৭ বছরেও কাজে আসছে না মহেশপুর পানি শোধনাগার

টিপু সুলতান, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ১০
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫০

ঝিনাইদহের মহেশপুরে ভূগর্ভস্থ পানি শোধনাগারের নির্মাণকাজ সাত বছর আগে শেষ হলেও পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানি শোধনাগারটি জনগণের কোনো কাজে আসছে না । ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের পর কয়েকটি স্তরের ফিল্টার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পানি সরবরাহ করার অত্যাধুনিক ব্যবস্থা থাকলেও সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয় জনসাধারণ।

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘসময় বন্ধ থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। পুরোপুরি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এ প্রকল্পটি। প্রকল্প এলাকা পরিণত হয়েছে জঙ্গলে। ওভারহেড ট্যাংক ও শোধনাগারটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

জানা গেছে, ঝিনাইদহের মহেশপুরে সাত বছর আগে চার কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ভূগর্ভস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হয়।

কিন্তু একদিনের জন্যও পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। শোধনাগারটি চালু না থাকায় নষ্ট হচ্ছে সুইচ, বাল্ব, মোটর, ফিল্টার, পাইপ, রিজার্ভ ট্যাংক, পাম্প গ্যালারি, পানির ট্যাংক, জেনারেটর ও ইলেকট্রিক ট্রান্সফরমারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। তালাবদ্ধ থাকায় নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শোধনাগার ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। পৌরসভার অধীনে প্রায় ৬০ হাজার জনসাধারণ বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা আয়রন ও আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ খাবার পানি আর কোনো দিন পাবেন কি না সন্দেহ রয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বলছেন, মহেশপুর পৌরসভা এলাকার ৯৬ নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। দীর্ঘদিন এ পানি পান করলে মারাত্মক রোগব্যাধি হতে পারে। পৌরসভার সরবরাহ করা পানিতে অতিমাত্রায় আয়রন থাকায় তা পানের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় পাইপলাইনের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্যে আর্সেনিক ও আয়রন দূরীকরণ প্লান্ট স্থাপনের জন্য মহেশপুর পৌরসভা একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চার কোটি ২৯ লাখ ৬৪ হাজার ৭৭৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ৬ জুন প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০১৯ সালে কাজ শেষ হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নির্মাণকাজ সমাপ্ত করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ করলেও অদ্যাবধি জনসাধারণের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে পৌর এলাকার মানুষ বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। শহরের জলিলপুর বাজারের বসবাসকারী ও ব্যবসায়ীরা বলেন, এ শহরে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে। মানুষ নিজস্ব টিউবওয়েলের পানি পান করে। এ পানিতে মাত্রারিক্ত আর্সেনিক রয়েছে। পানি শোধনাগার নির্মাণের পর সাত বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

ঝিনাইদহ জেলার প্রথম বৃহৎ বিশুদ্ধ পানির প্লান্টটি তৈরির কাজ করছে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর। পৌরসভা এলাকার ছয়টি সাবমার্সেবল পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ থেকে পানি উত্তোলন করে প্লান্ট হাউসে রাখা হবে—এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কোনো রকমের কেমিক্যাল দ্রব্য ছাড়াই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পানি শোধন করার পর পৌরবাসীর মধ্যে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু বাস্তবে কোনো পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন হয়নি।

বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য সেখানে নিম্নমানের মালামাল ও নিম্নমানের পাথর, ফিল্টার, পানির পাম্প বসিয়ে প্রকল্প থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

মহেশপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেছেন, এই প্রকল্প পরিচালনার জন্য পৌরসভা পানির যে বিল দেয় তা খুই অপ্রতুল । এ দিয়ে খরচ চালানো সম্ভব হয় না । এ কারণেই প্রকল্পটি চালু করা হচ্ছে না।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত