জিয়াউর রহমান: জীবন, মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসের পাঠপরিক্রমা

তাজ ইসলাম
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৫, ১৪: ৪৬

‘জিয়া এই নামটিই আমার কাছে নতুন বিস্ময় হিসেবে এসেছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। আমি মেজর জিয়া বলছি... তিনি দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধের সূচনা এবং স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।’

বিজ্ঞাপন

সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি ড. মাহবুব হাসান এভাবেই শুরু করেছেন প্রবন্ধ। মাহবুব হাসান কবি, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক। মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষী। আমরা তার সাক্ষ্যকে ইতিহাসের দলিল হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।

তিনি লেখেন, ‘তার সেই ঘোষণা শুনে আমি আর আমার মেজো ভাই মাহবুব মোরশেদ খান, উল্লাসে ফাটতে ফাটতে বাড়ির দিকে এসেছিলাম। সেই তারুণ্যদীপ্তকালে আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য মুখিয়েছিলাম। কারণ, আমরা বিশ্বাস করতাম বন্দুকের নল ছাড়া দেশ শত্রুমুক্ত করা যাবে না।’

আওয়ামী লীগ তখন রাজনীতির মাঠে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল। পাকিস্তান বাহিনী যখন ২৫ মার্চের রাতে পূর্ব পাকিস্তানে আক্রমণ করে বসেছে, তখনো পত্রপত্রিকায় ছাপে আওয়ামী লীগের নিয়মিত কর্মসূচি অংশ হিসেবে হরতাল-ধর্মঘটের নিউজ। তাদের দলীয় কর্মীসহ আমজনতা আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে হয়েছিল হতভম্ব। এ সময়ই এগিয়ে আসেন একজন মেজর জিয়া। তিনি অসীম সাহসে ঘোষণা দেন স্বাধীনতার। ড. মাহবুব হাসান যুদ্ধদিনের কথা বলতে গিয়েই বলেছেন সেসব কথা ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া’ প্রবন্ধে।

স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া-ইতিহাসের এই সত্যটুকু আড়াল করতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছে একটি মহল। কিন্তু ইতিহাস স্বমহিমায় জ্বলে ওঠে। চেপে রাখতে পারে না। পাঠকপ্রিয় সাহিত্য পত্রিকা বাংলা রিভিউর সপ্তম সংখ্যাটি ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংখ্যা’ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রাবন্ধিক ফজলুল হক সৈকত প্রবন্ধের শিরোনাম দিয়েছেন ‘জিয়াউর রহমান ছিলেন অনিবার্য’। জিয়াকে জানা কেন এত প্রয়োজন? ফজলুল হক সৈকতের প্রবন্ধে আছে তার জবাব।

‘সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি ছিল এমনই আবেগধর্মী যে আমাকেও তখন কিছু লিখতে হয়েছিল। কলম তুলে নিতে হয়েছিল হাতে।’ জিয়াউর রহমান এমন মন্তব্য করেছিলেন তার স্মৃতিচারণমূলক লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক গদ্যের প্রেক্ষিত বোঝাতে। কবি কাজী জহিরুল ইসলাম “কীভাবে রচিত হলো ‘একটি জাতির জন্ম’?” শীর্ষক প্রবন্ধে জিয়াউর রহমানের উল্লিখিত রচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে হাজির করেছেন লেখাটির ইতিহাস ও চমকপ্রদ নানা ঘটনা। একটি লেখার ইতিহাসের বয়ানে রচিত হয়েছে আরেকটি লেখা। ‘যদি ১৯৭২ সালের ২১ মার্চ শহীদ প্রেসিডেন্ট (তৎকালীন লে. কর্নেল) জিয়াউর রহমান তার এই রচনাটি দৈনিক বাংলা রিপোর্টার মনজুর আহমদের হাতে তুলে না দিতেন, তাহলে হয়তো এমন একটি ঐতিহাসিক দলিল থেকে বঞ্চিত হতো বাংলাদেশের মানুষ।’

‘বীরউত্তম জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক কবিতা লিখেছেন মহিবুর রহিম, নয়ন আহমেদের কবিতার নাম, ‘জিয়া- একজন গাছের নাম।’ আরো লিখেছেনÑ সালেম সুলেরী, ফেরদৌস সালাম, শাহীন রেজা, কামরুজ্জামান, আবু জাফর সিকদার, জাকির আবু জাফর, সাজ্জাদ বিপ্লব, ফরিদ সাইদ, জিয়া হক, এ কে আজাদ প্রমুখ। প্রবন্ধ লিখেছেন ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, মীর সালমান শামিল, আমান আবদুহু ও তাজ ইসলাম। সূচিতে আছেন আরো অনেকে । প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা, কবিতা দিয়ে সাজানো বাংলা রিভিউর সপ্তম সংখ্যাটি। সম্পাদক সাজ্জাদ বিপ্লব বরাবরের মতো এবারও একটি গুরু দায়িত্ব পালন করলেন। আশা করা যায়, সংখ্যাটি সব মহলে সমাদৃত হবে। মূল্য মাত্র ১০০ টাকা। বাংলা রিভিউর এই যাত্রা অব্যাহত থাকুক।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত