নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার বিয়েতে বাধ সাধলেন ছাত্রদলের ‘বেরসিক’ নেতারা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ০২: ১১
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৫, ০২: ১২
আটক নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা সাজিদ

‘আইডিটি আমার নয়। আমি এমন কোনো পোস্ট করিনি। আগামীকাল আমার বিয়ে, তাই আগামী সপ্তাহে আসতে পারব না বলে আজ এসেছি। আমি এসেছিলাম রিটেক পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে।’

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার আটকের পর কথাগুলো বলছিলেন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শাখার নেতা শরিফুল ইসলাম সাজিদ।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিভাগের ছাত্রলীগের সেক্রেটারি। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের ব্যাংকপাড়া এলাকায়।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রিটেক পরীক্ষার আবেদন করতে আসলে তাকে আটক করে প্রশাসনের হাতে তুলে দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় তার সঙ্গে ছাত্রদল নেতাদের ধস্তাধস্তি হয়। শুক্রবার (৪ জুলাই) তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, সূত্রাপুর থানায় তার নামে একটি মামলা ছিল। ওই মামলায় তাকে আটক করা হলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান সজীব বলেন, ‘আমরা খবর পাই যে সে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে। পরে আমরা সেখানে তাকে ধরতে যাই, এ সময় আমাদের সঙ্গে তার এবং তার কয়েকজন সহপাঠীর ধস্তাধস্তি হয়। তার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে।’

ছাত্রদলের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সময়ে তারা আমাদের উপর নির্মম জুলুম-নির্যাতন করেছে। আমাদেরকে বিল্ডিংয়ের আন্ডারগ্রাউন্ডে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। তার উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে।’

এক সাংবাদিক বলেন, ‘গত বছর তিনি সাংবাদিকদের উপর হামলা করেছিলেন। আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। আমার কাছে সেই ঘটনার ভিডিও ডকুমেন্টও রয়েছে।’

ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সাজিদ।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সাজিদ ইসলাম’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করে লেখা হয়— ‘কাল থেকে একদল তরুণের প্রবেশ হবে যাদের হারানোর কিছুই নেই, না একটা গোছানো রুম, না সম্মান, না বন্ধু, না কোনো আপনজন, না সার্টিফিকেট। কিছুই নেই, নেই ভয়, নেই লজ্জা, নেই আবেগ, নেই দরদ। তারা হবে নির্ভীক, তারা হবে ভয়ংকর সুন্দর!’

তবে আটক হওয়া ছাত্রলীগ নেতা সাজিদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আগামীকাল (শুক্রবার) আমার বিয়ে, তাই আগামী সপ্তাহে আসতে পারব না বলে আজ এসেছি। আমি এসেছিলাম রিটেক পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে। দয়া করে আমাকে ছেড়ে দিন। অন্যথা আমার বিয়ে অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে যাবে।’

জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নানাভাবে তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা ছাত্রদল সবসময় সজাগ ও সচেতন। কোনো ফ্যাসিস্ট অপতৎপরতাকে আমরা কখনোই প্রশ্রয় দেই না। আটক ছাত্রলীগকে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছি এবং আমাদের দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ‘ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সাধারণ সম্পাদককে ধরে নিয়ে আমাদের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা থাকায় আমরা তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করি।’

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত