পানি ৩৩ সেমির ওপরে

ফুঁসছে তিস্তা, লাখো মানুষ পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা

জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ৩১

ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় লালমনিরহাটে খরস্রোতা নদী তিস্তা ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। এরই মধ্যে তিস্তার তীরবর্তী ও তার আশপাশের এলাকায় জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। একই সঙ্গে সংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। বাড়ছে ভয়-আতঙ্ক। তিস্তার পানি বাড়িতে ঢুকে যাওয়ার কারণে চরম আতঙ্কে তিস্তাপাড়ের লাখ লাখ মানুষ।

রোববার সন্ধ্যা থেকে বাড়তে শুরু করে তিস্তার পানি রাত ৯টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারত থেকে পানি যেভাবে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে । তাতে লাখো মানুষ পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে তিস্তার প্রবল স্রোত সামাল দিতে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েও পানি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে পাউবো কর্তৃপক্ষ।

নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। চাষাবাদকৃত ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। বিশেষ করে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজে এলাকার বাসিন্দা কফিল উদ্দিন বলেন—আমরা নদী পাড়ের মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছি। ভারত থেকে প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। যে কোনো সময় আমাদের ঘরবাড়ি তিস্তা পানিতে ডুবে যেতে পারে। আমরা চরম আতঙ্কে রয়েছি। তিস্তা পাড়ের মানুষজন তাদের ঘরবাড়ি ফেলে রেখে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন।

বিশেষ করে ভারতের উজানে যে গেট রয়েছে তার নাম গজলডোবা এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। খরা মৌসুমে গেটটি বন্ধ রাখা হয় আর বর্ষা এলেই থেমে থেমে পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে ভাসিয়ে দেয় ভারত। কারণ বৃষ্টির পানিতে বন্যা হয় না, বন্যা হয় ভারতের উজানের পানিতে। জানতে পারলাম সন্ধ্যায় ভারত নাকি গজলডোবা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দিযেছে। এ কারণে পানি হুহু করে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে।

তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, উজান থেকে প্রবল পানির গতিতে পানি ধেয়ে আসছে, পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪ গেট খুলে রাখা হয়েছে। মাইকিং করা হচ্ছে তিস্তা পাড়ের মানুষদের উদ্দেশ্যে। তারা যেন ত্রাণ শিবিরে গিয়ে আশ্রয় নেয়। অনেকেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। কেউ আবার ভেলা বানিয়ে খুঁজছেন নিরাপদ আশ্রয়।

তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, রাত ৯টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । তিস্তা এলাকায় মাইকিং করে গ্রামবাসীকে সতর্ক করে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত