এহতেশামুল হক শাওন, খুলনা
দেশব্যাপী এক দফার আন্দোলন তখন তুঙ্গে। স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ বাহিনী তখনো বেপরোয়া গুলি বর্ষণ করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করে চলেছে। ২ আগস্ট খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে খুব কাছ থেকে পুলিশের ছোড়া গুলির ছররা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল শাফিলের বাম চোখের মণি ভেদ করে কর্নিয়ায় গিয়ে আটকে যায়।
চোখ বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন স্বজনরা। ছুটেছিলেন এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে। ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সাহায্যার্থে গঠিত মেডিকেল কমিটির কাছে ধর্না দিয়েছেন। দ্রুততম সময়ে অপারেশন করালে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতেন তিনি।
শাফিলের দুই একান্ত সুহৃদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং খ্যাতিমান অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শাফিল বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পান। রাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত অপারেশনের ব্যয়ও বহন করে। কিন্তু ততদিনে পার হয়ে গেছে চারটি মাস। ছররা গুলি চিরতরে কেড়ে নিয়েছে শাফিলের বাম চোখের আলো।
ডেডলাইন ২ আগস্ট
আন্দোলন তখন তুঙ্গে । ২ আগস্ট বহু শিক্ষার্থী জড়ো হয় শিববাড়ি মোড়ে। সেখান থেকে বায়তুন নুর মসজিদ। জুমার নামাজ শেষে একটি মিছিল রওনা হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে। সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পার হয়ে থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ দেখে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়। কারণ দুদিন আগে ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পণ্ড করেছিল পুলিশ।
শাফিলসহ সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ও কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যেতে। এরপর মিছিলটি গল্লামাড়ি ব্রিজ পার হয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গেলে পুলিশ মিছিলের ওপর গুলি ও টিয়ারসেল ছুড়তে শুরু করে। ছাত্র সমন্বয়করা শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ করে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সামনের কাতারে থেকে যে ২০/২৫ জন তরুণ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন শাফিল ছিলেন তাদের একজন।
ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে পেছাতে পেছাতে জিরো পয়েন্টে গিয়ে অবস্থান নেয়। ঘণ্টাব্যাপী চলতে থাকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ততক্ষণে পুলিশের গুলি-টিয়ারসেল ফুরিয়ে গেছে। আবারও নতুন করে সংগ্রহ করে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। পুলিশের একটি দল অস্ত্র তাক করে এগিয়ে আসছিল। পুলিশের অবস্থান জানতে একটু মাথা তুলতেই গর্জে ওঠে রাইফেল।
সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শাফিল বলেন, মনে হচ্ছিল চোখে লাগা ছররাটা চোখ চিরে মস্তিষ্কে আঘাত করেছে। কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাই টেনে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন পাশের নর্দমায়।
তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার, এরপর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়ার পর দুর্বিষহ প্রথম রাতটি কাটে খুলনায়, সেটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর বাংলাদেশ আই হসপিটাল খুলনা শাখা, সেখান থেকে ঢাকার ধানমন্ডি শাখা। ঢাকা সিএমএইচ, ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট- চোখ হারাতে বসা একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ছুটতে বাদ দেননি কোথাও শাফিলের বাবা-মা।
তার বাবা মাছ ব্যবসায়ী ইউনুস আলী খোকন, মা গৃহবধূ মাছুমা আক্তার। বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা গ্রামে। তবে অনেক বছর ধরে বসবাস সোনাডাঙ্গা থানার নবপল্লীতে।
শাফিল বলেন, আসলে কোথাও ট্রিটমেন্ট হচ্ছিল না। আমি নিজে গুগল সার্চ দিয়ে জানতে পারি সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে যেতে পারলে কাজ হবে। আর অপারেশনে ব্যয় হবে প্রায় ৬০ লাখ টাকা। বন্ধু-স্বজন, আমার ইউনিভার্সিটি থেকে এগিয়ে আসে।
কিন্তু তাতে বিদেশে যাওয়া-আসার টিকিটটা কেবল জোগাড় হয়। আব্বু গ্রামে জমি বিক্রি করেন। কিন্তু প্রশাসনের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসর ও প্রেতাত্মাদের বিরোধিতার কারণে সব উদ্যোগ পিছিয়ে যেতে থাকে। আমার কাছে তিনটি হসপিটালের রেফারেল লেটার ছিল। যাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অপারেশনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা বলতে চাচ্ছিলেন, অপারেশন হলেও আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরবে না। শুধু শুধু রাষ্ট্রের অনেক টাকা নষ্ট হবে। এ টাকা দিয়ে আন্দোলনে আহত অনেকজনকে সহায়তা করা যাবে।
ততদিনে সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও অনলাইন অ্যাকিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ডিসেম্বরের ৯ তারিখ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলভার্নিয়া হসপিটালে ডা. স্টিফেন থিওর তত্ত্বাবধানে শাফিলের চোখে অপারেশন হয়।
অপারেশন শেষে তৈরি হয় নতুন বিড়ম্বনা। চিকিৎসা কমিটি সাহায্য দিলেও এত টাকা দিতে অপারগতা জানায়। এরই মধ্যে শাফিল ও তার মায়ের ভিসার মেয়াদ শেষ। এ সময় উপদেষ্টা নাহিদের হস্তক্ষেপে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের বিশেষ উদ্যোগে তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেন। আর রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অর্থ প্রেরণের পর হসপিটাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ২৮ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন শাফিল।
শাফিলের শরীরে এখনো তিনটি গুলি আছে। সিটি স্ক্যানের তথ্যমতে, শাফিলের মাথার পেছনের অংশে, কপালের বাঁ পাশে ও বাঁ চোখের ভেতরে গুলি আছে। তিন মাস পরে গিয়ে বাম চোখ তুলে সেখানে কৃত্রিম চোখ লাগিয়ে আসতে হবে।
খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল, খুলনা পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন শাফিল। এখন রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। চোখ বন্ধ করতে ভয় হয়, যদি খুলতে গিয়ে আর কোনো চোখেই আলো না দেখেন!
চোখে গুলি লাগার পরে শাফিল তার ফেসবুকে লিখেছিলেন- ফর এ হ্যাপি নেশন/ আই হ্যাভ লস্ট মাই ভিশন। তার সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। চিরতরে এক চোখের দৃষ্টি হারালেন তিনি।
ফ্যাসিবাদ পালিয়েছে। কিন্তু তাদের দোসররা রয়ে গেছে প্রশাসন আর সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আর রয়েছে আধিপত্যবাদী অপশক্তি ভারত। শাফিলের ভাষায় ‘একটা চোখ দেশের জন্য উৎসর্গ করেছি। এবার জীবনটা নিয়ে অপেক্ষা করছি। আমার দেশের এক বিন্দু ধুলিকণার দিকে কাউকে চোখ তুলে তাকাতে দেব না।’
দেশব্যাপী এক দফার আন্দোলন তখন তুঙ্গে। স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ বাহিনী তখনো বেপরোয়া গুলি বর্ষণ করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করে চলেছে। ২ আগস্ট খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে খুব কাছ থেকে পুলিশের ছোড়া গুলির ছররা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল শাফিলের বাম চোখের মণি ভেদ করে কর্নিয়ায় গিয়ে আটকে যায়।
চোখ বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন স্বজনরা। ছুটেছিলেন এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে। ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সাহায্যার্থে গঠিত মেডিকেল কমিটির কাছে ধর্না দিয়েছেন। দ্রুততম সময়ে অপারেশন করালে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতেন তিনি।
শাফিলের দুই একান্ত সুহৃদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং খ্যাতিমান অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শাফিল বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পান। রাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত অপারেশনের ব্যয়ও বহন করে। কিন্তু ততদিনে পার হয়ে গেছে চারটি মাস। ছররা গুলি চিরতরে কেড়ে নিয়েছে শাফিলের বাম চোখের আলো।
ডেডলাইন ২ আগস্ট
আন্দোলন তখন তুঙ্গে । ২ আগস্ট বহু শিক্ষার্থী জড়ো হয় শিববাড়ি মোড়ে। সেখান থেকে বায়তুন নুর মসজিদ। জুমার নামাজ শেষে একটি মিছিল রওনা হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে। সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পার হয়ে থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ দেখে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়। কারণ দুদিন আগে ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পণ্ড করেছিল পুলিশ।
শাফিলসহ সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ও কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যেতে। এরপর মিছিলটি গল্লামাড়ি ব্রিজ পার হয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গেলে পুলিশ মিছিলের ওপর গুলি ও টিয়ারসেল ছুড়তে শুরু করে। ছাত্র সমন্বয়করা শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ করে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সামনের কাতারে থেকে যে ২০/২৫ জন তরুণ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন শাফিল ছিলেন তাদের একজন।
ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে পেছাতে পেছাতে জিরো পয়েন্টে গিয়ে অবস্থান নেয়। ঘণ্টাব্যাপী চলতে থাকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ততক্ষণে পুলিশের গুলি-টিয়ারসেল ফুরিয়ে গেছে। আবারও নতুন করে সংগ্রহ করে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। পুলিশের একটি দল অস্ত্র তাক করে এগিয়ে আসছিল। পুলিশের অবস্থান জানতে একটু মাথা তুলতেই গর্জে ওঠে রাইফেল।
সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শাফিল বলেন, মনে হচ্ছিল চোখে লাগা ছররাটা চোখ চিরে মস্তিষ্কে আঘাত করেছে। কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাই টেনে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন পাশের নর্দমায়।
তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার, এরপর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়ার পর দুর্বিষহ প্রথম রাতটি কাটে খুলনায়, সেটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর বাংলাদেশ আই হসপিটাল খুলনা শাখা, সেখান থেকে ঢাকার ধানমন্ডি শাখা। ঢাকা সিএমএইচ, ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট- চোখ হারাতে বসা একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ছুটতে বাদ দেননি কোথাও শাফিলের বাবা-মা।
তার বাবা মাছ ব্যবসায়ী ইউনুস আলী খোকন, মা গৃহবধূ মাছুমা আক্তার। বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা গ্রামে। তবে অনেক বছর ধরে বসবাস সোনাডাঙ্গা থানার নবপল্লীতে।
শাফিল বলেন, আসলে কোথাও ট্রিটমেন্ট হচ্ছিল না। আমি নিজে গুগল সার্চ দিয়ে জানতে পারি সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে যেতে পারলে কাজ হবে। আর অপারেশনে ব্যয় হবে প্রায় ৬০ লাখ টাকা। বন্ধু-স্বজন, আমার ইউনিভার্সিটি থেকে এগিয়ে আসে।
কিন্তু তাতে বিদেশে যাওয়া-আসার টিকিটটা কেবল জোগাড় হয়। আব্বু গ্রামে জমি বিক্রি করেন। কিন্তু প্রশাসনের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসর ও প্রেতাত্মাদের বিরোধিতার কারণে সব উদ্যোগ পিছিয়ে যেতে থাকে। আমার কাছে তিনটি হসপিটালের রেফারেল লেটার ছিল। যাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অপারেশনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা বলতে চাচ্ছিলেন, অপারেশন হলেও আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরবে না। শুধু শুধু রাষ্ট্রের অনেক টাকা নষ্ট হবে। এ টাকা দিয়ে আন্দোলনে আহত অনেকজনকে সহায়তা করা যাবে।
ততদিনে সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও অনলাইন অ্যাকিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ডিসেম্বরের ৯ তারিখ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলভার্নিয়া হসপিটালে ডা. স্টিফেন থিওর তত্ত্বাবধানে শাফিলের চোখে অপারেশন হয়।
অপারেশন শেষে তৈরি হয় নতুন বিড়ম্বনা। চিকিৎসা কমিটি সাহায্য দিলেও এত টাকা দিতে অপারগতা জানায়। এরই মধ্যে শাফিল ও তার মায়ের ভিসার মেয়াদ শেষ। এ সময় উপদেষ্টা নাহিদের হস্তক্ষেপে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের বিশেষ উদ্যোগে তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেন। আর রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অর্থ প্রেরণের পর হসপিটাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ২৮ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন শাফিল।
শাফিলের শরীরে এখনো তিনটি গুলি আছে। সিটি স্ক্যানের তথ্যমতে, শাফিলের মাথার পেছনের অংশে, কপালের বাঁ পাশে ও বাঁ চোখের ভেতরে গুলি আছে। তিন মাস পরে গিয়ে বাম চোখ তুলে সেখানে কৃত্রিম চোখ লাগিয়ে আসতে হবে।
খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল, খুলনা পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন শাফিল। এখন রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। চোখ বন্ধ করতে ভয় হয়, যদি খুলতে গিয়ে আর কোনো চোখেই আলো না দেখেন!
চোখে গুলি লাগার পরে শাফিল তার ফেসবুকে লিখেছিলেন- ফর এ হ্যাপি নেশন/ আই হ্যাভ লস্ট মাই ভিশন। তার সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। চিরতরে এক চোখের দৃষ্টি হারালেন তিনি।
ফ্যাসিবাদ পালিয়েছে। কিন্তু তাদের দোসররা রয়ে গেছে প্রশাসন আর সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আর রয়েছে আধিপত্যবাদী অপশক্তি ভারত। শাফিলের ভাষায় ‘একটা চোখ দেশের জন্য উৎসর্গ করেছি। এবার জীবনটা নিয়ে অপেক্ষা করছি। আমার দেশের এক বিন্দু ধুলিকণার দিকে কাউকে চোখ তুলে তাকাতে দেব না।’
জুলাই আন্দোলনে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক যোদ্ধাকে বাদী দেখিয়ে অভিনব কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মৌলভীবাজার শহরে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন জসিমও। চৌমুহনায় মিছিলকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও পিছু হটেনি সাহস নিয়ে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লক্ষ্য
৩১ আগস্ট ২০২৫চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন যোদ্ধা তরুণ আলেম মাওলানা শফিকুর রহমান। আন্দোলন ঘিরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় পতিত আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তার বাগবিতন্ডার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
২৯ আগস্ট ২০২৫তাইমুরের বাবা পুলিশের এসআই মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার’। আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে দুইশ গুলি মারা হলো।
১৯ আগস্ট ২০২৫