একটি পাখির বাঁচার লড়াই

আল মাহমুদ
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪: ৩৪

পৃথিবীর সবচেয়ে খুদে পাখি সম্ভবত টুনটুনি। পাখিটি আকারে ক্ষুদ্র, কিন্তু তার বুদ্ধি ও প্রকৃতির দেওয়া সাহস তাকে গৌরবান্বিত করেছে। বৃষ্টির শব্দে ডাকে এবং ফুড়ুৎ করে উড়াল দিয়ে এক গাছ থেকে আরেক গাছে বসে ডাকতে থাকে। পাখিটির স্বভাব তাকে সুন্দর করেছে। সে দুটি গাছের পাতা জোড়া দিয়ে তার ভেতরে বাসা বানায়। নরম নরম খড়কুটো জোগাড় করে অত্যন্ত কৌশলে বাসাটি গড়ে তোলে।

বিজ্ঞাপন

নরম খড়কুটো দিয়ে একটি পাখির বাসার গঠনে গড়ে উঠলেই তার ভেতর খড়কুটো জমা করে এমন একটা আকার দাঁড় করায়, যাতে এটি মায়াময় পাখির বাসার রূপ নেয়। তারপর ডিম পাড়ার পালা। পাখিটির বাসা নরম এবং আরামদায়ক হওয়ার পর তার ভেতর মেয়ে পাখিটি ডিম দেয় এবং ডিম দেওয়া শেষ হলে ডিমে তা দিতে থাকে। তত দিন পর্যন্ত তা দেয়, যত দিন ডিম ফুটে বাচ্চা না বের হয়। এসব কাজ দুটি পাখি সম্মিলিতভাবেই করে। এ সময় নানাভাবে মেয়ে পাখিটিকে সাহায্য করে পুরুষ পাখিটি।

প্রকৃতির নিয়মেই পাখি এসব শিক্ষা গ্রহণ করে। কেউ তাদের শেখায় না। জন্ম থেকেই তারা জানে কী করতে হবে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় এবং বাচ্চার পরিচর্যার জন্য প্রকৃতির মতোই কিছু শিক্ষণীয় ব্যাপার তারা দেখতে পায়। তারা বাঁচার জন্য শেখে এবং শিখতে শিখতে বেঁচে ওঠে। দিন-রাত আহার জোগাড় করার দায়িত্ব পালন করে এবং একজন আরেকজনের সহযোগী হিসেবে প্রাণপাত করে, পরিশ্রম করে আহার খুঁটে খায় এবং খড়কুটো জোগাড় করে নিজের বাসাটিকে আরামদায়ক রাখে। কেউ এসব শেখায়নি। প্রকৃতির মধ্যেই হাওয়ায় দোল খেতে থাকে এবং জন্ম থেকেই পাখি দুটি জানে কী করতে হবে।

পাখির বড় প্রাকৃতিক স্বভাব হলো সে উড়তে পারে, বাসা বানাতে পারে, ডিম পেড়ে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটাতে পারে। এসব কেউ তাকে শেখায়নি। নিজেরাই প্রাকৃতিক নিয়মে বাতাসে দোল খেতে খেতে শিখে নিয়েছে। প্রকৃতি তাদের উড়তে শিখিয়েছে, আহার জোগাড় করা শিখিয়েছে, পাখির ডাকে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে বাঁচতে শিখিয়েছে। তারা জানে তাদের জীবন তারা কীভাবে কাটাবে। পাখি যখন বাসা বানায় খড়কুটো জোগাড় করে, ডিম পাড়ে, ডিমে তা দেয়Ñএসবই প্রকৃতির স্বভাবের মধ্যে ছিল। পাখিটি শুধু হাওয়ায় দোল খেতে খেতে সুন্দর শব্দে ডাকতে ডাকতে প্রাকৃতিক আবহাওয়াকে সহজ করে তুলেছে। এসবই সুন্দর, মধুর, আনন্দময়। এভাবে জীবনের রীতি গড়িয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির নিয়মে বাতাসে দোল খেতে খেতে।

অনুলিখন। হোসাইন আহমদ

সৌজন্যে : সৈয়দ আবদাল আহমদ

বিষয়:

টুনটুনি
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত