আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

হবিগঞ্জ-২

জয় নির্ধারণে ফ্যাক্টর হবে সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাংক

হেমায়েত আলী খান, (বানিয়াচং) হবিগঞ্জ

জয় নির্ধারণে ফ্যাক্টর হবে সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাংক

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ) আসনে নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিএনপি থেকে ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন ইতোমধ্যে মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন। জামায়াত ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান আযমী গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ আসনটিতে ইসলামী আট দলীয় জোট থেকে একজনকে মনোনয়ন দিতে পারে এমন আলোচনা আছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাট-বাজার, সড়কসহ বিভিন্ন ব্যস্ততম পয়েন্টে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের পোস্টার ও ফেস্টুন । প্রার্থীরা সভা, মিছিল-মিটিং ও উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করে ভোটারদের কাছে তাদের নির্বাচনি অঙ্গীকার তুলে ধরছেন। নেতাকর্মীরা নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে মাঠ-ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী আমলে হবিগঞ্জকে বলা হতো দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ। বিগত পনের বছর এখানকার আসনগুলো আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। এখানে অন্য কোনো দলকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হতো না। মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের বাড়ি ছাড়া করে রাখত। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা তাদের দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাবার সুযোগ পান।

এ আসনটি স্বাধীনতার পর থেকে অধিকাংশ সময় আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। এখানে সংখ্যালঘু ভোটারদের রয়েছে একটি বড় ভোট ব্যাংক। এবার সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট যে দল টানতে পারবে, তারাই ভোটের ক্ষেত্রে সুবিধা করতে পারবে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন মহলের ধারণা।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিপক্ষের প্রার্থীকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তবে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মো. জিল্লুর রহমান আযমী আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হওয়ায় তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করেন না। কারণ নির্বাচনে আঞ্চলিকতার প্রভাব কাজ করে। আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

তিনি আরো বলেন, ইসলামী আটদলীয় জোটের খেলাফত মজলিসের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ যদি মনোনয়ন পান তবে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। কারণ তিনি খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আমির এবং বানিয়াচংয়ের প্রবীণ ব্যক্তি। তবে আমি নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ বলেন, তিনি দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ইসলামী আটদলীয় জোট থেকে মনোনয়ন পেলে সব ইসলামী দলগুলোকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনি ফলাফল অর্থাৎ বিজয় অর্জন করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান আযমী বলেন, বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জে জামায়াতে ইসলামী ব্যাপক জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। যা খেলাফত মজলিস এখনো দেখাতে পারেনি। অপরদিকে খেলাফত মজলিসের দলীয় প্রতীক ‘ঘড়ি’ সম্পর্কে ও ভোটাররা এখন পর্যন্ত ওয়াকিবহাল নয়।

এদিকে এসসিপি, গণঅধিকার পরিষদ ও অন্যান্য ইসলামি দলগুলোর নির্বাচনি তৎপরতা তেমন চোখে পড়ার মতো নয়। তাদের কর্মতৎপরতা ব্যানার ফেস্টুনে সীমাবদ্ধ।

তবে এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী দেওয়ান শোয়েব রাজা বলেন, তার দল মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচন করতে প্রস্তুত আছেন।

আসনটি বানিয়াচংয়ের ১৫টি ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এই আসনের মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৯০ হাজার ৫৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৬৫ ও নারী ভোটার এক লাখ ৯২ হাজার ৭৬৭ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটার আছে চারজন।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন