পারভেজ হত্যায় জড়িত ২ তরুণীকে খুঁজে বের করার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২০: ০৬
নিহত ছাত্রদল নেতা পারভেজ (সংগৃহীত)

রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত দু’তরুণীকে খুঁজে বের করতে বললেন আদালত।

বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হৃদয় মিয়াজীর রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ।

বিজ্ঞাপন

এদিন হৃদয়কে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন পুলিশ।

রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি বলেন, জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় এর আগে এজাহারনামীয় তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এ আসামি এজাহারনামীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিও ফুটেজ ও সিসি ক্যামেরা দেখেই এ মামলার সাথে আসামির সংশ্লিষ্টতার কথা জানতে পেরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তিনি আরো বলেন, নৃশংস এ হত্যার পেছনে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে বা অন্য কোনো কারণ আছে কি না সেটা জানার জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী তাসলিমা মিনু রিমান্ডের বিরোধিতা করে বলেন, হৃদয় ফার্মাসি ডিপার্টমেন্টের, এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অন্য ডিপার্টমেন্টের। এ হত্যার সঙ্গে আমার মক্কেলের কোনো সম্পর্ক নেই। পারভেজ তার ডিপার্টমেন্টের কেউ না। মেয়েদেরও তিনি চেনেন না।

আসামি পক্ষের আইনজীবীর কথা পরেই বিচারক মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেন, মেয়েরা কোথায়? তাদের ধরেননি কেন?

জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এ মামলায় মেয়েদের সন্দেহ করার মত যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাইনি। সিসি ক্যামেরায় তাদের দেখা যায়নি। আবু জর পিয়াস নামে একটা ছেলে সবকিছু অর্গানাইজ করেছে। আমরা তাকে খুঁজছি।

এরপর আবার বিচারক বলেন, মামলার সাথে মেয়েদের সংশ্লিষ্টতা আছে। তারা স্পটে ছিল, মেয়েগুলোর ভূমিকা ছিল। তাদের খুঁজে বের করুন।

এরপর আসামি পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘এ মামলার আসামি কে সেটা এজাহারে স্পষ্ট বলা আছে। এক, দুই ও তিন নম্বর আসামি কে, কী ভূমিকা রেখেছে, সেটাও উল্লেখ রয়েছে। তাদের ধরা হয়েছে। রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে। এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত সিসি ক্যামেরায় তার (হৃদয় মিয়াজীর) কোনো ভূমিকার কথা বলা নাই। নৈতিকভাবে তাকে এ মামলায় জড়িত করা হয়েছে। তাকে রিমান্ড না দিয়ে জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে ২১ এপ্রিল সোমবার এ মামলায় তিন আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালত।

গত ২১ এপ্রিল সোমবার রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯ এপ্রিল ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে জাহিদুল ইসলাম পারভেজের সাথে তর্কবিতর্ক হয় তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর। একপর্যায়ে দু’পক্ষকে নিয়ে মীমাংসার জন্য বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ২২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুলকে একদল যুবক ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।

এ ঘটনায় রোববার ভোরে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে বনানী থানায় মামলা করেন পারভেজের ভাই হুমায়ুন কবির। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির এলএলবি ও ইংরেজি বিভাগের তিন ছাত্র মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারী ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়।

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত