আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

হাদি হত্যা: অভিযুক্ত ফয়সালের স্ত্রী-শ্যালক ও বান্ধবী ফের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার

হাদি হত্যা: অভিযুক্ত ফয়সালের স্ত্রী-শ্যালক ও বান্ধবী ফের রিমান্ডে

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় পলাতক আসামি প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী, বান্ধবী ও শ্যালকের ফের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়াও মামলার অপর আসামি রেন্টকার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বলকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছিদ্দিক আজাদের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রথম দফায় তাদের প্রত্যেকের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হল, ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তার শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু।

বিজ্ঞাপন

এর আগে বিকেলে রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ। পরে পাঁচ কারণ দেখিয়ে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুনরায় তাদের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তিনি। রিমান্ডে নেয়ার কারণসমূহে উল্লেখ করা হয়, হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ডে অর্থদাতাদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ডের ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার এবং এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার।

এ ছাড়া অপর আসামি উজ্জ্বলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন আসামির চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপর আসামি উজ্জ্বলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

এ মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তার শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্টকার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, ফয়সালের সহযোগী মো. কবির, ভারতে পালাতে সহযোগিতাকারী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম। এদের মধ্যে প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সালের বাবা-মা হুমায়ুন ও হাসি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়। হাদি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্ব হতেই ঢাকা-৮ আসনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনমুখী বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পলাতক কেন্দ্রীয় নেতাসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ের পর থেকে প্রকাশ্য ও গোপন ষড়যন্ত্র করছে। এর ধারাবাহিকতায় তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনা, নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, নাশকতা, ককটেল বিস্ফোরণ, পেট্রল বোমা, গান পাউডার দিয়ে আগুন সন্ত্রাস, দেশি ও বিদেশি অস্ত্র গোলাবারুদের জোগানদান, অনলাইন গুজব রটনা ও ভীতি প্রদর্শন করছেন। এর মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করা, জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি তৈরি করা সর্বোপরি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধা প্রদান এবং আগ্রহী প্রার্থীদের মনোবলে আঘাত হানার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, গত ১২ ডিসেম্বর মতিঝিলে জুমার নামাজ পড়ে নির্বাচনি প্রচারণা শেষ করেন হাদি। এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে ওইদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে হাদিকে বহনকারী অটোরিকশা পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় দুষ্কৃতকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার পাঠানো হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর

খুঁজুন