গাজীপুরের শ্রীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে ডিজাইনটেক্স নীটওয়্যার কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ৪৫ জনকে আটক করে যৌথবাহিনী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বেরাইদেরচালা এলাকায় ডিজাইনটেক্স নীটওয়ার কারখানায় চার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ৪ জুন কারখানা কর্তৃপক্ষ ১০ জন শ্রমিককে কারখানার মূল গেইটে আটকিয়ে ছাঁটাই করেন। ঈদের ছুটির পর শনিবার সকালে কারখানা চালু হলে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় তারা কারখানা মালিককে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার জন্য নানা শ্লোগান দেয়। উত্তেজিত শ্রমিকদের শিল্প পুলিশ এবং সেনাবাহিনী সদস্যরা বুঝানোর পরেও শ্রমিকেরা কারখানার গেইট না খুললে একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পৌঁনে ১টায় কারখানার গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শ্রমিকদের কারখানার বাইরে বের করে দেয়। শ্রমিকরা কারখানার বাইরে বের হয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুরে মারলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিক্ষোব্ধ শ্রমিকদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ৪৫ জন আন্দোলনকারী শ্রমিককে আটক করে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল -২ এর পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় তারা মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে চাইলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্য করে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তাদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখান থেকে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
কারখানার শ্রমিক মনির হোসেন বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ আমাদের ১২ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করে নোটিশ দেয়। এটা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে করা হয়েছে। এ জন্য আমরা সব শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করছি। নিয়মবহির্ভূত এই আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।
বিবিএস কেব্ল কারখানার ব্যবস্থাপক ফেরদৌস রহমান বলেন, সব নিয়ম মেনে বেতন-ভাতা পরিশোধ করে শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে আমরা কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে সমস্যার সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করছি।

