দুদক চেয়ারম্যান

রাজনৈতিক এলিটদের মাধ্যমে স্বৈরাচারের দোসররা ভারতে পালিয়েছে

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ০০

স্বৈরাচারের দোসর ও বিভিন্ন মামলায় আসামিরা যশোরের রাজনৈতিক এলিটদের সহায়তায় সীমান্ত পার হয়ে ভারতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।

রোববার যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। সকালে শুরু হয়ে শুনানি চলে বিকেল পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

গণশুনানিতে জেলার ২০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৭৫টি দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান দুদক চেয়ারম্যান।

দুর্নীতির অভিযোগ শুনতে অনুষ্ঠিত দুদকের এই গণশুনানিতে যশোর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শতাধিক নালিশকারী উপস্থিত হয়ে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মিয়া আলী আকবর আজিজী ও যশোরের পুলিশ সুপার রওনক জাহান। গণশুনানি সঞ্চালন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম।

গণশুনানিতে স্বাস্থ্য, খাদ্য, সড়ক ও জনপথ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), বিআরটিএ-সহ অন্তত ২০টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মোট ৭৫টি অভিযোগ উত্থাপিত হয়।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালে ওষুধ চুরি, নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, ঠিকাদারি কাজে অনিয়ম, সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে। বিআরটিএ কার্যালয়ে ঘুস ছাড়া কোনো কাজ হয় না।

গণশুনানিতে একাধিক ভুক্তভোগী লিখিতভাবে অভিযোগ উপস্থাপন করেন এবং সরাসরি দুদক চেয়ারম্যানের কাছে বক্তব্য পেশ করেন। এ সময় অনেকেই বলেন, স্থানীয়ভাবে অভিযোগ করেও তারা প্রতিকার পাননি, তাই দুদকের এই গণশুনানি তাদের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে মনে করছেন।

অভিযুক্ত দপ্তরগুলোর প্রতিনিধিরা পাল্টা বক্তব্যে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। কেউ কেউ অভিযোগ খণ্ডনে বিভিন্ন নথি ও কাগজপত্র উপস্থাপন করেন।

দুদক কমিশনার মিয়া আলী আকবর আজিজী বলেন, ‘দুদকের কাজ ভয় দেখানো নয়, বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নেওয়া। এই গণশুনানি সেই প্রক্রিয়ারই অংশ।’ তিনি অভিযোগকারীদের ধৈর্যসহকারে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রমাণ উপস্থাপনের আহ্বান জানান।

গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ নাগরিকরা।

দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গণশুনানিতে উত্থাপিত সব অভিযোগ লিখিতভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব অভিযোগের সত্যতা মিলবে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুদকের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত