বৃষ্টি ও চোখের জলে ফরিদা পারভীনকে শেষ বিদায়

বিনোদন রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে লোকসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জানাজা শেষে তার মরদেহ কুষ্টিয়ায় নেয়া হচ্ছে। সেখানে পৌঁছানোর পর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন ফরিদা পারভীন।

বিজ্ঞাপন

গতকাল শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি মারা যান। এর আগে, রোববার বেলা ১২টার পরে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ফরিদা পারভীনের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। শিল্পীর বিদায়ে আকাশ যেন কাঁদছিল। ঝুম বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে সেখানে সঙ্গীত অঙ্গনের অনেকে ছুটে আসেন। পরিবারের সদস্য থেকে সঙ্গীত সঙ্গী, সবার কণ্ঠেই শোকের বার্তা ছিলো। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তার মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেয়া হয়। জানাজার পর শেষবারের ঢাকা থেকে গ্রামের কোলে ফিরছেন ফরিদা পারভীন।

Parida-2

বরেণ্য এই সংগীত শিল্পীর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শোক জানিয়েছেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, শিল্পী ফরিদা পারভীন শনিবার দিবাগত রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী এবং চার সন্তান রেখে গেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন ফরিদা পারভীন। কিছুদিন ধরে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছিল, সপ্তাহে দুই দিন তাকে ডায়ালাইসিস করাতে হয়। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তখন চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত বুধবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।অবশেষে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে যান না–ফেরার দেশে।

কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন ১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে ১৪ বছর বয়সে তার পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। এরপর গানে গানে তিনি কাটিয়েছেন ৫৫ বছর। ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ কিংবা ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’ এর মতো লালন সাঁইয়ের জনপ্রিয় গান তার কন্ঠে মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে। শ্রোতারা ভালোবাসে তাকে ‘লালনকন্যা’ উপাধি দিয়েছিলেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত