মাউশির নতুন ডিজিকে প্রত্যাহার দাবিতে শিক্ষা ভবন ঘেরাও

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ৩৩

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হকের প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষা ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া।

শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে প্রত্যাহার হওয়া ব্যক্তিই মাউশির নতুন ডিজি’ শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা ক্যাডার ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

মাউশির ডিজি পদে পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ অনুচর হিসেবে সর্ব মহলে পরিচিত। তার হাত ধরেই বরিশাল বিএম কলেজের রসায়ন বিভাগ থেকে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন পান অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক।

আওয়ামী বলয়ের প্রভাবশালী অধ্যক্ষ হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ লোপাট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে দুর্ব্যবহারসহ বিস্তর অভিযোগে পাঁচ আগস্টের পরে অধ্যক্ষ পদ থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিক আন্দোলন, আল্টিমেটাম এবং শিক্ষা সচিবের বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরই তাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

তারা বলেন,আওয়ামী ঘনিষ্ঠ অনুচর ও বিতর্কিত শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তা কীভাবে মাউশির ডিজির পদে আসীন হয় তা শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটসহ শিক্ষার্থী এবং সুশীল সমাজের কাছে বোধ্যগম্য নয়।

শিক্ষা প্রশাসনে পদায়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের দাপট এখনো কমেনি।

বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের ক্রমাগত চাপের মুখে আওয়ামী ভিসি এবং সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ পরিবর্তন হলেও তাদেরকে আবারও ডেকে এনে পুনর্বহাল করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সিন্ডিকেটের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আওয়ামী সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল এবং গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পদায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও আওয়ামী বলয় মুক্ত হয়নি। যার প্রমাণ মাউশির ডিজি পদে আওয়ামীকরণ।

আওয়ামী শাসনামলের দেড় দশকে ভেঙে দেয়া হয়েছে শিক্ষার মেরুদণ্ড। ওই সরকারের তিন মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, দীপু মনি ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তাদের সময়ে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি যেমন করেছেন, তেমনি বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিতে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ।

এ ছাড়া একের পর এক কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন, প্রশ্নফাঁস (ভর্তি পরীক্ষা, প্রাথমিক থেকে সকল পাবলিক ও নিয়োগ পরীক্ষা), ঘুষ ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল শিক্ষা প্রশাসনের সব দপ্তরই।

ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালালেও শিক্ষা প্রশাসনে রয়ে গেছে আওয়ামী সুবিধাভোগীরা। এই সিন্ডিকেট ভাঙার বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট সব সময় সরব ছিল আছে এবং আগামীতেও থাকবে বলে জানান শিক্ষক নেতারা।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত