আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

জাতিসংঘ মিশনে নিহত শান্ত ও মমিনুলের বাড়িতে শোকের ছায়া

জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম
জাতিসংঘ মিশনে নিহত শান্ত ও মমিনুলের বাড়িতে শোকের ছায়া

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীর হামলায় নিহত দুই সেনা সদস্যের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। নিহত এক সেনা সদস্য শান্ত মণ্ডলের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে এবং আরেক সদস্য মমিনুল ইসলামের বাড়ি একই জেলার উলিপুর উপলায়।

বিজ্ঞাপন

এর আগে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে আন্ত-বাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, সুদানের সন্ত্রাসীরা আকস্মিকভাবে ইউএন ঘাঁটিতে হামলা চালায়। হামলার সময় ঘাঁটির ভেতরে ও আশপাশের এলাকায় তীব্র গোলাগুলি শুরু হয়। এতে বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের হতাহতের ঘটনা ঘটে। এসময় বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর ছয় সদস্য নিহত হন। আহত হন অন্তত ৮ সদস্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেনা সদস্য শহীদ শান্ত মণ্ডলের (২৭) বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাটমাধাই ডারারপাড়া গ্রামে। তার বাবা সাবেক সেনা সদস্য (মৃত) নুর ইসলাম মণ্ডল এবং মা সাহেরা বেগম। শান্ত’র বড় ভাই সোহাগ মন্ডলও সেনা বাহিনীতে কর্মরত আছেন।

শহীদ শান্তর বড় ভাই সোহাগ মণ্ডল জানান, শান্ত ২০১৮ সালে সেনা বাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদান করেন। তিনি সর্বশেষ বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে সৈনিক পদে ছিলেন। গত ৭ নভেম্বর তিনি শান্তিরক্ষী মিশনে সুদানে যান।

তিনি আরো জানান, গত এক বছর আগে শান্ত বিয়ে করেন। তার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বর্তমানে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। শনিবার সন্ধ্যায় শান্ত ভিডিও কলে বাড়ির সবার সাথে কথা বলেছে। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে খবর পাই ওদের ক্যাম্পে হামলা হয়েছে এবং শান্তসহ আরো ৫ জন নিহত হয়েছে।

নিহত আরেক সেনা সদস্য মমিনুল ইসলামের (৩৭) বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের পারুলেরপাড় গ্রামে।২০০৭ সালে মমিনুল সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। বাড়িতে বাবা-মা ও ভাই ছাড়াও স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে। মাস খানেক মমিনুল সুদানে গিয়েছিলেন। শনিবার বিকালে ভিডিও কলে বাড়ির সবার সাথে কথা বলেন, এলাকার সবার খোঁজ-খবর নেন। এরপর রাত ১১ দিকে তার মৃত্যুর খবর জানতে পারে হতভম্ব হয়ে যান পরিবার।

মমিনুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মৃত্যুর খবরে বাড়িতে শোকের মাতম। প্রতিবেশীরা বাড়িতে ভিড় করছেন। আকস্মিক মৃত্যুর শোকে তার স্ত্রী, ভাই-বোন ও মা মূর্ছা যাচ্ছেন। প্রতিবেশী ও স্বজনরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না।

মমিনুলের বড় ফুফু রহিমা বেগম বলেন, আমার বাবা বাড়ি আসলে সবার সাথেই কথা বলতো।একমাস আগে বিদেশ যাওয়ার আগে সবার সাথে দেখা করে গেলো।এলাকায় আসলে সরার খোঁজ-খবর নিতো। এলাকার মানুষও তাকে ভালোবাসতো।

মমিনুলের বাবা আব্দুল করিম বলেন, আমার ছেলে অনেক ভালো মানুষ ছিলো। এলাকার সবাই তাকে ভালোবাসতো। আমার বাবা দেশের জন্য জীবন দিয়েছে,আমার বাবা শহীদ হয়েছে।আপনারা সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন