খাগড়াছড়িতে চলমান অস্থিরতা নিয়ে ডাকসুর উদ্বেগ

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৫১

খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগ ও পরবর্তীতে সৃষ্টি হওয়া অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। বুধবার (১ অক্টোবর) ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ শয়ন শীল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, মামলার এজাহারে উল্লেখিত সময়ে সিসিটিভি ফুটেজে শয়ন শীলকে খাগড়াছড়ি বাজারে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ঘটনাটির জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক ডা. জয়া চাকমা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ‘ভিকটিমের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। এমনকি সে ধর্ষণেরও শিকার হয়নি।’ প্রতিবেদনে আলামত পরীক্ষার ১০টি সূচকের সবকটিই ‘স্বাভাবিক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ডাকসু বলেছে, এসব পরস্পরবিরোধী তথ্য ও অসঙ্গতির কারণে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে যদি ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হয়, তবে অপরাধীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যদিকে, যদি ঘটনাটি সাজানো বা পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়ে থাকে, তবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

ডাকসুর বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিয়মতান্ত্রিক ও আইনানুগ প্রক্রিয়া এড়িয়ে সুসংগঠিতভাবে অবরোধ, অ্যাম্বুলেন্সে হামলা, দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট, ঘরবাড়ি পোড়ানো, পর্যটক হয়রানি এবং ঘটনাকে জাতিগত সংঘাতে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। চলমান অস্থিরতায় আথুই মারমা, আথ্রাউ মারমা ও তৈইচিং মারমা নামে তিনজন নিহত হন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য গুরুতর আহত হন। ডাকসু এসব হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তির দাবি করেছে।

ডাকসু অভিযোগ করেছে, ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিক বিচারিক প্রক্রিয়ার পরিবর্তে ঘটনাকে জাতিগত সংঘাতে রূপ দেওয়ার প্রবণতা সমীচীন নয়। এ ধরনের ঘটনা পার্বত্য অঞ্চলের বিদ্যমান সশস্ত্র গ্রুপগুলোর ষড়যন্ত্রকে উস্কে দেয় এবং নানা মহলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে সমাধান প্রক্রিয়া আরো জটিল হয়। এর ফলে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও বাঙালি—সব সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হন।

ডাকসু মনে করে, প্রশাসনের ব্যর্থতা ও অদক্ষতা এই অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া গুরুতর অভিযোগ সমাধান করতে না পারা এবং অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া মূলত প্রশাসনের সীমাহীন দায়িত্বহীনতার প্রকাশ।

বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ ও পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠীর অপতৎপরতা ও উস্কানি বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে নষ্ট করছে এবং জাতিগত সংঘাতকে উস্কে দিচ্ছে। তারা উদ্বেগ জানায় যে, দেশের সংকটময় সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-মতের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা পাহাড়ে ‘গণহত্যার’ আহ্বান জানাচ্ছেন, যা জেনোসাইডাল মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। একাধিক সশস্ত্র ও সন্ত্রাসী গ্রুপের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র দেশের প্রায় এক দশমাংশ অঞ্চল তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত