মাত্র তিন মাস আগে ঢাকার উত্তরার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পাবনার বেড়া উপজেলা চর পেঁচাকোলা গ্রামের মীম খাতুনের (২২)। কিন্তু বিয়ের মেহেদির রঙ শুকানোর আগেই আগুন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মীম। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়। এ সময় মীমের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা আগুন সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
চর পেঁচাকোলা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের মেয়ে মীম। তার স্বামী মোহাম্মদ আলী জানান, মাত্র তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়েছিল। শ্যামলী ট্রমা সেন্টারে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল শিক্ষার্থী মীমের স্বপ্ন ছিল শিক্ষা জীবন শেষে মানুষের সেবা দিয়ে মানবিক পেশায় নিজেকে যুক্ত করবেন।
গত ১৩ নভেম্বর রাতে মীমের দাদার মৃত্যুর সংবাদ শুনে তারা ঢাকার শ্যামলী থেকে পাবনার বেড়ার গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসাইল হাই প্রেসার সিএনজি পাম্প স্টেশনের কাছে পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ওই বাসের বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে তিনি ও মীম অগ্নিদগ্ধ হন।
রাতেই মীমকে বেড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হলে দ্রুতই তাকে জাতীয় বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে মীমের শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চিকিৎসকরা তার সুস্থ হওয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। চিকিৎসকরা আইসিইউতে রেখে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করেন মীম।
মীমের চাচা সাইদুল ইসলাম জানান, দাদার মৃত্যু সংবাদ শুনে মীম ও তার স্বামী রাত নয়টার দিকে ঢাকা থেকে পেঁচাকোলা গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। রাত একটার দিকে ভাতিজি জামাই এ দুর্ঘটনার খবর দেন। এভাবে অগ্নি-সন্ত্রাসের শিকার হয়ে তার ভাতিজি বিদায় নেবেন, এটা মেনে নেওয়া কঠিন।

