সুরাইয়া আক্তার লাবনী
খুলনার খালিশপুরের সরু গলিতে বিকালের আলো ধীরে ধীরে ম্লান হচ্ছে। চায়ের দোকানের কোণে বসে আছেন জুলেখা বেগম—বয়স এখন ৬০ ছুঁইছুঁই। হাতে এক কাপ চা, মুখে ক্লান্ত অথচ আত্মবিশ্বাসী হাসি। তিনি বললেন, ‘আমরা এখন বাংলাদেশি, আমাদের আইডি কার্ড দেখবেন?’ তারপর যোগ করলেন, ‘আমরাও এখন বাঙালিদের মতোই। কোনো অমিল নেই—সব একই।’ এই কথাগুলো শুনলে মনে হয়, যেন তিনি শুধু নিজের নয়, একটি গোটা প্রজন্মের ইতিহাস উচ্চারণ করছেন। একসময় ‘বিহারি’ পরিচয় মানেই ছিল বিচ্ছিন্নতা, অবিশ্বাস, আর ভাষাগত দূরত্ব। আজ তারা নিজেদের জায়গা খুঁজে নিয়েছেন এই দেশের ভেতরেই। কিন্তু সেই পথটা ছিল দীর্ঘ ও কণ্টকাকীর্ণ, যেখানে নারীকে হতে হয়েছে নীরব অথচ অবিচল যোদ্ধা।
জুলেখার শৈশব কেটেছে যুদ্ধের বিভীষিকায়। বয়স তখন ৮। পাকিস্তান-বাংলাদেশ বিভক্তির সময় পরিবারকে জায়গা পরিবর্তন করতে হয়। অভাব, ক্ষুধা আর ভয় ছিল প্রতিদিনের সঙ্গী। মা ভিক্ষা করতেন; শুক্রবার ও শনিবারে যা পেতেন, তাই দিয়ে পরিবার বাঁচত। তিনি বলেন, ‘আমরা যেমন কষ্ট করেছি, বাঙালিরাও তেমনই করেছে। আমরা আলাদা ছিলাম না।’ তবুও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশে ‘বিহারি’ নামটি মানে ছিল সন্দেহের দৃষ্টি, নিঃশব্দ প্রান্তিকতা। নারী হিসেবে তাদের বোঝা ছিল দ্বিগুণ—একদিকে ভাষাগত বৈষম্য, অন্যদিকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের অনুশাসন। তারা কথা বলতে ভয় পেতেন, উচ্চারণে উর্দুর ছোঁয়া থাকলেই কেউ কেউ মুখ ফিরিয়ে নিত। একসময়কার উর্দুভাষী এই নারীরা এখন বাংলা ভাষাতেই নিজেদের গল্প বলেন। তাদের জীবনের সঙ্গে ভাষার এই বদলটাই সবচেয়ে বড় রূপান্তর। খালিশপুরের মিলগুলোয় একসময় তাদের পরিবার কাজ করত, সেই মিলের শব্দের সঙ্গে মিশে ছিল উর্দু ভাষার ছন্দ। এখন মিল নেই, কিন্তু জীবনের চাকা থেমে নেই। সেই মিলের পরিত্যক্ত ইট-চুনের মধ্যে আজও হয়তো প্রতিধ্বনি তোলে অতীতের কণ্ঠস্বর, যা এখন বাংলায় উচ্চারিত হয়।
রোকছানা বেগম, ৪০ ছুঁইছুঁই বয়সের এক নারী। তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্যের জন্য পড়াশোনা হয়নি, কিন্তু এখন সবকিছুই বাঙালিদের মতো; ধর্ম, খাবার, পোশাক—সব।’ তারপর একটু থেমে যোগ করেন, ‘তবু কোথাও একটা দাগ থেকে যায়। মানুষ মেনে নেয়, কিন্তু পুরোপুরি ভোলে না।’ এই দাগই তাদের স্মৃতি, ইতিহাস আর অস্তিত্বের প্রতীক। বিহারি নারীদের জন্য ভাষা কখনোই কেবল কথা বলার মাধ্যম ছিল না; এটা ছিল আত্মরক্ষার ঢাল, সামাজিক পরিচয়ের প্রতিরোধ। একসময় তারা নিজেদের উর্দুভাষী পরিচয় আড়াল করতেন, যেন বৈষম্যের চোখে না পড়েন। কিন্তু সময়ের স্রোতে তাদের মুখে এসে গেছে নতুন শব্দ—বাংলা ভাষার।
তামান্না বেগম ৩৫ বছর বয়সি এক টিউশন শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘বিহারি নামটা আগে কষ্ট দিত। এখন মানিয়ে নিয়েছি। আমার ভাইয়ের স্ত্রী বাঙালি—এখন এখানে এগুলো স্বাভাবিক।’ তার কণ্ঠে স্বস্তিভাব মিশে আছে—যে সমাজ একসময় আলাদা করে রেখেছিল, সেখানে আজ একসঙ্গে বসবাস করা সম্ভব হয়েছে। তামান্নার মতো আরো অনেক নারী এখন বাংলা ভাষার মধ্য দিয়েই আত্মপ্রকাশের জায়গা তৈরি করছেন। তারা সন্তানদের বাংলায় পড়াচ্ছেন, প্রশাসনিক কাজ করছেন এবং ছোটখাটো ব্যবসা চালাচ্ছেন। তাদের এই ভাষাগত রূপান্তর নিছক শব্দ বদল নয়—এ এক সামাজিক মুক্তি।
রোকসানার প্রতিবেশী শরীফা ১২ বছরের এক স্কুলছাত্রী। সে হেসে বলে, ‘আমি বিহারি ভাষা ঠিক বলতে পারি না। স্কুলে সবাই বাংলায় বলে, তাই আমিও বাংলায় কথা বলি।’ এই ছোট্ট বাক্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সময়ের প্রবল স্রোত। শরীফার প্রজন্ম আর উর্দু জানে না, জানে শুধু বাংলা। তার বাবা-মা উর্দু বলেন, কিন্তু মেয়ের কণ্ঠে শোনা যায় বাংলা উচ্চারণ। এই ভাষান্তরই আজকের বাস্তবতা, যেখানে ইতিহাস বদলে দিয়েছে ভাষা, আর ভাষা বদলে দিয়েছে পরিচয়।
এই প্রজন্মের মেয়েরা আর ‘বিহারি’ শব্দটাকে অপমান হিসেবে নেয় না; বরং তারা এটাকে ইতিহাসের অংশ মনে করে, যে ইতিহাসে আছে মায়ের সংগ্রাম, দাদির নীরবতা, আর ভাষার অজস্র ঘাত-প্রতিঘাত। এখন তারা বুঝতে শিখেছে, নিজের পরিচয় বদলানো মানে নিজের অস্তিত্ব হারানো নয়; বরং নতুন এক সংস্কৃতি তৈরি করা, যেখানে দুটি ভাষা, দুটি ইতিহাস মিশে যায় একই জীবনের ধারায়।
মনি বেগম, বয়স ৩৫। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন সব দিক দিয়ে মানিয়ে নিয়েছি। বাঙালিদের মতোই জীবনযাপন করি। কাজ করি, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাই, ঈদ-পূজায় একসঙ্গে আনন্দ করি।’ তার চোখে-মুখে প্রশান্তি, কিন্তু কথার আড়ালে আছে এক গভীর ইতিহাস—দারিদ্র্য, অস্বীকৃতি আর নিজের জায়গা পাওয়ার লড়াই। এই নারীরা শুধু ভাষা বদলাননি, বদলে ফেলেছেন নিজেদের অবস্থানও। তারা আজ রিকশা চালান, গার্মেন্টে কাজ করেন এবং বাজারে সবজি বিক্রি করেন। অনেকেই প্রথম প্রজন্মের কর্মজীবী নারী, যারা ঘরের বাধা ভেঙে বাইরে বেরিয়েছেন। তাদের জন্য এই সংগ্রাম শুধুই আর্থিক নয়, এটি আত্মপরিচয়ের লড়াই।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ রহিমা খাতুন। তিনি একসময় মিল-কারখানায় কাজ করতেন। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে দারিদ্র্য ছিল, পাকিস্তান-বাংলাদেশ আলাদা হলেও কষ্ট একই রইল। এখন একটু ভালো, মেয়েরা কাজ করে, স্কুলে যায়।’ তার গলায় গর্ব—‘যে মেয়েরা একসময় ঘরের ভেতর বন্দি ছিল, তারা আজ নিজের জীবন গড়তে শিখেছে।’
এই নারীদের গল্প শুধু ভাষার নয়, আত্মপরিচয়েরও। একসময় উর্দু ছিল তাদের গর্বের প্রতীক, এখন বাংলা তাদের স্বস্তির ভাষা। কিন্তু এই রূপান্তরের ভেতরেও আছে অব্যক্ত এক টানাপোড়েন—নিজের শিকড় হারানোর বেদনা, আর নতুন পরিচয় গড়ে তোলার গর্ব। বহু বছর পর আজ তারা বাংলা ভাষায় গল্প বলেন, বাংলা সংবাদ শোনেন, বাংলা সিনেমায় হাসেন; কিন্তু মনের ভেতরে এখনো কোথাও বাজে উর্দু লালনগীতির সুর, যা তাদের মনে করিয়ে দেয়—তারা একসময় অন্য ভাষার সন্তান ছিলেন।
খালিশপুরে বিকাল নামলে চায়ের দোকানের সামনে দেখা যায় জুলেখা বেগম চা ঢালছেন, পাশে রোকসানা গল্প করছেন বাংলায়। চায়ের ধোঁয়ার ভেতর দিয়ে মিশে যাচ্ছে অতীতের উর্দু উচ্চারণ আর বর্তমানের বাংলা শব্দ। সেই দৃশ্য যেন এক নীরব আত্মবিশ্বাসের বার্তা ছড়িয়ে দেয়—‘আমরা এখন বাংলাদেশি, আমাদের গল্পও এই দেশের।’
খুলনার খালিশপুরের সরু গলিতে বিকালের আলো ধীরে ধীরে ম্লান হচ্ছে। চায়ের দোকানের কোণে বসে আছেন জুলেখা বেগম—বয়স এখন ৬০ ছুঁইছুঁই। হাতে এক কাপ চা, মুখে ক্লান্ত অথচ আত্মবিশ্বাসী হাসি। তিনি বললেন, ‘আমরা এখন বাংলাদেশি, আমাদের আইডি কার্ড দেখবেন?’ তারপর যোগ করলেন, ‘আমরাও এখন বাঙালিদের মতোই। কোনো অমিল নেই—সব একই।’ এই কথাগুলো শুনলে মনে হয়, যেন তিনি শুধু নিজের নয়, একটি গোটা প্রজন্মের ইতিহাস উচ্চারণ করছেন। একসময় ‘বিহারি’ পরিচয় মানেই ছিল বিচ্ছিন্নতা, অবিশ্বাস, আর ভাষাগত দূরত্ব। আজ তারা নিজেদের জায়গা খুঁজে নিয়েছেন এই দেশের ভেতরেই। কিন্তু সেই পথটা ছিল দীর্ঘ ও কণ্টকাকীর্ণ, যেখানে নারীকে হতে হয়েছে নীরব অথচ অবিচল যোদ্ধা।
জুলেখার শৈশব কেটেছে যুদ্ধের বিভীষিকায়। বয়স তখন ৮। পাকিস্তান-বাংলাদেশ বিভক্তির সময় পরিবারকে জায়গা পরিবর্তন করতে হয়। অভাব, ক্ষুধা আর ভয় ছিল প্রতিদিনের সঙ্গী। মা ভিক্ষা করতেন; শুক্রবার ও শনিবারে যা পেতেন, তাই দিয়ে পরিবার বাঁচত। তিনি বলেন, ‘আমরা যেমন কষ্ট করেছি, বাঙালিরাও তেমনই করেছে। আমরা আলাদা ছিলাম না।’ তবুও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশে ‘বিহারি’ নামটি মানে ছিল সন্দেহের দৃষ্টি, নিঃশব্দ প্রান্তিকতা। নারী হিসেবে তাদের বোঝা ছিল দ্বিগুণ—একদিকে ভাষাগত বৈষম্য, অন্যদিকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের অনুশাসন। তারা কথা বলতে ভয় পেতেন, উচ্চারণে উর্দুর ছোঁয়া থাকলেই কেউ কেউ মুখ ফিরিয়ে নিত। একসময়কার উর্দুভাষী এই নারীরা এখন বাংলা ভাষাতেই নিজেদের গল্প বলেন। তাদের জীবনের সঙ্গে ভাষার এই বদলটাই সবচেয়ে বড় রূপান্তর। খালিশপুরের মিলগুলোয় একসময় তাদের পরিবার কাজ করত, সেই মিলের শব্দের সঙ্গে মিশে ছিল উর্দু ভাষার ছন্দ। এখন মিল নেই, কিন্তু জীবনের চাকা থেমে নেই। সেই মিলের পরিত্যক্ত ইট-চুনের মধ্যে আজও হয়তো প্রতিধ্বনি তোলে অতীতের কণ্ঠস্বর, যা এখন বাংলায় উচ্চারিত হয়।
রোকছানা বেগম, ৪০ ছুঁইছুঁই বয়সের এক নারী। তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্যের জন্য পড়াশোনা হয়নি, কিন্তু এখন সবকিছুই বাঙালিদের মতো; ধর্ম, খাবার, পোশাক—সব।’ তারপর একটু থেমে যোগ করেন, ‘তবু কোথাও একটা দাগ থেকে যায়। মানুষ মেনে নেয়, কিন্তু পুরোপুরি ভোলে না।’ এই দাগই তাদের স্মৃতি, ইতিহাস আর অস্তিত্বের প্রতীক। বিহারি নারীদের জন্য ভাষা কখনোই কেবল কথা বলার মাধ্যম ছিল না; এটা ছিল আত্মরক্ষার ঢাল, সামাজিক পরিচয়ের প্রতিরোধ। একসময় তারা নিজেদের উর্দুভাষী পরিচয় আড়াল করতেন, যেন বৈষম্যের চোখে না পড়েন। কিন্তু সময়ের স্রোতে তাদের মুখে এসে গেছে নতুন শব্দ—বাংলা ভাষার।
তামান্না বেগম ৩৫ বছর বয়সি এক টিউশন শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘বিহারি নামটা আগে কষ্ট দিত। এখন মানিয়ে নিয়েছি। আমার ভাইয়ের স্ত্রী বাঙালি—এখন এখানে এগুলো স্বাভাবিক।’ তার কণ্ঠে স্বস্তিভাব মিশে আছে—যে সমাজ একসময় আলাদা করে রেখেছিল, সেখানে আজ একসঙ্গে বসবাস করা সম্ভব হয়েছে। তামান্নার মতো আরো অনেক নারী এখন বাংলা ভাষার মধ্য দিয়েই আত্মপ্রকাশের জায়গা তৈরি করছেন। তারা সন্তানদের বাংলায় পড়াচ্ছেন, প্রশাসনিক কাজ করছেন এবং ছোটখাটো ব্যবসা চালাচ্ছেন। তাদের এই ভাষাগত রূপান্তর নিছক শব্দ বদল নয়—এ এক সামাজিক মুক্তি।
রোকসানার প্রতিবেশী শরীফা ১২ বছরের এক স্কুলছাত্রী। সে হেসে বলে, ‘আমি বিহারি ভাষা ঠিক বলতে পারি না। স্কুলে সবাই বাংলায় বলে, তাই আমিও বাংলায় কথা বলি।’ এই ছোট্ট বাক্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সময়ের প্রবল স্রোত। শরীফার প্রজন্ম আর উর্দু জানে না, জানে শুধু বাংলা। তার বাবা-মা উর্দু বলেন, কিন্তু মেয়ের কণ্ঠে শোনা যায় বাংলা উচ্চারণ। এই ভাষান্তরই আজকের বাস্তবতা, যেখানে ইতিহাস বদলে দিয়েছে ভাষা, আর ভাষা বদলে দিয়েছে পরিচয়।
এই প্রজন্মের মেয়েরা আর ‘বিহারি’ শব্দটাকে অপমান হিসেবে নেয় না; বরং তারা এটাকে ইতিহাসের অংশ মনে করে, যে ইতিহাসে আছে মায়ের সংগ্রাম, দাদির নীরবতা, আর ভাষার অজস্র ঘাত-প্রতিঘাত। এখন তারা বুঝতে শিখেছে, নিজের পরিচয় বদলানো মানে নিজের অস্তিত্ব হারানো নয়; বরং নতুন এক সংস্কৃতি তৈরি করা, যেখানে দুটি ভাষা, দুটি ইতিহাস মিশে যায় একই জীবনের ধারায়।
মনি বেগম, বয়স ৩৫। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন সব দিক দিয়ে মানিয়ে নিয়েছি। বাঙালিদের মতোই জীবনযাপন করি। কাজ করি, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাই, ঈদ-পূজায় একসঙ্গে আনন্দ করি।’ তার চোখে-মুখে প্রশান্তি, কিন্তু কথার আড়ালে আছে এক গভীর ইতিহাস—দারিদ্র্য, অস্বীকৃতি আর নিজের জায়গা পাওয়ার লড়াই। এই নারীরা শুধু ভাষা বদলাননি, বদলে ফেলেছেন নিজেদের অবস্থানও। তারা আজ রিকশা চালান, গার্মেন্টে কাজ করেন এবং বাজারে সবজি বিক্রি করেন। অনেকেই প্রথম প্রজন্মের কর্মজীবী নারী, যারা ঘরের বাধা ভেঙে বাইরে বেরিয়েছেন। তাদের জন্য এই সংগ্রাম শুধুই আর্থিক নয়, এটি আত্মপরিচয়ের লড়াই।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ রহিমা খাতুন। তিনি একসময় মিল-কারখানায় কাজ করতেন। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে দারিদ্র্য ছিল, পাকিস্তান-বাংলাদেশ আলাদা হলেও কষ্ট একই রইল। এখন একটু ভালো, মেয়েরা কাজ করে, স্কুলে যায়।’ তার গলায় গর্ব—‘যে মেয়েরা একসময় ঘরের ভেতর বন্দি ছিল, তারা আজ নিজের জীবন গড়তে শিখেছে।’
এই নারীদের গল্প শুধু ভাষার নয়, আত্মপরিচয়েরও। একসময় উর্দু ছিল তাদের গর্বের প্রতীক, এখন বাংলা তাদের স্বস্তির ভাষা। কিন্তু এই রূপান্তরের ভেতরেও আছে অব্যক্ত এক টানাপোড়েন—নিজের শিকড় হারানোর বেদনা, আর নতুন পরিচয় গড়ে তোলার গর্ব। বহু বছর পর আজ তারা বাংলা ভাষায় গল্প বলেন, বাংলা সংবাদ শোনেন, বাংলা সিনেমায় হাসেন; কিন্তু মনের ভেতরে এখনো কোথাও বাজে উর্দু লালনগীতির সুর, যা তাদের মনে করিয়ে দেয়—তারা একসময় অন্য ভাষার সন্তান ছিলেন।
খালিশপুরে বিকাল নামলে চায়ের দোকানের সামনে দেখা যায় জুলেখা বেগম চা ঢালছেন, পাশে রোকসানা গল্প করছেন বাংলায়। চায়ের ধোঁয়ার ভেতর দিয়ে মিশে যাচ্ছে অতীতের উর্দু উচ্চারণ আর বর্তমানের বাংলা শব্দ। সেই দৃশ্য যেন এক নীরব আত্মবিশ্বাসের বার্তা ছড়িয়ে দেয়—‘আমরা এখন বাংলাদেশি, আমাদের গল্পও এই দেশের।’
এখন থেকে উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে নোটিফিকেশন পাবেন অ্যাপেল ওয়াচ ব্যবহারকারীরা ওয়াচওএস-২৬ এর অপারেটিং সিস্টেমে নতুনভাবে যোগ করা হয়েছে হাইপারটেনশন নোটিফিকেশন ফিচার। যদি আপনার হার্ট ডেটা দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ রক্তচাপের ধারা দেখায়, আপনার ঘড়ি তখনই সতর্কবার্তা দেবে।
১ ঘণ্টা আগেগাজীপুরের কালিয়াকৈরে ছাত্রী ধর্ষণ এবং বুয়েট ছাত্র শ্রীশান্ত রায়ের মেয়েদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রী সংস্থা।
২ ঘণ্টা আগেঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) দুই দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (আইসিএসএইচএসডি-২০২৫) বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক কনফারেন্স শুরু হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেআজকের নারীরা যেমন ঘর-সংসার সামলাচ্ছেন, পাশাপাশি পেশাগত জীবনে সফলতার জন্য লড়ছেন প্রতিদিন। কর্মজীবী নারী হোন বা গৃহিণী—সবাই ব্যস্ত নিজের দায়িত্বের ঘূর্ণিতে। কিন্তু এই দায়িত্ব পালনের মধ্যেই যে শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, মেরুদণ্ড বা স্পাইন নীরবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা অনেকেই বুঝতে পারেন না।
৪ ঘণ্টা আগে