আবু সুফিয়ান
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশব্যাপী সংঘাত-সহিংসতার প্রতিবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই রাতে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষণা অনুযায়ী ৩১ জুলাই দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে দুপুর সাড়ে ১২টায় একযোগে এ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়।
সেদিন টেলিগ্রাম অ্যাপে প্রচারিত বার্তায় জানানো হয়, ‘সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম-খুনের প্রতিবাদ এবং জাতিসংঘের তদন্তে নিরপেক্ষ বিচারের দাবিতে’ এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী, পেশাজীবী, শ্রমজীবীসহ সব নাগরিককে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এর অংশ হিসেবে সেদিন রাতেই সারা দেশে শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা মুখ ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তুলে সামাজিকমাধ্যমে প্রচার চালান। সরকারি শোক দিবসের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় এই লাল কাপড় হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদের ভাষা।
ফেসবুকে বহু শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, লেখক ও শিক্ষার্থী লাল রঙের ফ্রেমে নিজেদের প্রোফাইল ছবি সাজান। সরকারপন্থি অনেকেই এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কালো ফ্রেমে ছবি দেন। সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে, যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২৯ জুলাইয়ের মন্ত্রিসভা বৈঠকে। সরকারি কর্মচারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে কর্মস্থলে যোগ দেন। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোয় অনুষ্ঠিত হয় প্রার্থনা, দোয়া ও মিলাদ।
অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের কর্মসূচি পালন করেন। রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন। ঢাকার গুলিস্তানে প্রতিবাদী গানের মিছিল বের করলে সেখানে পুলিশ বাধা দেয়, ঘটনার একপর্যায়ে বাগ্বিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। একই দিনে পুরানা পল্টনে বাম গণতান্ত্রিক জোট সরকারের পদত্যাগ দাবিতে সমাবেশ করে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জানান, জননিরাপত্তা ও ঝুঁকি বিবেচনায় ধাপে ধাপে স্কুল-কলেজ খোলা হবে। তিনি জানান, ইন্টারনেট চালু থাকায় অনলাইন ক্লাস শুরুর বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ’ পাওয়ার কথা জানিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা বলেছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল ‘দেখামাত্র গুলির’ নির্দেশ ও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এক খোলাচিঠিতে সহিংস দমন-পীড়নের নিন্দা জানান এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তোলেন।
তখন শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে জানান, তিনি জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত চান।
আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের মুক্তির দাবিতে অভিভাবকরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মৌন অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। নারী সংগঠনের ব্যানারে দাঁড়াতে চাইলেও তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
সরকার এ আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরে নিষিদ্ধ ঘোষণার ইঙ্গিত দেয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একে ‘গণহত্যা আড়াল করতে কৌশল’ বলে অভিহিত করেন।
প্রতিটি ঘটনাপ্রবাহ ঘিরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল এক প্রতীক, লাল কাপড়। এটি শুধু শোকের নয়; এটি প্রতিরোধ, প্রতিবাদ ও ন্যায়বিচারের এক অভিন্ন প্রতিচ্ছবি। ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের মাইলফলক।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশব্যাপী সংঘাত-সহিংসতার প্রতিবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই রাতে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষণা অনুযায়ী ৩১ জুলাই দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে দুপুর সাড়ে ১২টায় একযোগে এ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়।
সেদিন টেলিগ্রাম অ্যাপে প্রচারিত বার্তায় জানানো হয়, ‘সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম-খুনের প্রতিবাদ এবং জাতিসংঘের তদন্তে নিরপেক্ষ বিচারের দাবিতে’ এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী, পেশাজীবী, শ্রমজীবীসহ সব নাগরিককে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এর অংশ হিসেবে সেদিন রাতেই সারা দেশে শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা মুখ ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তুলে সামাজিকমাধ্যমে প্রচার চালান। সরকারি শোক দিবসের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় এই লাল কাপড় হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদের ভাষা।
ফেসবুকে বহু শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, লেখক ও শিক্ষার্থী লাল রঙের ফ্রেমে নিজেদের প্রোফাইল ছবি সাজান। সরকারপন্থি অনেকেই এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কালো ফ্রেমে ছবি দেন। সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে, যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২৯ জুলাইয়ের মন্ত্রিসভা বৈঠকে। সরকারি কর্মচারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে কর্মস্থলে যোগ দেন। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোয় অনুষ্ঠিত হয় প্রার্থনা, দোয়া ও মিলাদ।
অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের কর্মসূচি পালন করেন। রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন। ঢাকার গুলিস্তানে প্রতিবাদী গানের মিছিল বের করলে সেখানে পুলিশ বাধা দেয়, ঘটনার একপর্যায়ে বাগ্বিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। একই দিনে পুরানা পল্টনে বাম গণতান্ত্রিক জোট সরকারের পদত্যাগ দাবিতে সমাবেশ করে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জানান, জননিরাপত্তা ও ঝুঁকি বিবেচনায় ধাপে ধাপে স্কুল-কলেজ খোলা হবে। তিনি জানান, ইন্টারনেট চালু থাকায় অনলাইন ক্লাস শুরুর বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ’ পাওয়ার কথা জানিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা বলেছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল ‘দেখামাত্র গুলির’ নির্দেশ ও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এক খোলাচিঠিতে সহিংস দমন-পীড়নের নিন্দা জানান এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তোলেন।
তখন শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে জানান, তিনি জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত চান।
আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের মুক্তির দাবিতে অভিভাবকরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মৌন অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। নারী সংগঠনের ব্যানারে দাঁড়াতে চাইলেও তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
সরকার এ আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরে নিষিদ্ধ ঘোষণার ইঙ্গিত দেয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একে ‘গণহত্যা আড়াল করতে কৌশল’ বলে অভিহিত করেন।
প্রতিটি ঘটনাপ্রবাহ ঘিরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল এক প্রতীক, লাল কাপড়। এটি শুধু শোকের নয়; এটি প্রতিরোধ, প্রতিবাদ ও ন্যায়বিচারের এক অভিন্ন প্রতিচ্ছবি। ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের মাইলফলক।
জুলাই আন্দোলনে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক যোদ্ধাকে বাদী দেখিয়ে অভিনব কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মৌলভীবাজার শহরে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন জসিমও। চৌমুহনায় মিছিলকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও পিছু হটেনি সাহস নিয়ে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লক্ষ্য
৩১ আগস্ট ২০২৫চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন যোদ্ধা তরুণ আলেম মাওলানা শফিকুর রহমান। আন্দোলন ঘিরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় পতিত আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তার বাগবিতন্ডার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
২৯ আগস্ট ২০২৫তাইমুরের বাবা পুলিশের এসআই মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার’। আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে দুইশ গুলি মারা হলো।
১৯ আগস্ট ২০২৫