জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জকসু) নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও বাংলাদেশ ছাত্রঅধিকার পরিষদ যৌথভাবে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ নামে একটি প্যানেল ঘোষণা করেছে। প্যানেল ঘোষণার পরপরই ছাত্রদলের কিছু অংশের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। মঙ্গলবার বিদ্রোহী প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্রদলের মূল প্যানেলকে সমর্থন জানান।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্যানেলটি ঘোষণা করেন। এতে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন একেএম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন খাদিজাতুল কুবরা এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিএম আতিকুর রহমান তানজিল। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক অনিক কুমার দাস, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক নুসরাত চৌধুরী জাফরিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. মাশফিকুল ইসলাম রাইনসহ আরও কয়েকজনকে সম্পাদক হিসেবে রাখা হয়েছে। ছয়জনকে নির্বাহী সদস্য করা হয়েছে এবং আরও একজনের নাম পরে জানানো হবে।
প্যানেল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ১৮ ব্যাচের ৩০–৩৫ জন নেতাকর্মী বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের অভিযোগ ছিল, ঘোষিত প্যানেলটি প্রকৃত ছাত্রদল কর্মীদের নয়, ভাড়াটিয়াদের দিয়ে গঠিত।
বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, প্যানেলে ১৮ ব্যাচ থেকে অন্তত পাঁচজনকে স্থান দিতে হবে এবং প্রতিটি মনোনীত প্রার্থীর সাংগঠনিক পরিচয় স্পষ্ট করতে হবে। দাবি না মানা হলে ‘ঐক্যবদ্ধ ১৮ ব্যাচ’ নামে আলাদা প্যানেল ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
ছাত্রদলের বিদ্রোহী অংশ নিজেদের প্যানেল ‘জাগ্রত জবিয়ান’ ঘোষণা করে এবং মনোনয়নপত্রও তুলে নেয়। তবে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচতলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এছাড়া ‘জাগ্রত জবিয়ান’ প্যানেলও বাতিল করা হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলকে সমর্থন জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের একজন রফিক বলেন, “আমি দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আছি। দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি আমার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। দল যে প্যানেল দিয়েছে, আমি সেটাকেই সমর্থন জানাই এবং তাদের সঙ্গেই থাকব।”
শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমরা যে ঐক্যবদ্ধ প্যানেল ঘোষণা করেছি, তা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মাইলফলক হবে। শিক্ষার মান উন্নয়নে আমাদের প্যানেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কিছু করতে চাই, আর সেই লক্ষ্যেই আমাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচন করেছি।”
আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা ক্যাম্পাসের পরিচিত ও যোগ্যদের নিয়ে প্যানেল গঠন করেছি। আমাদের দলে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী আছেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় সংসদে সীমিত সংখ্যক পদ থাকার কারণে সবাইকে মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি। আমরা আশা করি, ভবিষ্যৎ জকসু নির্বাচনে তাদের মূল্যায়ন করা যাবে।”

