কেন ক্ষমা চাইব? আমি তো কোনো অন্যায় করিনি: বাকৃবি উপাচার্য

প্রতিনিধি, বাকৃবি
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৯
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ২১

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, ‌‘আমি কেন ক্ষমা চাইব? আমি তো কোনো অন্যায় করিনি।’

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবিসহ ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবির প্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

দাবিগুলো হলো- অবৈধভাবে হল ভেকেন্টের নির্দেশনা দুপুর ২টার মধ্যে প্রত্যাহার করে আদেশ তুলে নিতে হবে, হলগুলোতে চলমান সব ধরনের সুবিধা (পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস) নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে হবে, এই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর শিক্ষকদের মদদে বহিরাগত দিয়ে হামলার দায়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দ্বারা ককটেল বিস্ফোরণ, লাইব্রেরি ও স্থাপনা ভাঙচুর এবং শিক্ষার্থীদের উপর হামলা এবং নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্থার ঘটনার জন্য উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, হামলার সাথে জড়িত শিক্ষক এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং গত ১ মাস ধরে চলমান যে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রি অবিলম্বে প্রদান করতে হবে, তিনটি ভিন্ন ডিগ্রি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সংবাদ সম্মেলনে পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহসানুল হক হিমেল বলেন, দাবি দ্রুত মেনে না নিলে পুরো বাকৃবি লকডাউন ও ব্ল্যাকআউট করে দেয়া হবে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা আড়াই শতাধিক শিক্ষক আন্তরিকতার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছি। শতভাগ দাবি মেনে নেয়ার পরেও কেন তারা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করলো, সেটি আমার প্রশ্ন। আট ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর শিক্ষকেরা প্যানিকড ও ট্রমায় পড়ে যান। পরে কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষীরা তালা ভেঙে বের হতে বাধ্য হন।

বহিরাগতদের হামলার বিষয়ে বলেন, 'শিক্ষার্থীরা যে দাবি করছে শিক্ষকেরা বহিরাগতদের দিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে, এটি সম্পূর্ণ ভুল কথা। আমরা বাইরের কাউকে বলিনি ক্যাম্পাসে আসতে, আমরা কেন বলবো? ছাত্রছাত্রীরা তো আমাদের ছেলে মেয়ের মতো।'

ক্যাম্পাস ও হল বন্ধের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, বিবিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়েছে। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিবেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ভাংচুরের বিষয়ে আমি অবশ্যই কমিটি করবো।

এর আগে গতকাল সকাল ১১টায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক শেষে রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।

তবে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে সকালেই বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা গুচ্ছ গুচ্ছ মিছিল নিয়ে কামাল রঞ্জিত মার্কেটে সমবেত হন এবং প্রোক্টরিয়াল বডির জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। সকাল নয়টায় শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ছাত্রীহলগুলো প্রদক্ষিণ করেন। এসময় তারা নারী শিক্ষার্থীদের হল থেকে না বের হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। এরপর তারা কে আর মার্কেট সংলগ্ন সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এসময় তারা 'কথায় কথায় হল ছাড়, হল কি তোর বাপ দাদার' ; 'প্রশাসনের চামড়া, তুলে নেব আমরা'; 'ক্যাম্পাসে হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই' ; 'আমার ভাইকে মারলো কেন, বিচার চাই চাই' সহ নানা প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত