পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার

অর্থনীতি স্থিতিশীলতার দিকে আসছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০: ১০

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার বলেছেন, গত কয়েক মাসে প্রবৃদ্ধি স্থবির হয়ে আছে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন কিছুটা স্থিতিশীলতার দিকে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, পরিমিত আমদানির মাধ্যমে বাংলাদেশের বহিরাগত খাত মে-জুন মাসে শক্তিশালী হয়েছে। জুলাই-মে মাসে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ঘাটতি ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে সংকুচিত হয়েছে, অন্যদিকে বাণিজ্য ঘাটতি ১৯.৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ মান্থলি ম্যাক্রো ইকোনমিক ইনসাইট’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান।

জাইদী সাত্তার বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ২০২৬ সালের জন্য ৫ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছে, যা সরকারের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা আইএমএফের আগের দেওয়া প্রক্ষেপণের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা হয়েছে। এটি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কঠোর আর্থিক ও রাজস্ব নীতি, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং ব্যাংকিং খাতে ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা নিয়ে উদ্বেগের প্রতিফলন।

তিনি বলেন, জুন মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতি হারিয়েছে। কারণ ক্রয় ব্যবস্থাপক সূচক (পিএমআই) আগের মাসের তুলনায় ৫ দশমিক ৮ পয়েন্ট কমে ৫৩ দশমিক ১-এ নেমে এসেছে, যা সম্প্রসারণের গতি ধীর করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। টানা ৯ মাস ধরে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও সর্বশেষ তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে, আট মাসের মধ্যে নির্মাণ খাত প্রথম সংকোচনের সম্মুখীন হচ্ছে।

জাঈদী সাত্তার তার উপস্থাপিত প্রবন্ধে জানান, দারিদ্র্য হ্রাসের দিকে, কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণতা অব্যাহত রয়েছে। দারিদ্র্য হ্রাসে অগ্রগতি সত্ত্বেও, বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ দারিদ্র্যসীমার ঠিক ওপরে রয়ে গেছে এবং ধাক্কার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ১০ শতাংশ আয় হ্রাস আরো ১০ শতাংশ দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে, চলতি অর্থবছরে আরো ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে পারে। জাতীয় দারিদ্র্যের হার ২০২৫ সালে ২২ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা ২০২২ সালে ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আপনি এনজিও বা করপোরেট স্টাইলে সরকার চালালে সেটি বেশিদূর যাবে না। আপনি যদি সরকারকে করপোরেট হিসেবে দেখেন, সেটি এক বিষয়। আর এনজিও হিসেবে দেখলে আরেক বিষয়। করপোরেট পলিসি আর এনজিও পলিসি দুটি পুরোপুরি আলাদা।

ড. মঈন বলেন, সবাই বলে কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বে সবচেয়ে কম। আমি এতে উদ্বিগ্ন নয়। এর বেশির ভাগই অবদান শিল্পগুলোর। বাংলাদেশের সত্যিটা হলো অধিকাংশ মানুষই ট্যাক্স দিতে ক্যাপেবল না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঠিক মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হয় না। যখন পণ্যের দাম বাড়ে, তারা কমার তথ্য দেয়। দেশের মানুষের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ব্যয় খাদ্য আর বাড়িভাড়ায় চলে যায়, সেটিও সঠিকভাবে আসে না।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত