স্ক্যাবিস একটি মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি

ডা. মারজান হক
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫, ১১: ৪০
প্রতীকী ছবি

চর্মরোগের মধ্যে এমন কিছু রোগ রয়েছে যেগুলোকে আমরা যথাযথ গুরুত্ব দিই না। শহর থেকে গ্রামে এক নতুন আতঙ্কের নাম স্ক্যাবিস। এটি এক ধরনের চর্ম সংক্রমণ, যা হয় এক ধরনের অতিক্ষুদ্র পরজীবী মাইটের কারণে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, ইম্পেটিগু, কিডনি রোগসহ আরো নানা ধরনের ভয়াবহ রোগ হতে পারে।

এটি কীভাবে ছড়ায়

বিজ্ঞাপন

এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। স্ক্যাবিস মাইট সাধারণত ত্বকের নিচে গর্ত করে ডিম পাড়ে এবং এক ধরনের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে তীব্র চুলকানির সৃষ্টি করে। দীর্ঘ সময় ত্বকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে এটি ছড়ায়। একই বিছানায় ঘুমানো এবং একই তোয়ালে ও জামাকাপড় ব্যবহার করার মাধ্যমে এটির বিস্তার ঘটে। পরিবারের এক সদস্য আক্রান্ত হলে অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

প্রধান লক্ষণ

তীব্র চুলকানি হয়। বিশেষ করে রাতে বেড়ে যায়। ত্বকে ছোট ছোট ফুসকুড়ি, বিশেষ করে আঙুলের ফাঁকে, শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে, নাভির চারপাশে এবং হাত-পায়ে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

স্ক্যাবিস সম্পূর্ণরূপে নিরাময়যোগ্য। পারমেথ্রিন ৫% ক্রিম বা বেনজিল বেনজোয়েট ব্যবহার করলে এটি সেরে যায়। চিকিৎসার নিয়ম হলো, এক টিউব পুরোটি শরীরের গলা থেকে পায়ের আঙুল লাগাতে হয়। ওষুধ লাগিয়ে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা বা রাতে লাগিয়ে সকালে ধুয়ে ফেলতে হয় এবং একই নিয়মে সাত দিন পর আবার দিতে হয়। একই সঙ্গে পরিবারের সবাইকে চিকিৎসা দিতে হবে। ব্যবহৃত কাপড় ও বিছানাপত্র গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানো রোগের পুনঃসংক্রমণ রোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্ক্যাবিস কোনো লজ্জার রোগ নয়, বরং এটি সচেতনতার অভাবে দ্রুত ছড়ানো একটি রোগ। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণই হতে পারে এই রোগ থেকে মুক্তির উপায়।

লেখক : মেডিকেল অফিসার

ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত