প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চরাঞ্চলের কোমলমতি শিশুরা

উপজেলা প্রতিনিধি, সদরপুর (ফরিদপুর)
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ১৭: ৪৩

দারিদ্র্যতা, অজ্ঞতা, অসচেতনতা, অবজ্ঞা, অবহেলা এবং চরম উদাসীনতার কারণে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরাঞ্চলের কোমলমতি শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে প্রতিবছর বঞ্চিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে, উপজেলার চরাঞ্চলের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে স্থানীয় অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অজ্ঞতা ও অনভিজ্ঞতার কারণে দায়িত্ব পালনে অবজ্ঞা, নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যাতায়াতে সমস্যা, বারবার নদীভাঙনের ফলে ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসতে অনীহা, যথাসময়ে শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হওয়ার কারণে শিশুদের শিক্ষাদানে অবহেলা এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা দপ্তরের চরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নিয়মিত মনিটরিংয়ের অভাব ও উদাসীনতার কারণে উপজেলার চরাঞ্চল বলে পরিচিত চর মানাইর, চর নাছিরপুর ও দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের শত শত কোমলমতি শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে সদরপুর উপজেলার চরাঞ্চলে এই আইন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সদরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চর মানাইর ইউনিয়নে ১২টি, চর নাছিরপুর ইউনিয়নে ১১টি ও দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নে ১০টিসহ তিন চরাঞ্চলে মোট ৩৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শিক্ষকদের ১৮৯টি পদ থাকলেও বর্তমানে শিক্ষক সংখ্যা ১২৫ জন। উক্ত বিদ্যালয়গুলোতে ২৫৯২ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী রয়েছে। বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হলেও নজরদারির অভাবে উপজেলার চরাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রী উপস্থিতির হার ৪০ থেকে ৪৫% মাত্র, যা খুবই কম।

সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগ চরাঞ্চলে রাস্তাঘাট না থাকার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নিয়মিত মনিটরিং করতেও তাদের প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনভিজ্ঞতার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। ফলে ক্রমেই কমছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি।

চরাঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যাতায়াতের জন্য রাস্তাঘাট না থাকা, প্রায় প্রতিবছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানান্তরিত হওয়া, এলাকাবাসীর দারিদ্র্যতা—সব মিলিয়ে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা চরাঞ্চলের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে অনাগ্রহী। ফলে কমছে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। অনেক বিদ্যালয়ে ৭৫/৮০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলেও উপস্থিতির সংখ্যা ৩০/৩৫ জন। এভাবে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ে শিশুরা শিক্ষা বঞ্চিত হয়ে অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে কেউ মাছ শিকার, কেউ কৃষিকাজ, কেউ ঘাটে নৌকা দিয়ে যাত্রী পারাপার করছে। অনেকে আবার বিভিন্ন অপরাধে পা বাড়াচ্ছে। বাড়ছে বাল্যবিবাহ।

এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সদানন্দ পাল 'আমার দেশ'কে বলেন, চরাঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসনসহ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কাজ করে যাচ্ছে। দুর্গম চরাঞ্চল ও নদী ভাঙনকবলিত এলাকায় আমরা বিভিন্নভাবে ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়মুখী করতে বাবা-মায়েদের উৎসাহ দিতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চরাঞ্চলের শিক্ষকদের আবাসন ব্যবস্থা ও নৌপথে যাতায়াতের সমস্যাটা নিয়েও সমাধানের আলোচনা চলছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের স্কুলে হাজিরা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের চিন্তাভাবনা চলছে।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত