আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত কুড়িগ্রামের, তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির ঘরে

জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম

শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত কুড়িগ্রামের, তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির ঘরে

উত্তরের হিমেল হাওয়া সেই সাথে বৃষ্টির মতো কুয়াশায় কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাত যত গভীর হচ্ছে শীতের পরিমাণ তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিরিক্ত কুয়াশায় হেড লাইট জ্বালিয়ে দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল করলেও প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

ব্যহত হচ্ছে নৌ-চলাচল, এতে করে ভোগান্তিতে পড়ছে নদীর অববাহিকায় ও চরাঞ্চলে বসবাস করা লাখ লাখ মানুষ।

বিজ্ঞাপন

হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ভোর থেকে বিকেল গড়িয়ে গেলেও মিলছেনা সূর্যের দেখা।

শীত নিবারনের জন্য শহরের নিম্ন আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে ফুটপাতের কমদামি জামা-কাপড়ের দোকানগুলো।

দুস্থ ও প্রান্তিক পর্যায়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো শীত উপেক্ষা করে কাজে যোগ দেওয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত নানা রোগে।

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসেই জেলার ৯ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৪ শো ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হয়েছে। এছাড়াও জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে আরো প্রায় ৩ হাজার রোগী, যেখানে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস চলতি শীত মৌসুমে শিশু ও বয়স্কদের ব্যাপারে আলাদা যত্নবান হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন।

পাঁচগাছি ইউনিয়নের ষাটোর্ধ বয়সী সালেহা বেগম বলেন, ‘খুব শীত পড়েছে বাবা। শীতে হাত-পা কোঁকড়া লেগে যায়। কেউ তো কোনো কম্বলও দেয়না। একটা কম্বল দিলে শীতটা পার করতে পারতাম।’

কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার রিকশা চালক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘শীতে যাত্রী কম পাওয়া যায়। অন্যান্য সময়ে যা আয় হয় শীতের দিনে তার অর্ধেক হয়। অনেক সময় যাত্রী পাইলেও অতিরিক্ত শীতে গাড়ি চালানো খুব কষ্টকর হয়। ঠান্ডা বাতাস আর কুয়াশায় শরীর বরফ হয়ে আসে।’

যাত্রাপুর ইউনিয়নের কালির আলগা চরের দিনমজুর শমসের আলী বলেন, ‘এই প্রচন্ড শীতের মধ্যেও পেঁয়াজ লাগাতে এসেছি। শীতের ভয়ে বসে থাকলে তো সংসার চলবেনা। বাড়িতে ছোট ছোট তিনজন ছেলে-মেয়ে আছে, কাজ না করলে তারা খাবে কী।'

কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, রোববার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরো কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে জেলার শীতার্ত মানুষের মধ্যে ৭ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও এখন পর্যন্ত কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় ৬ লক্ষ করে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন