জাল যার, জলা তার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহউপজেলা প্রতিনিধি, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ)
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫, ১৬: ৫৮
আপডেট : ২৭ মে ২০২৫, ১৭: ২৯

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে বলুহর বাওড় পরিদর্শন করেছেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি বলুহর বাওড় পরিদর্শন শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেন।

বিজ্ঞাপন

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, জেলা ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান ও মৎস্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন। সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, একটি প্রবাদ আছে, 'জাল যার, জলা তার।' কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাদে বাওড় ও প্রাকৃতিক জলমহালগুলো প্রভাবশালীদের মাঝে ইজারা দেয়া হয়। ফলে বাওড়গুলোতে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও উৎপাদন ধ্বংস হয়ে গেছে। বাওড়গুলোতে বাণিজ্যিক উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃত্রিম খাবার ও রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের ফলে জলমহালগুলো তার প্রাকৃতিক রূপ হারিয়েছে। মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বলেন, শত শত বছর ধরে হালদার মৎস্যজীবীরা বাওড়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার জলমহাল নীতি সংশোধন করে বাওড়গুলো বাণিজ্যিক স্বার্থে অমৎস্যজীবীদের মাঝে ইজারা দেয়। ইজারা নিয়ে প্রভাবশালী মহলের লোকজন বাওড়ে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। ইজারাদাররা বাওড়ে মৎস্য আহরণ ও বাওড়পাড়ের বাসিন্দাদের ওপর নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে।

হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা আরো বলেন, হালদার সম্প্রদায়ের প্রকৃত মৎস্যজীবীরা আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। জীবিকা হারিয়ে আজ মৎস্যজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। প্রভাবশালীরা বাওড় ইজারা নিয়ে মৎস্যজীবীদের বাওড়ে অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ করেছে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। অনেক মানুষ শহীদ হয়েছেন-আহত হয়েছেন। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের সকল বাওড়ের ইজারা বাতিল করতে হবে। তাহলে বাওড় বাঁচবে। পরিবেশ, প্রকৃতি ও বাওড়পাড়ের মৎস্যজীবীরাও বাঁচবে।

মতবিনিময় সভায় মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা ইজারা পদ্ধতি বাতিল করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাঝে বাওড় ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।

সভায় মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, 'জল যার, জলা তার' এই নীতি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করবো। তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। এই প্রজন্মই সমাজের সকল বৈষম্য দূর করবে। প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাঝে বাওড়ের অধিকার ফিরিয়ে দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সকল দপ্তরে যোগাযোগ করা হবে। বাওড়পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে বাওড়ের প্রকৃত মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দুঃখ দুর্দশা লাঘব করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত