ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীর পানি কমে যাওয়ার কারণে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে বিলীন হয়েছে নদীর তীরের শতাধিক বাড়িঘর। টগরবন্দ, গোপালপুর, বুড়াইচ, বানা ও পাচুড়িয়া ইউনিয়নে কয়েকটি গ্রামের পাকা সড়ক, কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, আলিয়া মাদরাসা, একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদসহ অন্তত ৩০০ পরিবার।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার টগরবন্ধ ইউনিয়নের টিঠা পানাইল, ইকড়াইল, কৃষ্ণপুর, বানা ইউনিয়নের পণ্ডিতের বানা, বেল বানা, পাচুড়িয়া ইউনিয়নের চরনারান্দিয়াসহ বেশ কিছু এলাকায় ভাঙনে প্রায় ২০টি পরিবারের বসতভিটা, গাছপালা, ফসিল জমিসহ প্রায় ২০/৩০ একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটামাটি হারিয়ে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কিছু এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হলেও সেখানেও ফাটল দেখা দিয়েছে।
শিকারপুরের মুসা মিয়া জানান, এবার নদীভাঙনে আমরা উঠান পর্যন্ত চলে আসছে। তড়িঘড়ি করে ঘর-বাড়ি ভেঙে সরাতে পারলেও অনেক গাছপালা নদীগর্ভে চলে গেছে।শিকারপুরের কাছেদ মল্লিক (৭০) বলেন, আমরা এখন আতঙ্কে রয়েছি কখন যেন আমার বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এ পর্যন্ত আটবার নদীভাঙনে বসতভিটা পরিবর্তন করেছি। এবার ভাঙলে আমাদের আর মাথা গোঁজার কোনো জায়গা নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মোরাদ হোসেন বলেন, প্রতি বছরই প্রায় ৫০/৬০টি পরিবার ২০/৩০ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছরই আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন জানাই, তারা আশ্বাস দেন কিন্তু কোনো প্রতিকার পাই না। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার বাজড়া, চর আজমপুর, চাপুলিয়া, চরদনাইড়, চাপুলিয়াসহ প্রায় ১০টি গ্রাম। এরই মধ্যে কয়েক গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র গোপালপুর চরহাঙ্গা মেইন পাকা সড়কের প্রায় ৫০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে ইউএনও রাসেল ইকবাল বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে এবং নদীভাঙন রোধে জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে।

