আবু সুফিয়ান
২৮ জুলাই, ২০২৪। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন শহরে সরকারের সহিংসতা, গণহত্যা এবং মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দাবি জোরদার হতে থাকে। সরকার ও পুলিশের দাবি, সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ গ্রেপ্তারকৃতই ছিলেন নিরীহ শিক্ষার্থী, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছিল না। ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে শত শত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়, হত্যা করা হয় কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে।
আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে সরকার ১৭ জুলাই রাত থেকে দেশের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় এবং ২২ জুলাই পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ রাখা হয়। ১০ দিন পর ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব এবং হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ রাখা হয়।
ডিবি অফিস থেকে ছয় সমন্বয়কের ভিডিওবার্তা
২৮ জুলাই রাত ৯টায় আন্দোলনের ছয় কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের একটি ভিডিওবার্তা ছড়িয়ে দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ভিডিওতে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন । তাতে বলা হয়, সরকার কোটার যৌক্তিক সংস্কার মেনে নিয়েছে। তাই আন্দোলন প্রত্যাহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এতে স্বাক্ষর করেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং নুসরাত তাবাসসুম।
তবে ওই ঘোষণার পূর্বাপর বাস্তবতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে। ভিডিও প্রচারের আগে তৎকালীন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে সমন্বয়কদের ডিবি অফিসে বসে খেতে দেখা যায়। তিনি বলেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।
মূলত শীর্ষ সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে এমন বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে সেই পরিস্থিতিতেও শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের ভয় বা হুমকি তাদের লক্ষ্য থেকে সরাতে পারবে না বলে ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, সরকার তাদের আন্দোলনকে নাশকতা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।
গুম-গ্রেপ্তার ও পরিবারের উৎকণ্ঠা
২০২৪ সালের ২৬ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে ধাপে ধাপে সাতজন কেন্দ্রীয় নেতাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। কাউকে বাসা থেকে এবং কাউকে হাসপাতাল থেকে তুলে নেওয়া হয়। ডিবির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
নাহিদ ইসলামের মা মমতাজ নাহার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে মিন্টো রোডে গিয়ে ব্যর্থ হন। সাংবাদিকদের সেদিন তিনি বলেন, ‘সন্তান মা-বাবার কাছেই নিরাপদ। ডিবি অফিসে কীসের নিরাপত্তা?’
তিনি ছেলের শারীরিক নির্যাতনের আশঙ্কা প্রকাশ করেন। ওই রাতেই আন্দোলনকারীরা দেশব্যাপী নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন । তারা জানান, ৯ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
সরকারি তথ্যমতে, আন্দোলন ঘিরে ২৮ জুলাই পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছিল ১৪৭ জন। তবে বেসরকারি সূত্রমতে তখন এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি ছিল। নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি সেদিন বলেন, ‘আমি আপনাদের ব্যথা বুঝি। যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’
তিনি জানান, আন্দোলনে ছদ্মবেশে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং তারা বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে।
২৮ জুলাইয়ের দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতির প্রতিবাদ
২৮ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদী গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন চলে। ঢাকার বুয়েট, শাবিপ্রবি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহু স্থানে শিক্ষার্থীরা দেয়ালে লেখেন, ‘সোনার বাংলা আজ মৃত্যুপুরী কেন?’, ‘আমার ভাইদের মারলি কেন?’, ‘হামার বেটাক মারলু ক্যান?’, ‘৫২ দেখিনি, ২৪ দেখেছি।’
শাবিপ্রবিতে গুলির মুখে শহীদ আবু সাঈদের বুক পেতে দাঁড়ানো ছবি দেয়ালে আঁকা হয়। তবে ঢাকায় পুলিশ রঙতুলি জব্দ করে দেয়াল লিখন বন্ধ করে দেয়।
২৮ জুলাই, ২০২৪। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন শহরে সরকারের সহিংসতা, গণহত্যা এবং মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দাবি জোরদার হতে থাকে। সরকার ও পুলিশের দাবি, সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ গ্রেপ্তারকৃতই ছিলেন নিরীহ শিক্ষার্থী, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছিল না। ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে শত শত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়, হত্যা করা হয় কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে।
আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে সরকার ১৭ জুলাই রাত থেকে দেশের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় এবং ২২ জুলাই পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ রাখা হয়। ১০ দিন পর ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব এবং হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ রাখা হয়।
ডিবি অফিস থেকে ছয় সমন্বয়কের ভিডিওবার্তা
২৮ জুলাই রাত ৯টায় আন্দোলনের ছয় কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের একটি ভিডিওবার্তা ছড়িয়ে দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ভিডিওতে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন । তাতে বলা হয়, সরকার কোটার যৌক্তিক সংস্কার মেনে নিয়েছে। তাই আন্দোলন প্রত্যাহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এতে স্বাক্ষর করেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং নুসরাত তাবাসসুম।
তবে ওই ঘোষণার পূর্বাপর বাস্তবতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে। ভিডিও প্রচারের আগে তৎকালীন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে সমন্বয়কদের ডিবি অফিসে বসে খেতে দেখা যায়। তিনি বলেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।
মূলত শীর্ষ সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে এমন বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে সেই পরিস্থিতিতেও শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের ভয় বা হুমকি তাদের লক্ষ্য থেকে সরাতে পারবে না বলে ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, সরকার তাদের আন্দোলনকে নাশকতা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।
গুম-গ্রেপ্তার ও পরিবারের উৎকণ্ঠা
২০২৪ সালের ২৬ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে ধাপে ধাপে সাতজন কেন্দ্রীয় নেতাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। কাউকে বাসা থেকে এবং কাউকে হাসপাতাল থেকে তুলে নেওয়া হয়। ডিবির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
নাহিদ ইসলামের মা মমতাজ নাহার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে মিন্টো রোডে গিয়ে ব্যর্থ হন। সাংবাদিকদের সেদিন তিনি বলেন, ‘সন্তান মা-বাবার কাছেই নিরাপদ। ডিবি অফিসে কীসের নিরাপত্তা?’
তিনি ছেলের শারীরিক নির্যাতনের আশঙ্কা প্রকাশ করেন। ওই রাতেই আন্দোলনকারীরা দেশব্যাপী নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন । তারা জানান, ৯ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
সরকারি তথ্যমতে, আন্দোলন ঘিরে ২৮ জুলাই পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছিল ১৪৭ জন। তবে বেসরকারি সূত্রমতে তখন এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি ছিল। নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি সেদিন বলেন, ‘আমি আপনাদের ব্যথা বুঝি। যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’
তিনি জানান, আন্দোলনে ছদ্মবেশে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং তারা বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে।
২৮ জুলাইয়ের দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতির প্রতিবাদ
২৮ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদী গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন চলে। ঢাকার বুয়েট, শাবিপ্রবি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহু স্থানে শিক্ষার্থীরা দেয়ালে লেখেন, ‘সোনার বাংলা আজ মৃত্যুপুরী কেন?’, ‘আমার ভাইদের মারলি কেন?’, ‘হামার বেটাক মারলু ক্যান?’, ‘৫২ দেখিনি, ২৪ দেখেছি।’
শাবিপ্রবিতে গুলির মুখে শহীদ আবু সাঈদের বুক পেতে দাঁড়ানো ছবি দেয়ালে আঁকা হয়। তবে ঢাকায় পুলিশ রঙতুলি জব্দ করে দেয়াল লিখন বন্ধ করে দেয়।
জুলাই আন্দোলনে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক যোদ্ধাকে বাদী দেখিয়ে অভিনব কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মৌলভীবাজার শহরে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন জসিমও। চৌমুহনায় মিছিলকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও পিছু হটেনি সাহস নিয়ে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লক্ষ্য
৩১ আগস্ট ২০২৫চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন যোদ্ধা তরুণ আলেম মাওলানা শফিকুর রহমান। আন্দোলন ঘিরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় পতিত আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তার বাগবিতন্ডার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
২৯ আগস্ট ২০২৫তাইমুরের বাবা পুলিশের এসআই মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার’। আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে দুইশ গুলি মারা হলো।
১৯ আগস্ট ২০২৫