ডা. মো. তৌছিফুর রহমান
মানুষের শরীরে মেরুদণ্ডের দুপাশে মাজার একটু ওপরে শিমের বীজের আদলে দুটা কিডনি থাকে। কিডনির কোষের ক্যানসারকে কিডনি ক্যানসার বলা হয়। সব ক্যানসারের মধ্যে তিন শতাংশ হলো কিডনি ক্যানসার, আর এক্ষেত্রে ক্যানসারে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ। পুরুষ ও নারীর মধ্যে আক্রান্ত রোগীর অনুপাত ২:১। সাধারণত ৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সী মানুষের এটি বেশি হয়।
কারণ : প্রকৃত কারণ জানা যায় না। তবে কিছু উচ্চ ঝুঁকির কারণ রয়েছে। ধূমপান, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, কিছু ব্যথার ওষুধ ও কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়াও কিছু জেনেটিক কারণ রয়েছে। যেমন ‘ভন হিপ্পেল লিন্ডাউ’ ডিজিজ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর লক্ষণ থাকে না। লক্ষণগুলোর মধ্যে তিনটা লক্ষণ একসঙ্গে থাকে।
প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, পেটের ডান বা বাঁ সাইডে চাকা অনুভূত হওয়া, পেটের ডান বা বাঁ সাইডে ব্যথা অনুভূত হওয়া প্রভৃতি। এছাড়া অন্যান্য অঙ্গে ও ছড়িয়ে পড়লে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন হাড়ের মধ্যে ছড়ালে ব্যথা এমনকি হাড় ভেঙে যেতে পারে। লিভারে ছড়ালে ক্ষুধামান্দ্য, বমিভাব, কিংবা বমি হতেও পারে। ফুসফুসে ছড়ালে কাশির সঙ্গে রক্ত ওঠা, বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
ব্রেইনে ছড়ালে মাথাব্যথা, বমি, খিঁচুনি ও স্ট্রোকের মতো লক্ষণ দেখা যেতে পারে। অন্যান্য সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত শারীরিক দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া, অরুচি প্রভৃতি।
পরীক্ষা
সার্জিকাল রিসেকশন করে হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তকরণ করা হয়।
* আল্ট্রাসনোগ্রাফি
* সিটিস্ক্যানও করতে হয়, যাদের ক্ষেত্রে এমআরআই করা যায় না।
* এমআরআই পরীক্ষার মাধ্যমে লোকাল এক্সটেনশন ভালো বোঝা যায়।
* পেট সিটি স্ক্যান শরীরের মধ্যে ক্যানসার কোষকে শনাক্ত করতে পারে।
* বোন স্ক্যান হাড়ের মধ্যে ক্যানসার কোষ থাকলে তা শনাক্ত করে।
অন্যান্য সাধারণ পরীক্ষা
* সিবিসি
* লিভার ফাংশন টেস্ট
* কিডনি ফাংশন টেস্ট
* টিউমার মার্কার
* ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম
* ইউরিন রুটিন অ্যানালাইসিস
চিকিৎসা
১. প্রাথমিক অবস্থায় শুধু অপারেশনের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা সম্ভব। ছড়িয়ে পড়া অবস্থায়ও সার্জারিই মূল চিকিৎসা। রেডিকেল নেফ্রেকটমির মাধ্যমে কিডনি কেটে ফেলা হয়। তাছাড়া আশেপাশের যতটুকু অঞ্চলে ক্যানসারের অস্তিত্ব আছে, সেখান থেকেও কেটে ফেলা হয়। তাছাড়া আরো কিছু অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। যেমন—
* ক্রায়োঅ্যাবলেশন
* রেডিওফ্রিকোয়েন্সি অ্যাবলেশন
* মাইক্রোওয়েভ অ্যাবলেশন
* লেজার অ্যাবলেশন
* হাই ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড অ্যাবলেশন
২. রেডিওথেরাপি সাধারণত প্যালিয়েটিভ ইনটেন্টে দেওয়া হয়।
৩. কেমোথেরাপি সাধারণত প্যালিয়েটিভ ইনটেন্টে দেওয়া হয়।
৪. ইমিউনোথেরাপি অগ্রবর্তী কিডনি ক্যানসারের ক্ষেত্রে দেওয়া হয়। যেমন ইন্টারফেরন, ইন্টারলিউকিন ২, নিভোলুম্যাব, প্রেমব্রোলিজুম্যাব ইত্যাদি।
৫. টার্গেটেড থেরাপি অগ্রবর্তী ক্যানসারের ক্ষেত্রে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। যেমন সুনিটিনিব, সোরাফিনিব, প্যাজোপানিব, লেনভ্যাটিনিব, টেমসিরোলিমাস, ইভারোলিমাস, বেভাসিজুম্যাব ও ক্যাবোজানটিনিব।
অনেক সময় ইমিউনোথেরাপি ও টার্গেটেড থেরাপি একই সঙ্গে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার বা পাঁচ বছর ভালো থাকার সম্ভাবনা থাকে—প্রাথমিক অবস্থায় ৯৩ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে ছড়ালে ৭৪ শতাংশ এবং দূরবর্তী অংশে ছড়ালে ১৭ শতাংশ।
প্রতিরোধে করণীয়
১. উচ্চ ঝুঁকির কারণগুলো এড়িয়ে চলা
২. যাদের মধ্যে জিনগত ব্যাপার বিদ্যমান, তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিয়মিত স্ক্রিনিং করবেন।
৩. শনাক্তকরণের পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা গ্রহণ করা।
লেখক : কনসালট্যান্ট, টিএমএসএস ক্যানসার সেন্টার, বগুড়া
মানুষের শরীরে মেরুদণ্ডের দুপাশে মাজার একটু ওপরে শিমের বীজের আদলে দুটা কিডনি থাকে। কিডনির কোষের ক্যানসারকে কিডনি ক্যানসার বলা হয়। সব ক্যানসারের মধ্যে তিন শতাংশ হলো কিডনি ক্যানসার, আর এক্ষেত্রে ক্যানসারে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ। পুরুষ ও নারীর মধ্যে আক্রান্ত রোগীর অনুপাত ২:১। সাধারণত ৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সী মানুষের এটি বেশি হয়।
কারণ : প্রকৃত কারণ জানা যায় না। তবে কিছু উচ্চ ঝুঁকির কারণ রয়েছে। ধূমপান, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, কিছু ব্যথার ওষুধ ও কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়াও কিছু জেনেটিক কারণ রয়েছে। যেমন ‘ভন হিপ্পেল লিন্ডাউ’ ডিজিজ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর লক্ষণ থাকে না। লক্ষণগুলোর মধ্যে তিনটা লক্ষণ একসঙ্গে থাকে।
প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, পেটের ডান বা বাঁ সাইডে চাকা অনুভূত হওয়া, পেটের ডান বা বাঁ সাইডে ব্যথা অনুভূত হওয়া প্রভৃতি। এছাড়া অন্যান্য অঙ্গে ও ছড়িয়ে পড়লে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন হাড়ের মধ্যে ছড়ালে ব্যথা এমনকি হাড় ভেঙে যেতে পারে। লিভারে ছড়ালে ক্ষুধামান্দ্য, বমিভাব, কিংবা বমি হতেও পারে। ফুসফুসে ছড়ালে কাশির সঙ্গে রক্ত ওঠা, বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
ব্রেইনে ছড়ালে মাথাব্যথা, বমি, খিঁচুনি ও স্ট্রোকের মতো লক্ষণ দেখা যেতে পারে। অন্যান্য সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত শারীরিক দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া, অরুচি প্রভৃতি।
পরীক্ষা
সার্জিকাল রিসেকশন করে হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তকরণ করা হয়।
* আল্ট্রাসনোগ্রাফি
* সিটিস্ক্যানও করতে হয়, যাদের ক্ষেত্রে এমআরআই করা যায় না।
* এমআরআই পরীক্ষার মাধ্যমে লোকাল এক্সটেনশন ভালো বোঝা যায়।
* পেট সিটি স্ক্যান শরীরের মধ্যে ক্যানসার কোষকে শনাক্ত করতে পারে।
* বোন স্ক্যান হাড়ের মধ্যে ক্যানসার কোষ থাকলে তা শনাক্ত করে।
অন্যান্য সাধারণ পরীক্ষা
* সিবিসি
* লিভার ফাংশন টেস্ট
* কিডনি ফাংশন টেস্ট
* টিউমার মার্কার
* ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম
* ইউরিন রুটিন অ্যানালাইসিস
চিকিৎসা
১. প্রাথমিক অবস্থায় শুধু অপারেশনের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা সম্ভব। ছড়িয়ে পড়া অবস্থায়ও সার্জারিই মূল চিকিৎসা। রেডিকেল নেফ্রেকটমির মাধ্যমে কিডনি কেটে ফেলা হয়। তাছাড়া আশেপাশের যতটুকু অঞ্চলে ক্যানসারের অস্তিত্ব আছে, সেখান থেকেও কেটে ফেলা হয়। তাছাড়া আরো কিছু অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। যেমন—
* ক্রায়োঅ্যাবলেশন
* রেডিওফ্রিকোয়েন্সি অ্যাবলেশন
* মাইক্রোওয়েভ অ্যাবলেশন
* লেজার অ্যাবলেশন
* হাই ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড অ্যাবলেশন
২. রেডিওথেরাপি সাধারণত প্যালিয়েটিভ ইনটেন্টে দেওয়া হয়।
৩. কেমোথেরাপি সাধারণত প্যালিয়েটিভ ইনটেন্টে দেওয়া হয়।
৪. ইমিউনোথেরাপি অগ্রবর্তী কিডনি ক্যানসারের ক্ষেত্রে দেওয়া হয়। যেমন ইন্টারফেরন, ইন্টারলিউকিন ২, নিভোলুম্যাব, প্রেমব্রোলিজুম্যাব ইত্যাদি।
৫. টার্গেটেড থেরাপি অগ্রবর্তী ক্যানসারের ক্ষেত্রে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। যেমন সুনিটিনিব, সোরাফিনিব, প্যাজোপানিব, লেনভ্যাটিনিব, টেমসিরোলিমাস, ইভারোলিমাস, বেভাসিজুম্যাব ও ক্যাবোজানটিনিব।
অনেক সময় ইমিউনোথেরাপি ও টার্গেটেড থেরাপি একই সঙ্গে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার বা পাঁচ বছর ভালো থাকার সম্ভাবনা থাকে—প্রাথমিক অবস্থায় ৯৩ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে ছড়ালে ৭৪ শতাংশ এবং দূরবর্তী অংশে ছড়ালে ১৭ শতাংশ।
প্রতিরোধে করণীয়
১. উচ্চ ঝুঁকির কারণগুলো এড়িয়ে চলা
২. যাদের মধ্যে জিনগত ব্যাপার বিদ্যমান, তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিয়মিত স্ক্রিনিং করবেন।
৩. শনাক্তকরণের পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা গ্রহণ করা।
লেখক : কনসালট্যান্ট, টিএমএসএস ক্যানসার সেন্টার, বগুড়া
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডের পর স্থগিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আগামী ২৭ অক্টোবর পালিত হবে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
৪ ঘণ্টা আগে১৮৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দিন। বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এক রোগীর শরীরে ব্যথাহীন অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। দাঁতের চিকিৎসক ডা. উইলিয়াম মর্টন রোগী গিলবার্ট অ্যাবটের মুখে ইথার গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রোগী
৪ ঘণ্টা আগেকরোনা ভ্যাকসিনের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে রয়েছে নানা ভুল ধারণা এবং অন্ধবিশ্বাস। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্ক্যাবিসসহ কিছু সংক্রামক চর্মরোগ মহামারির আকার ধারণ করেছে। বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে, করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করার ফলে তাদের বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হচ্ছে। আবার
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগবালাই আবির্ভাব হয়। বাংলাদেশে হেমন্তকালের শেষের দিকে শীতকাল খুব কাছাকাছি চলে আসে। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় তাপমাত্রার ওঠানামা ও শুষ্ক বাতাসের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বরসহ অন্যান্য রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা
৫ ঘণ্টা আগে