প্লট দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো বিচারপতি খায়রুল হককে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৬

ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১০ কাঠার প্লট হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এ মামলায় তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন বিচারক।

বিজ্ঞাপন

বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে, এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খায়রুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে মহানগর দায়রা আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে এজলাসে ওঠানো হয়। শুনানি শুরুতে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো আবেদন মঞ্জুর করেন আদলত।

পরে আসামি পক্ষের আইনজীবী মোনাইম নবী শাহিন তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষের আইনজীবী হাফিজুর রহমান জামিনের বিরোধিতা করে যুক্তি উপস্থাপন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৬ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে খায়রুল হকসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন— রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, সদস্য (অর্থ ও এস্টেট) আ.ই.ম গোলাম কিবরিয়া, সদস্য মো. আবু বক্কার সিকদার, সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সদস্য (এস্টেট) আখতার হোসেন ভুইয়া, সাবেক যুগ্ম সচিব ও সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল আলম এবং সদস্য (প্রশাসন ও ভূমি) নাজমুল হাই।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, রাজধানীর ২ নম্বর শিক্ষা সম্প্রসারণ সড়কে (নায়েম রোড) পৌনে ১৮ কাঠা জমির ওপর ৬ তলা পৈতৃক বাড়ি রয়েছে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের। কিন্তু তিনি দেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দ্য ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (অ্যালটমেন্ট অব ল্যান্ডস) রুলস, ১৯৬৯ এর বিধি ১৩ লঙ্ঘনের মাধ্যমে হলফনামা দাখিল করে রাজউকের ১০ কাঠা প্লট হাতিয়ে নেন।

এতে আরো বলা হয়, খায়রুল হক প্লট বরাদ্দের শর্ত ভঙ্গ করে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। রাজউকের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সুদ মওকুফের কোনো বিধান না থাকা সত্ত্বেও প্লট বরাদ্দের জন্য সাময়িক বরাদ্দপত্রে শর্ত ভঙ্গ করেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদসহ কিস্তির টাকা জমা না দিয়ে অবসরের পর অর্থাৎ বরাদ্দের ৫ বছর পর সুদবিহীনভাবে টাকা জমা দেন। এ ক্ষেত্রে রাজউকের প্রচলিত নীতিমালা ভঙ্গ করে বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে সুদবাবদ ৪ লাখ ৭৪ হাজার ২৪০ টাকা পরিশোধ না করে সরকারের ক্ষতিসাধন ও আত্মসাৎ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

চলতি বছরের ২৪ জুলাই সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়িতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় ওইদিন রাতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে গত ৩০ জুলাই বিচারক হিসেবে দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় প্রদানসহ জাল রায় তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর ওই মামলায় তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর থেকে কারাগারে আছেন তিনি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত