মো. নাহিদ পারভেজ
খুব ধীরে ধীরে গাড়ি চলছে। চোখ বন্ধ করে একমনে বৃষ্টির শব্দ শুনছি আমি।
ড্রাইভার চিৎকার করে বলছে, মনে হয়ছে খুব বেকায়দাত পড়ছি স্যার। সামনোথ কিছুই দেখির পাওছো না। মরণ ঝড় উঠিছে। আল্লাহর নাম নিয়া দোয়া দুরুদ পড়া শুরু করেন। যে কোন সময় হামার উপর গাছ-ভাঙি পড়িবার সম্ভাবনা আছে। বড়ো গাছ হইলে কিন্তু আর বাঁচনের আশা নাই। হে আল্লাহ ইয়া মাবুদ’গো, রহম কর।
একটুও বাজে কথা বলবে না। বরং মন দিয়ে গাড়ি চালাও। বেশি সমস্যা হলে ফাঁকা জায়গা দেখে গাড়ি সাইড করো। ঝড় শেষ হোক তারপর না হয় যাব। এখানে তো কোনো দৌড় প্রতিযোগিতা চলছে না যে ফাস্ট-সেকেন্ড-থার্ড হতে হবে। ধমকে বললাম আমি।
এইটা কি কন স্যার, এই সুনসান জায়গাত গাড়ি থামাইলে হামাক ডাকাত ধরিবার পারে।
কিন্তু যেই গতিতে তুমি গাড়ি চালাচ্ছো ইচ্ছে করলে যে কেউ এমনিতেই আমাদের দৌড়ে ধরতে পারবে।
সাথে সাথেই খুব চুপচাপ, একেবারে গম্ভীর হয়ে গেল মঈন, মনে হলো গাড়ির গতিও এখন বেশ কিছুটা বাড়িয়েছে। যদিও তার ভাবগতি মোটেও ভালো ঠেকছে না আমার। ভয়ের চোটে কোথায় কোন খালে না আবার গাড়ি নামিয়ে ফেলে।
এই গভীর রাতে বের হওয়া মোটেই ঠিক হয়নি। কিন্তু উপায় কি, রাতের যে সময় চাঁদ যখন ঠিক মধ্য-আকাশে থাকবে, আমাকে তখন নামতে হবে পদ্ম-পুকুরে। সে-সময় একটি মাত্র পদ্মের রং হবে একদম ভিন্ন। সেটি তুলে এনে পুষ্পিতার হাতে দিব আমি। তারপর গর্বিত মুখে হেসে বলব, শুভ জন্মদিন পুষ্প! ভালোবাসি তোমাকে!
কি যা তা ভাবছি; বাংলা ছবির ডায়ালগ মনে হচ্ছে।
ঝড় থেমে গেছে, চারদিকটা একদম চুপচাপ। বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে ঝিঁঝি পোকার শব্দ স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। আশেপাশে কোথাও কোথাও থেকে থেকে ব্যাঙেরা ডাকছে। বসে আছি পদ্ম-পুকুর পাড়ে। গাড়িতে মঈন নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে। পারমিশনটা অবশ্য আমি দিয়েছি তাকে। ঠিকমতো না ঘুমালে গাড়ি চালাতে তার কষ্ট হবে।
কিন্তু বড়ো সমস্যা হলো পুরো আকাশে মেঘ থমথম করছে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে তেমন কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এখন চাঁদের আশা করা হবে মহাবোকামি। চার্জার লাইটের আলোও বলতে গেলে প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। এভাবে বসে থাকা নিরর্থক মনে হচ্ছে। অবস্থা যা দেখছি নরমাল পদ্ম খুঁজে পাওয়াই এখন খুব দুরূহ। হঠাৎ নতুন একটা আইডিয়া মাথায় এলো । চার্জারের পেছনের অংশটা টর্চ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়! এটা এতক্ষণ মনেই ছিল না।
পুকুরে সেই আলো ফেলতেই দেখলাম শতশত পদ্মফুল ফুটে আছে। একসঙ্গে এত পদ্ম এর আগে কখনো দেখিনি আমি। এই অপরূপ সৌন্দর্য বর্ণনা করা কঠিন!
শুনেছি পদ্মপুকুরে বিষাক্ত সাপ থাকে। তাই কিছুটা ভয় কাজ করছে।
যা হবার হবে, পুকুরে নেমেই টপাটপ হাতে অনেকগুলো গোলাপি পদ্ম জড়ো করলাম আমি। একটাও ভিন্ন রঙের পদ্ম চোখে পড়ল না। হারামজাদা মাসুম আসলেই আমাকে মিথ্যে বলেছে। নিজের ওপর এখন চরম বিরক্তি লাগছে।
এই পদ্ম’তো চাইলে অর্ডার করেও নিয়ে আসা যেত। যাক যা হবার তাই হয়েছে, এত ভেবে লাভ নেই। এই ভালোবাসার স্মৃতিটুকু থাকুক। পুষ্প রাজি হলে নাতি-পুতির সঙ্গে গল্পটা নিশ্চয়ই একদিন ঠিক করা যাবে।
এই মঈন… ওঠো… দ্রুত গাড়ি স্টার্ট দাও।
প্রায় এক মাস ইচ্ছে করেই পুষ্পিতার সঙ্গ যোগাযোগ করিনি আমি। ঠিক করেছিলাম আজ তার আঠারোতম জন্মদিনে একেবারে গিয়ে চমকে দিব তাকে। তার বিস্মিত মুখের এক্সপ্রেশন কেমন হবে সেটা দেখার খুব ইচ্ছা আমার।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোর হবে।
মঈন গান চালু করেছে, তেরে পেয়ার মে, দিল হার কে, ম্যায় নে কেয়া পায়া, কেয়া গাওয়ায়া…!
এই গান শুনলেই আমার বুকের ভেতর কেমন যেন একটা অদ্ভুত শূন্যতা তৈরি হয়। কেন হয়, ঠিক জানি না।
পুষ্পিতার বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়েছে মঈন। খেয়াল করিনি আমি।
স্যার নামেন, পুষ্প ম্যাডামের বাড়ি আসি গেছি। তার পান খাওয়া দাঁত খুশিতে জ্বলজ্বল করছে। বেচারার জন্যে সত্যিই মায়া হচ্ছে আমার। সারারাত একটানা গাড়ি চালিয়েছে, তবুও এতটুকু ক্লান্তি নেই। বেশ বুঝি, আমাকে সে বহুৎ পছন্দ করে।
ঠিক করলাম, পুষ্পিতা রাজি হলে মঈনকে একটা সারপ্রাইজ গিফট দিতে হবে।
এই প্রথম খেয়াল করলাম আমার পা খালি। মনে হলো, পুকুরপাড়ে জুতাজোড়া খুলে রেখেছিলাম। সেখানেই রয়ে গেছে।
সেভাবেই খুব ধীরে পুষ্পিতার বাড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম আমি। পর পর দুবার কলিং বেল টিপলাম। এ বাড়িতে পুষ্পিতা একাই থাকে। বাড়ির সামনের বেলি গাছটায় অসংখ্য ফুল ফুটেছে। সেখান থেকে সুগন্ধি সুবাস আসছে।
পুষ্পিতাদের দরজায় সোনালি রঙের কারুকাজ করা লেখা পুষ্পনীড়। তার বাবা-মা লন্ডন প্রবাসী।
জানি আমাকে দেখে মোটেও অবাক হবে না সে। খুব শান্তভাবে হেসে বলবে, ভেতরে আসুন, আমি চা নিয়ে আসছি। তার আচরণে মাঝে মাঝে আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই। ভাবি আমার মতো সাধারণ মানুষকে সে তার জীবনে কেন এত সহজভাবে মেনে নিয়েছে।
দরজা খুললেন পুষ্পিতার বাবা। মনে হলো আমাকে দেখে তিনি ভীষণ অবাক হয়েছেন। হওয়াটাই স্বাভাবিক।
এই ছেলে কে তুমি? এত ভোরে অসভ্যর মতো এভাবে বেল বাজায় কেউ? কেন এসেছ? তোমাকে আগে কখনো দেখেছি বলেও ঠিক মনে পড়ছে না।
তার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে পুষ্পিতা। বাবার কাঁধে হাত রেখে শুধু বলল, বাবা ওর নাম পরশ। ওর কথা আগে অনেকবার বলেছি তোমাকে। তুমি ভুলে গেছ। এখন যাও চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো।
কোনো কথা না বলে চলে গেলেন তিনি। যাবার সময় আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বললেন, এই ছেলে তো দেখি খালি পায়ে এসেছে!
পুষ্পর দিকে তাকিয়ে বড়ো একটা ধাক্কা খেলাম আমি! চোখের কোণে কালি জমেছে। মনে হচ্ছে অগুনতি রাত নির্ঘুম কাটিয়েছে সে। না খেয়ে অবহেলায় চেহারার এ কি করুণ অবস্থা করেছে পাগলি মেয়েটা!
পুষ্পিতা আজ একটা সবুজ শাড়ি পরেছে। কেন যেন মনে হলো আমার জন্যে অপেক্ষা করছিল সে। তাকে দেখতে মধুবালার মতো লাগছে। সেই রূপের ঝলসানো আলো এসে পড়ছে আমার সমস্ত শরীরে।
কেমন আছো পুষ্প? জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা।
আপনার হাত পেছনে কেন?
এগুলো তোমার জন্মদিনের উপহার। আমি নিজে আজ তোমার জন্যে এই পদ্মগুলো তুলে এনেছি। পদ্মপুকুরে কিন্তু অনেক বিষাক্ত সাপ থাকে। সাপে কাটলে আর কোনোদিন দেখা হতো না আমাদের।
চুপ করেন। সবসময় এরকম পাগলামি করেন কেন আপনি? এতদিন কোথায় ছিলেন?
এই প্রথম আমাকে সে ভেতরে যেতে বলছে না।
হঠাৎ খেয়াল করলাম নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে কাঁদছে পুষ্পিতা… আর তার হাতে ঝলমলে করছে একটা নতুন হীরার আংটি!
সেদিকে তাকাতেই অন্যমনস্ক হয়ে গেল পুষ্প…
আমার দিকে না তাকিয়েই বলল, দুদিন আগে আসলে আমার বিয়ের অনুষ্ঠানের দাওয়াত খেতে পারতেন। আমার হবু জামাই হৃদয়-বিশেষজ্ঞ। আপনার কি মনে হয় সে তার বউয়ের হৃদরোগ এই জীবনে কোনোদিন সারাতে পারবে?
কেন যেন ভীষণ রাগ হলো আমার।
এগুলো আমাকে বলছো কেন? আসলে আমি তোমার কে!
আপনি আমার কেউ না পরশ ভাই, কেউ না... হয়তো আবার আপনিই আমার লুকানো সেই হৃদ-অসুখ…!
খুব ধীরে ধীরে গাড়ি চলছে। চোখ বন্ধ করে একমনে বৃষ্টির শব্দ শুনছি আমি।
ড্রাইভার চিৎকার করে বলছে, মনে হয়ছে খুব বেকায়দাত পড়ছি স্যার। সামনোথ কিছুই দেখির পাওছো না। মরণ ঝড় উঠিছে। আল্লাহর নাম নিয়া দোয়া দুরুদ পড়া শুরু করেন। যে কোন সময় হামার উপর গাছ-ভাঙি পড়িবার সম্ভাবনা আছে। বড়ো গাছ হইলে কিন্তু আর বাঁচনের আশা নাই। হে আল্লাহ ইয়া মাবুদ’গো, রহম কর।
একটুও বাজে কথা বলবে না। বরং মন দিয়ে গাড়ি চালাও। বেশি সমস্যা হলে ফাঁকা জায়গা দেখে গাড়ি সাইড করো। ঝড় শেষ হোক তারপর না হয় যাব। এখানে তো কোনো দৌড় প্রতিযোগিতা চলছে না যে ফাস্ট-সেকেন্ড-থার্ড হতে হবে। ধমকে বললাম আমি।
এইটা কি কন স্যার, এই সুনসান জায়গাত গাড়ি থামাইলে হামাক ডাকাত ধরিবার পারে।
কিন্তু যেই গতিতে তুমি গাড়ি চালাচ্ছো ইচ্ছে করলে যে কেউ এমনিতেই আমাদের দৌড়ে ধরতে পারবে।
সাথে সাথেই খুব চুপচাপ, একেবারে গম্ভীর হয়ে গেল মঈন, মনে হলো গাড়ির গতিও এখন বেশ কিছুটা বাড়িয়েছে। যদিও তার ভাবগতি মোটেও ভালো ঠেকছে না আমার। ভয়ের চোটে কোথায় কোন খালে না আবার গাড়ি নামিয়ে ফেলে।
এই গভীর রাতে বের হওয়া মোটেই ঠিক হয়নি। কিন্তু উপায় কি, রাতের যে সময় চাঁদ যখন ঠিক মধ্য-আকাশে থাকবে, আমাকে তখন নামতে হবে পদ্ম-পুকুরে। সে-সময় একটি মাত্র পদ্মের রং হবে একদম ভিন্ন। সেটি তুলে এনে পুষ্পিতার হাতে দিব আমি। তারপর গর্বিত মুখে হেসে বলব, শুভ জন্মদিন পুষ্প! ভালোবাসি তোমাকে!
কি যা তা ভাবছি; বাংলা ছবির ডায়ালগ মনে হচ্ছে।
ঝড় থেমে গেছে, চারদিকটা একদম চুপচাপ। বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে ঝিঁঝি পোকার শব্দ স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। আশেপাশে কোথাও কোথাও থেকে থেকে ব্যাঙেরা ডাকছে। বসে আছি পদ্ম-পুকুর পাড়ে। গাড়িতে মঈন নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে। পারমিশনটা অবশ্য আমি দিয়েছি তাকে। ঠিকমতো না ঘুমালে গাড়ি চালাতে তার কষ্ট হবে।
কিন্তু বড়ো সমস্যা হলো পুরো আকাশে মেঘ থমথম করছে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে তেমন কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এখন চাঁদের আশা করা হবে মহাবোকামি। চার্জার লাইটের আলোও বলতে গেলে প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। এভাবে বসে থাকা নিরর্থক মনে হচ্ছে। অবস্থা যা দেখছি নরমাল পদ্ম খুঁজে পাওয়াই এখন খুব দুরূহ। হঠাৎ নতুন একটা আইডিয়া মাথায় এলো । চার্জারের পেছনের অংশটা টর্চ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়! এটা এতক্ষণ মনেই ছিল না।
পুকুরে সেই আলো ফেলতেই দেখলাম শতশত পদ্মফুল ফুটে আছে। একসঙ্গে এত পদ্ম এর আগে কখনো দেখিনি আমি। এই অপরূপ সৌন্দর্য বর্ণনা করা কঠিন!
শুনেছি পদ্মপুকুরে বিষাক্ত সাপ থাকে। তাই কিছুটা ভয় কাজ করছে।
যা হবার হবে, পুকুরে নেমেই টপাটপ হাতে অনেকগুলো গোলাপি পদ্ম জড়ো করলাম আমি। একটাও ভিন্ন রঙের পদ্ম চোখে পড়ল না। হারামজাদা মাসুম আসলেই আমাকে মিথ্যে বলেছে। নিজের ওপর এখন চরম বিরক্তি লাগছে।
এই পদ্ম’তো চাইলে অর্ডার করেও নিয়ে আসা যেত। যাক যা হবার তাই হয়েছে, এত ভেবে লাভ নেই। এই ভালোবাসার স্মৃতিটুকু থাকুক। পুষ্প রাজি হলে নাতি-পুতির সঙ্গে গল্পটা নিশ্চয়ই একদিন ঠিক করা যাবে।
এই মঈন… ওঠো… দ্রুত গাড়ি স্টার্ট দাও।
প্রায় এক মাস ইচ্ছে করেই পুষ্পিতার সঙ্গ যোগাযোগ করিনি আমি। ঠিক করেছিলাম আজ তার আঠারোতম জন্মদিনে একেবারে গিয়ে চমকে দিব তাকে। তার বিস্মিত মুখের এক্সপ্রেশন কেমন হবে সেটা দেখার খুব ইচ্ছা আমার।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোর হবে।
মঈন গান চালু করেছে, তেরে পেয়ার মে, দিল হার কে, ম্যায় নে কেয়া পায়া, কেয়া গাওয়ায়া…!
এই গান শুনলেই আমার বুকের ভেতর কেমন যেন একটা অদ্ভুত শূন্যতা তৈরি হয়। কেন হয়, ঠিক জানি না।
পুষ্পিতার বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়েছে মঈন। খেয়াল করিনি আমি।
স্যার নামেন, পুষ্প ম্যাডামের বাড়ি আসি গেছি। তার পান খাওয়া দাঁত খুশিতে জ্বলজ্বল করছে। বেচারার জন্যে সত্যিই মায়া হচ্ছে আমার। সারারাত একটানা গাড়ি চালিয়েছে, তবুও এতটুকু ক্লান্তি নেই। বেশ বুঝি, আমাকে সে বহুৎ পছন্দ করে।
ঠিক করলাম, পুষ্পিতা রাজি হলে মঈনকে একটা সারপ্রাইজ গিফট দিতে হবে।
এই প্রথম খেয়াল করলাম আমার পা খালি। মনে হলো, পুকুরপাড়ে জুতাজোড়া খুলে রেখেছিলাম। সেখানেই রয়ে গেছে।
সেভাবেই খুব ধীরে পুষ্পিতার বাড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম আমি। পর পর দুবার কলিং বেল টিপলাম। এ বাড়িতে পুষ্পিতা একাই থাকে। বাড়ির সামনের বেলি গাছটায় অসংখ্য ফুল ফুটেছে। সেখান থেকে সুগন্ধি সুবাস আসছে।
পুষ্পিতাদের দরজায় সোনালি রঙের কারুকাজ করা লেখা পুষ্পনীড়। তার বাবা-মা লন্ডন প্রবাসী।
জানি আমাকে দেখে মোটেও অবাক হবে না সে। খুব শান্তভাবে হেসে বলবে, ভেতরে আসুন, আমি চা নিয়ে আসছি। তার আচরণে মাঝে মাঝে আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই। ভাবি আমার মতো সাধারণ মানুষকে সে তার জীবনে কেন এত সহজভাবে মেনে নিয়েছে।
দরজা খুললেন পুষ্পিতার বাবা। মনে হলো আমাকে দেখে তিনি ভীষণ অবাক হয়েছেন। হওয়াটাই স্বাভাবিক।
এই ছেলে কে তুমি? এত ভোরে অসভ্যর মতো এভাবে বেল বাজায় কেউ? কেন এসেছ? তোমাকে আগে কখনো দেখেছি বলেও ঠিক মনে পড়ছে না।
তার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে পুষ্পিতা। বাবার কাঁধে হাত রেখে শুধু বলল, বাবা ওর নাম পরশ। ওর কথা আগে অনেকবার বলেছি তোমাকে। তুমি ভুলে গেছ। এখন যাও চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো।
কোনো কথা না বলে চলে গেলেন তিনি। যাবার সময় আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বললেন, এই ছেলে তো দেখি খালি পায়ে এসেছে!
পুষ্পর দিকে তাকিয়ে বড়ো একটা ধাক্কা খেলাম আমি! চোখের কোণে কালি জমেছে। মনে হচ্ছে অগুনতি রাত নির্ঘুম কাটিয়েছে সে। না খেয়ে অবহেলায় চেহারার এ কি করুণ অবস্থা করেছে পাগলি মেয়েটা!
পুষ্পিতা আজ একটা সবুজ শাড়ি পরেছে। কেন যেন মনে হলো আমার জন্যে অপেক্ষা করছিল সে। তাকে দেখতে মধুবালার মতো লাগছে। সেই রূপের ঝলসানো আলো এসে পড়ছে আমার সমস্ত শরীরে।
কেমন আছো পুষ্প? জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা।
আপনার হাত পেছনে কেন?
এগুলো তোমার জন্মদিনের উপহার। আমি নিজে আজ তোমার জন্যে এই পদ্মগুলো তুলে এনেছি। পদ্মপুকুরে কিন্তু অনেক বিষাক্ত সাপ থাকে। সাপে কাটলে আর কোনোদিন দেখা হতো না আমাদের।
চুপ করেন। সবসময় এরকম পাগলামি করেন কেন আপনি? এতদিন কোথায় ছিলেন?
এই প্রথম আমাকে সে ভেতরে যেতে বলছে না।
হঠাৎ খেয়াল করলাম নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে কাঁদছে পুষ্পিতা… আর তার হাতে ঝলমলে করছে একটা নতুন হীরার আংটি!
সেদিকে তাকাতেই অন্যমনস্ক হয়ে গেল পুষ্প…
আমার দিকে না তাকিয়েই বলল, দুদিন আগে আসলে আমার বিয়ের অনুষ্ঠানের দাওয়াত খেতে পারতেন। আমার হবু জামাই হৃদয়-বিশেষজ্ঞ। আপনার কি মনে হয় সে তার বউয়ের হৃদরোগ এই জীবনে কোনোদিন সারাতে পারবে?
কেন যেন ভীষণ রাগ হলো আমার।
এগুলো আমাকে বলছো কেন? আসলে আমি তোমার কে!
আপনি আমার কেউ না পরশ ভাই, কেউ না... হয়তো আবার আপনিই আমার লুকানো সেই হৃদ-অসুখ…!
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
২৬ মিনিট আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে জোবায়েদের সহপাঠী সজল খান বলেন, “পুলিশ এখনো বর্ষার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। শুধু বর্ষা ও মাহির নয়, এই ঘটনায় বর্ষার পরিবারও জড়িত। গতকাল আদালতে আমাদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ ছিল অমানবিক। আমাদের এক বান্ধবী ভিডিও করতে গেলে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। আমরা পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।”
১ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনের মামলায় বুয়েটের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জামিনের বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন বিচার
২ ঘণ্টা আগে