
আব্দুর রাজ্জাক, নীলফামারী

‘ঋতুর খাঞ্জা ভরিয়া এল কি ধরণীর সওগাত? নবীন ধানের অঘ্রাণে আজি অঘ্রাণ হল মাৎ।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় এভাবে নতুন আমন ধানের আঘ্রাণে অগ্রহায়ণকে মাৎ করে দেওয়ার কথা উচ্চারিত হয়েছে। মূলত ষড়ঋতুর লীলা বৈচিত্রে বিচিত্র কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে অগ্রহায়ণ মাস তথা হেমন্ত ঋতু আসে নতুন ফসলের সওগাত নিয়ে। কৃষককে উপহার দেয় সোনালী দিন। তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফলানো সোনালী ধানের সম্ভার স্বগৌরবে বুকে ধারণ করে হেসে ওঠে পুরো বাংলাদেশ। এ যে নবান্নের বারতা নিয়ে নীলফামারীর কৃষকের উঠানে এসেছে হেমন্ত।
প্রকৃতি প্রতিদিন শেখাচ্ছে সবকিছুরই পরিণতি আছে। ধান পাকে, রোদ ফিকে হয়, প্রকৃতির এই রূপান্তরে রয়েছে জীবনের সৌন্দর্য। হেমন্তের ডাক শুনলেই মনে হয় শিশির মুছে যাক, রোদ নামুক পাতার ওপর। তারপর ধীরে ধীরে শীত এসে হাত রাখুক কাঁধে। প্রকৃতির এ যাত্রা যেন থেমে না যায়। দিন রাতের অবিশ্রান্ত শ্রমে কৃষকের ঘরে এই হেমন্তেই ওঠে সোনার ধান। গ্রাম বাংলা মেতে ওঠে নবান্নের উৎসবে। নবান্ন, ফসল উৎপাদন কেন্দ্রিক একটি ঐতিহ্যবাহী এ দেশীয় লোকজ উৎসব। নতুন আমন ধান ঘরে তোলার আনন্দে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিনে এই উৎসব পালিত হয়। এ উপলক্ষ্যে ‘নতুন চালের পায়েশ, পোলাও, পিঠে, পুলিসহ রকমারি খাদ্যসামগ্রী পাড়া, প্রতিবেশী, আত্মীয়, স্বজন সবাইকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়। পাশাপাশি পালন করা হয় সামাজিকভাবে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী নানা আচার, অনুষ্ঠান আর লৌকিকতা।
এই ‘নবান্ন’ উৎসব সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক, ঐতিহ্যবাহী, প্রাচীনতম মাটির সঙ্গে চিরবন্ধনযুক্ত একটি সার্বজনীন উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তাই নবান্ন উপলক্ষে নীলফামারী তথা উত্তরাঞ্চলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কৃষকের ঘরে ঘরে আনন্দের সারা পড়ে যায়।
কৃষকের আঙিনা, উঠান লেপে-মুছে, ঝকঝকে-তকতকে করে তোলা হয়। নতুন কাস্তে, ডালি, কুলা, চালুনি, জাটা, চাটাই তৈরি হয়। কৃষক মাথায় অথবা কোমরে নতুন গামছা বেঁধে রাশি রাশি ভারা ভারা সোনার ধান কেটে নিয়ে আসে উঠানে। কৃষাণ বধূর ব্যস্ততা বেড়ে যায় ধান মাড়াই, ঝাড়াই, সিদ্ধ, শুকানো, চাল, আটা তৈরি আর রকমারি রান্না, বান্না নিয়ে।
নুতন ধান ভাঙানোর পরে সে ধানের গুড়া বা তুষ ছিাটানো হয় গ্রামের মেঠো পথে। যাতে পথিকেরা তা মাড়িয়ে চলতে পারে। এ দৃশ্য এখন অনেকটাই বিরল হতে চলেছে। তবুও থেমে নেই বাঙালি বধূরা। তারা ধরে রেখেছে তাদের সে পুরোনো রীতি নীতিকে। এ থেকেই বোঝা যায় আমাদের লোকজ উৎসবের ধারাবাহিকতাকে। ধান ভানার গান ভেসে বেড়ায় বাতাসে, ঢেঁকির তালে মুখর হয় বাড়ীর আঙিনা। অবশ্য যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় এখন এ যুগে আর ঢেঁকির তালে মুখরিত হয় না আমাদের গ্রামগুলো। অনক পল্লীবালা এখন ভুলে গেছে ঢেকিতে ধান ভাঙানোর সে রীতি। হয়তো বা কেউ চোখেও দেখেনি। তার পরও নতুন চালের ভাত নানা ব্যঞ্জনে মুখে দেওয়া হয় আনন্দঘন পরিবেশে। তৈরি হয় নতুন চালের পিঠা, পুলি, ক্ষীর, পায়েস ইত্যাদি। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে নবান্নে বাড়ীর জামাইসহ আত্মীয়, স্বজনকে নিমন্ত্রণ করা হয়। মেয়েকেও বাপের বাড়িতে ‘নাইওর’ আনা হয়।
হেমন্তের সকালের ভোরের প্রথম সুর্যোদয়ের দৃশ্যটা যেন অনাবিল, ভোরের আলোটা পুরোপুরি নামেনি। আকাশে ফিকে রোদ। ফসলের মাঠ অনেকটা কুয়াশার চাদরে ঢাকা, ধানের শীষে শিশির জমে আছে ছোট ছোট মুক্তার মতো। হেমন্ত যেন নিঃশব্দে এসে গেছে গ্রামবাংলার উঠানে। নরম রোদ, না গরম, না শীত এক মোলায়েম সকাল। ঠিক এই সময়টাই প্রকৃতি আপন খেয়ালে সাজিয়ে রচনা করে এক নতুন অধ্যায়।
বাংলায় এখন কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস। গ্রামবাংলা সেজে ওঠে নবান্নের সোনালি রঙে। এই রং-বদলের কথা ভেবেই হয়তো বাংলার কবিগন হেমন্তকে নিয়ে লিখেছেন নানা কবিতা ও গল্প। হেমন্ত সাহিত্যর পাতায় ঠাই করে নেয়া এক আবেগের ঋতু।
ফসলের মাঠে এখন ধানের গন্ধ। পাকা ধানের শীষ বাতাসে দুলে ওঠে সোনালি ঢেউয়ের মতো। গ্রাম যেন তখন ছবির মতো লাগে। মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব। কাস্তে হাতে কৃষকেরা মাঠের বুক চেঁছে তুলছেন সোনালি স্বপ্ন। কৃষাণিও ব্যস্ত নতুন ফসল ঘরে তুলতে, মাড়াই ঝাড়াই ও কৃষকের উঠানে নুতন ধান সিদ্ধ করার কাজে। নবান্ন উৎসব পালনেও কমতি নেই। নতুন চাল দিয়ে হরেক রকম খাবার।
হেমন্তের রূপবৈচিত্র মুগ্ধ করে সবাইকে। প্রকৃতিতে গ্রীষ্ম, বর্ষার মতো হেমন্ত অতটা তীব্র না হলেও এর রূপে-গুণে কমতি নেই। না শীত, না গরমের মাঝেও কখনো আচমকা ঝড়-বৃষ্টির দেখা মেলে। আবার এই হেমন্ত এসে কানের কাছে ফিসফিস করে বলে শীত আসছে বলে। সঙ্গে দেখা মেলে পরিযায়ী হরেক রকম পাখির।
খেজুর রসের অধ্যায় শীতকালে মুখ্য হলেও কার্তিক মাসেই দেখা যায় গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত করে হাড়ি দিচ্ছে গাছে। নতুন ধানের চাল, খেজুর রসে নবান্নের পিঠাপুলি যেন আলাদা মাত্রা পায়। ধোঁয়া ওঠা চুলোর পাশে গ্রাম্য বধুদের খেজুর রসের হাঁড়ি।
বেলা বাড়তে বাড়তে ধীরে ধীরে কমতে থাকে কুয়াশা। নদীর ওপর থেকেও। জমে থাকা কুয়াশা কেটে যায়। দেখা যায় নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। ঋতুর রূপ বদল শুধু দূরের গ্রামে নয়, ছুঁয়ে যায় ব্যস্ত শহুরে জীবন। পথের ধারের গাছের পাতা শুকনো রং নিয়েছে। পায়ের নিচে খসখসে শব্দ তোলে। চায়ের দোকানগুলোয় কাপে কাপে ধোঁয়া উড়ছে। মোড়ে মোড়ে ছোট্ট দোকান শহুরে জীবনে শহরের ফুটপাতে ভাপাসহ নানা পিঠা বিক্রি হচ্ছে। হেমন্ত থেকে শীতের দূরত্ব খানিক দূরে হলেও শীত শীত অবস্থা দূরত্ব মানছে না। সকালের বাতাসে কাঁপুনি লাগে। পাতার ওপর জমে থাকা শিশিরে শীতের আগাম গল্প লেখা থাকে। দিন ছোট হয়। সন্ধ্যা নামে দ্রুত। গোধূলির লাল আভা সরে গেলে কুয়াশা এসে জড়িয়ে ধরে ঘর-বাড়ি, চলার পথ-ঘাট। হেমন্তে যেমন গৃহস্থ বাড়িতে নবান্ন উৎসব চলে। তেমনই শীত শীত আগমনে একটু উষ্ণ আশ্রয়ের খোঁজ করে গৃহহীন মানুষগুলো। তবু হেমন্ত বিষন্ন নয়। এ ঋতু শান্ত, নরম। উষ্ণতার মতো একটু স্নেহ মিশ্রিত এক সেতুবন্ধন। বর্ষার ভেজা স্মৃতি আর শীতের তীব্রতায় যাওয়ার আগে এক কোমল বিরতি। তাই অগ্রহায়ণ এলেই সর্বত্র ধ্বনিত হয়, ‘আজ নতুন ধানে হবে রে নবান্ন সবার ঘরে ঘরে।’
বাংলার নবান্ন উৎসব শুধু গ্রাম বাংলা নয় সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশে কোন না কোন নামে পালিত হয়ে এসেছে। এ অতীত রোমাঞ্চকর ইতিহাস আজ নানা অবহেলায় নানা অপকর্মে আজ বিলিনের পথে। তবুও বাংল্লার পল্লী বধুরা সে স্মৃতি বুকে রেখে চেষ্টা করছে তাদের পুর্ব পুরুষের রেখে যাওয়া উৎসব পালনের লৌকিকতায়।

‘ঋতুর খাঞ্জা ভরিয়া এল কি ধরণীর সওগাত? নবীন ধানের অঘ্রাণে আজি অঘ্রাণ হল মাৎ।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় এভাবে নতুন আমন ধানের আঘ্রাণে অগ্রহায়ণকে মাৎ করে দেওয়ার কথা উচ্চারিত হয়েছে। মূলত ষড়ঋতুর লীলা বৈচিত্রে বিচিত্র কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে অগ্রহায়ণ মাস তথা হেমন্ত ঋতু আসে নতুন ফসলের সওগাত নিয়ে। কৃষককে উপহার দেয় সোনালী দিন। তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফলানো সোনালী ধানের সম্ভার স্বগৌরবে বুকে ধারণ করে হেসে ওঠে পুরো বাংলাদেশ। এ যে নবান্নের বারতা নিয়ে নীলফামারীর কৃষকের উঠানে এসেছে হেমন্ত।
প্রকৃতি প্রতিদিন শেখাচ্ছে সবকিছুরই পরিণতি আছে। ধান পাকে, রোদ ফিকে হয়, প্রকৃতির এই রূপান্তরে রয়েছে জীবনের সৌন্দর্য। হেমন্তের ডাক শুনলেই মনে হয় শিশির মুছে যাক, রোদ নামুক পাতার ওপর। তারপর ধীরে ধীরে শীত এসে হাত রাখুক কাঁধে। প্রকৃতির এ যাত্রা যেন থেমে না যায়। দিন রাতের অবিশ্রান্ত শ্রমে কৃষকের ঘরে এই হেমন্তেই ওঠে সোনার ধান। গ্রাম বাংলা মেতে ওঠে নবান্নের উৎসবে। নবান্ন, ফসল উৎপাদন কেন্দ্রিক একটি ঐতিহ্যবাহী এ দেশীয় লোকজ উৎসব। নতুন আমন ধান ঘরে তোলার আনন্দে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিনে এই উৎসব পালিত হয়। এ উপলক্ষ্যে ‘নতুন চালের পায়েশ, পোলাও, পিঠে, পুলিসহ রকমারি খাদ্যসামগ্রী পাড়া, প্রতিবেশী, আত্মীয়, স্বজন সবাইকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়। পাশাপাশি পালন করা হয় সামাজিকভাবে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী নানা আচার, অনুষ্ঠান আর লৌকিকতা।
এই ‘নবান্ন’ উৎসব সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক, ঐতিহ্যবাহী, প্রাচীনতম মাটির সঙ্গে চিরবন্ধনযুক্ত একটি সার্বজনীন উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তাই নবান্ন উপলক্ষে নীলফামারী তথা উত্তরাঞ্চলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কৃষকের ঘরে ঘরে আনন্দের সারা পড়ে যায়।
কৃষকের আঙিনা, উঠান লেপে-মুছে, ঝকঝকে-তকতকে করে তোলা হয়। নতুন কাস্তে, ডালি, কুলা, চালুনি, জাটা, চাটাই তৈরি হয়। কৃষক মাথায় অথবা কোমরে নতুন গামছা বেঁধে রাশি রাশি ভারা ভারা সোনার ধান কেটে নিয়ে আসে উঠানে। কৃষাণ বধূর ব্যস্ততা বেড়ে যায় ধান মাড়াই, ঝাড়াই, সিদ্ধ, শুকানো, চাল, আটা তৈরি আর রকমারি রান্না, বান্না নিয়ে।
নুতন ধান ভাঙানোর পরে সে ধানের গুড়া বা তুষ ছিাটানো হয় গ্রামের মেঠো পথে। যাতে পথিকেরা তা মাড়িয়ে চলতে পারে। এ দৃশ্য এখন অনেকটাই বিরল হতে চলেছে। তবুও থেমে নেই বাঙালি বধূরা। তারা ধরে রেখেছে তাদের সে পুরোনো রীতি নীতিকে। এ থেকেই বোঝা যায় আমাদের লোকজ উৎসবের ধারাবাহিকতাকে। ধান ভানার গান ভেসে বেড়ায় বাতাসে, ঢেঁকির তালে মুখর হয় বাড়ীর আঙিনা। অবশ্য যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় এখন এ যুগে আর ঢেঁকির তালে মুখরিত হয় না আমাদের গ্রামগুলো। অনক পল্লীবালা এখন ভুলে গেছে ঢেকিতে ধান ভাঙানোর সে রীতি। হয়তো বা কেউ চোখেও দেখেনি। তার পরও নতুন চালের ভাত নানা ব্যঞ্জনে মুখে দেওয়া হয় আনন্দঘন পরিবেশে। তৈরি হয় নতুন চালের পিঠা, পুলি, ক্ষীর, পায়েস ইত্যাদি। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে নবান্নে বাড়ীর জামাইসহ আত্মীয়, স্বজনকে নিমন্ত্রণ করা হয়। মেয়েকেও বাপের বাড়িতে ‘নাইওর’ আনা হয়।
হেমন্তের সকালের ভোরের প্রথম সুর্যোদয়ের দৃশ্যটা যেন অনাবিল, ভোরের আলোটা পুরোপুরি নামেনি। আকাশে ফিকে রোদ। ফসলের মাঠ অনেকটা কুয়াশার চাদরে ঢাকা, ধানের শীষে শিশির জমে আছে ছোট ছোট মুক্তার মতো। হেমন্ত যেন নিঃশব্দে এসে গেছে গ্রামবাংলার উঠানে। নরম রোদ, না গরম, না শীত এক মোলায়েম সকাল। ঠিক এই সময়টাই প্রকৃতি আপন খেয়ালে সাজিয়ে রচনা করে এক নতুন অধ্যায়।
বাংলায় এখন কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস। গ্রামবাংলা সেজে ওঠে নবান্নের সোনালি রঙে। এই রং-বদলের কথা ভেবেই হয়তো বাংলার কবিগন হেমন্তকে নিয়ে লিখেছেন নানা কবিতা ও গল্প। হেমন্ত সাহিত্যর পাতায় ঠাই করে নেয়া এক আবেগের ঋতু।
ফসলের মাঠে এখন ধানের গন্ধ। পাকা ধানের শীষ বাতাসে দুলে ওঠে সোনালি ঢেউয়ের মতো। গ্রাম যেন তখন ছবির মতো লাগে। মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব। কাস্তে হাতে কৃষকেরা মাঠের বুক চেঁছে তুলছেন সোনালি স্বপ্ন। কৃষাণিও ব্যস্ত নতুন ফসল ঘরে তুলতে, মাড়াই ঝাড়াই ও কৃষকের উঠানে নুতন ধান সিদ্ধ করার কাজে। নবান্ন উৎসব পালনেও কমতি নেই। নতুন চাল দিয়ে হরেক রকম খাবার।
হেমন্তের রূপবৈচিত্র মুগ্ধ করে সবাইকে। প্রকৃতিতে গ্রীষ্ম, বর্ষার মতো হেমন্ত অতটা তীব্র না হলেও এর রূপে-গুণে কমতি নেই। না শীত, না গরমের মাঝেও কখনো আচমকা ঝড়-বৃষ্টির দেখা মেলে। আবার এই হেমন্ত এসে কানের কাছে ফিসফিস করে বলে শীত আসছে বলে। সঙ্গে দেখা মেলে পরিযায়ী হরেক রকম পাখির।
খেজুর রসের অধ্যায় শীতকালে মুখ্য হলেও কার্তিক মাসেই দেখা যায় গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত করে হাড়ি দিচ্ছে গাছে। নতুন ধানের চাল, খেজুর রসে নবান্নের পিঠাপুলি যেন আলাদা মাত্রা পায়। ধোঁয়া ওঠা চুলোর পাশে গ্রাম্য বধুদের খেজুর রসের হাঁড়ি।
বেলা বাড়তে বাড়তে ধীরে ধীরে কমতে থাকে কুয়াশা। নদীর ওপর থেকেও। জমে থাকা কুয়াশা কেটে যায়। দেখা যায় নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। ঋতুর রূপ বদল শুধু দূরের গ্রামে নয়, ছুঁয়ে যায় ব্যস্ত শহুরে জীবন। পথের ধারের গাছের পাতা শুকনো রং নিয়েছে। পায়ের নিচে খসখসে শব্দ তোলে। চায়ের দোকানগুলোয় কাপে কাপে ধোঁয়া উড়ছে। মোড়ে মোড়ে ছোট্ট দোকান শহুরে জীবনে শহরের ফুটপাতে ভাপাসহ নানা পিঠা বিক্রি হচ্ছে। হেমন্ত থেকে শীতের দূরত্ব খানিক দূরে হলেও শীত শীত অবস্থা দূরত্ব মানছে না। সকালের বাতাসে কাঁপুনি লাগে। পাতার ওপর জমে থাকা শিশিরে শীতের আগাম গল্প লেখা থাকে। দিন ছোট হয়। সন্ধ্যা নামে দ্রুত। গোধূলির লাল আভা সরে গেলে কুয়াশা এসে জড়িয়ে ধরে ঘর-বাড়ি, চলার পথ-ঘাট। হেমন্তে যেমন গৃহস্থ বাড়িতে নবান্ন উৎসব চলে। তেমনই শীত শীত আগমনে একটু উষ্ণ আশ্রয়ের খোঁজ করে গৃহহীন মানুষগুলো। তবু হেমন্ত বিষন্ন নয়। এ ঋতু শান্ত, নরম। উষ্ণতার মতো একটু স্নেহ মিশ্রিত এক সেতুবন্ধন। বর্ষার ভেজা স্মৃতি আর শীতের তীব্রতায় যাওয়ার আগে এক কোমল বিরতি। তাই অগ্রহায়ণ এলেই সর্বত্র ধ্বনিত হয়, ‘আজ নতুন ধানে হবে রে নবান্ন সবার ঘরে ঘরে।’
বাংলার নবান্ন উৎসব শুধু গ্রাম বাংলা নয় সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশে কোন না কোন নামে পালিত হয়ে এসেছে। এ অতীত রোমাঞ্চকর ইতিহাস আজ নানা অবহেলায় নানা অপকর্মে আজ বিলিনের পথে। তবুও বাংল্লার পল্লী বধুরা সে স্মৃতি বুকে রেখে চেষ্টা করছে তাদের পুর্ব পুরুষের রেখে যাওয়া উৎসব পালনের লৌকিকতায়।

ফেনীতে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে রোববার (১৬ নভেম্বর) জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান ও স্থানীয় জুলাইযোদ্ধারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
২৩ মিনিট আগে
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণে ২১৫ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ফেল করা বিষয় থেকে বিভিন্ন গ্রেডে পাস করেছে ৫৪ জন পরীক্ষার্থী। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭২ জন। এর মধ্যে একজন ফেল করা শিক্ষার্থী ছিলেন।
২৭ মিনিট আগে
ঘটনার পর পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে ছোটখাটো চুরির ঘটনা ঘটলেও এমন সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা বহুদিন পর ঘটলো। এতে এলাকায় নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে গেলো।
৩৪ মিনিট আগে
গত ৯ নভেম্বরের সেই আনন্দঘন দিনটি মুহূর্তেই পরিণত হয় বিষাদ ও দুর্ভোগে। কুমিরা থেকে গুপ্তছড়া ঘাটে নেমেই দেখেন ভাটা শুরু হয়েছে। সামনে কোমরসমান পানি আর হাঁটুসমান কাদা। বাধ্য হয়েই নববধূকে কোলে তুলে প্রায় আধা কিলোমিটার কাদা মাড়িয়ে এগোতে হয় দিবাকরকে। সেই দৃশ্যের ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল
৩৭ মিনিট আগে