সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় মার্কিন নাগরিক রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ০০
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪০

রাজধানীর রমনা থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী'র ২ দিনের রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

সেমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.আতিকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে রমনা জোনের গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর আক্তার মোরশেদ। পরে বেলা সোয়া ৩ টায় এনায়েত করিমকে এজলাসে তুললে শুরু হয় রিমান্ড শুনানি।

এসময় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী শামছুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা "র' এর এজেন্ট হয়ে বাংলাদেশে এসেছে এনায়েত। বর্তমান সরকারকে উৎখাতে স্বৈরশাসকের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছিল। তাই নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের ধরতে এনায়েত করিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তবে রিমান্ডের বিরোধিতা করে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারান মোহাম্মদ আরাফ বলেন, আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ নেই বিধায় রিমান্ড বাতিল-পূর্বক জামিনের আবেদন করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তার ৪৮ ঘণ্টার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর শনিবার রাজধানীর মিন্টু রোড থেকে তাকে আটক করে রমনা মডেল থানা পুলিশ। ওইদিন বিকেলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন রমনা মডেল থানার এসআই আজিজুল হাকিম। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন। এরই মাঝে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে রমনা মডেল থানায় মামলা করে পুলিশ। এরপর তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ড আবেদন করলো ডিবি পুলিশ।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মিন্টো রোডের মন্ত্রীপাড়া এলাকায় প্রাডো গাড়ীতে আরোহণ করে সন্দেহজনক চলাচল করতে দেখা যায় এনায়েত করিম চৌধুরীকে। এসময় তার গাড়ী থামানো হয় এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এজন্য তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তার কাছ থেকে পাওয়া দুইটি আইফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তার ফোন বিশ্লেষণ করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।

এনায়েত করিম বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক। গত ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টা ৫০ মিনিটে নিউইয়র্ক থেকে কাতার এয়ারওয়েজ যোগে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার চুক্তিভিত্তিক এজেন্ট বলেও জানা গেছে।

গত ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থান করেন। পরবর্তীতে গুলশানে অবস্থান করতে থাকেন। ইতোমধ্যে তিনি সরকারি উচ্চ ও নীতি নির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সাথে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী মহলের সাথে গোপন বৈঠক করেন বলে জানান। তিনি আরো জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমেরিকান সরকার হতাশ। আগামি ২১শে অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় রহিত করবেন বলে জানান এ আসামি। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে সেনাবাহিনী সমর্থিত নতুন জাতীয় সরকার অথবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে। নতুন এই সরকারে কারা অংশগ্রহণ করবেন এবং সরকার প্রধান কে হবেন তা একটি প্রভাবশালী দেশ নির্ধারণ করে দিবেন বলে জানান। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে সরকারি ও বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বর্তমান অবস্থান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের তথ্য সংগ্রহ করে তাকে নিয়ন্ত্রিত গোয়েন্দা সংস্থার কাছে হস্তান্তর করেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত