর পৌর এলাকার মেলুয়া, আলীখীল, ওয়াহেদেরখীল এলাকা দিয়ে প্রবাহিত রাউজান খালে বালুর ফাঁদ তৈরি করে বছরের পর বছর বালু ওঠানোর কারণে খালে দেওয়া একটি স্লুইচগেট ধসে গেছে। বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বাগানের ভেতর বালু উত্তোলন করছে। এসব বালু রাতে সরবরাহ করা হয় ট্রাকে করে।
এখানে বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে একজন রফিক সওদাগর দাবি করেন, পাহাড়ের টিলাভূমি থেকে নেমে আসা বালু জমা হয় বাগানের থলিতে থাকা কৃষিজমিতে। ব্যক্তিমালিকানায় থাকা ওই সব কৃষিজমি তারা বার্ষিক ইজারা নিয়ে বালু তুলে বিক্রি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিশ্চিত হয়ে অভিযান পরিচালনা করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

