সিটি মেয়রের শপথ পড়াবেন কে?

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ১৮: ৪৩

সিটি কর্পোরেশনগুলোর মেয়র বা কাউন্সিলের শপথ কে পড়াবেন, আইনে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। আইনে বলা রয়েছে, সরকারের মনোনীত ব্যক্তির সামনে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করবেন। এক্ষেত্রে যে ব্যক্তিকে মনোনীত করবেন, তার কাছেই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলর শপথ নেবেন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ এর ৭। (১) ধারায় সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। এতে বলা হয়েছে,‘মেয়র বা কোন কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত ব্যক্তি তাহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় তফসিলে বর্ণিত ছকে সরকার কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তির সম্মুখে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং শপথ বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবেন।’

মেয়র বা কাউন্সিলরদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার তিন দিনের মধ্যে সরকার মনোনীত কর্তৃপক্ষ মেয়র ও সকল কাউন্সিলরকে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদানের ব্যবস্থা করবেন বলে আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহীদ খান আমার দেশকে বলেন, আইনে সরকার কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার যে ব্যক্তিকে মনোনীত করবেন, তিনিই শপথ পড়াতে পারবেন। চাইলে সরকারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেই পড়াতে পারেন, বা অন্য কাউকে দিয়ে পড়ানো যাবে। এক্ষেত্রে উপদেষ্টা বলি বা সচিব বলি, যে কেউই শপথ পড়াতে পারবেন। তবে, আইনে না থাকলেও আমরা রীতি অনুযায়ী দেখছি বড় সিটি করপোরেশনগুলোর মেয়রের শপথ সরকারের প্রধান নির্বাহী ব্যক্তি পড়িয়েছেন। পৌরসভার মেয়রদের বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক পড়িয়েছেন। এছাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের জেলা প্রশাসক এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে শপথ পড়াতে দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইনে নির্ধারিত না থাকলেও পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময়কালে শেখ হাসিনা নিজেই সিটি করপোরেশনের মেয়রদের শপথ বাক্য পাঠ করাতেন। আর কাউন্সিলদের শপথ পড়াতেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। শেখ হাসিনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ছাড়াও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের শপথ পড়িয়েছেন।

এদিকে শেখ হাসিনার পতনের পর ড.মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের শপথ পড়ানোর বিষয়টি এসেছিল। স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মরহুম এ এফ হাসান আরিফ তার শপথ পড়িয়েছেন।

দেশের সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। সিটি করপোরেশনের মেয়রদের শপথের আয়োজন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিগত সময়ে স্থানীয় সরকারের সচিবকে এই শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে দেখা গেছে।

জনপ্রতিনিধিদের অতীতের শপথের ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের চেয়ে প্রটোকল অনুযায়ী উপরের কর্মকর্তারাই শপথ পড়ান।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্ট অনুযায়ী সিটি করপোরেশনগুলোর মেয়রের পদ মর্যাদা ১৮তম। অপরদিকে সচিবের পদ মর্যাদা ১৬তম। ফলে সরকার চাইলে কোন সচিবকে মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দায়িত্বভার অর্পণ করতে পারে।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতিসহ সাংবিধানিক পদগুলোর ক্ষেত্রে কোন পদের শপথ কে পড়াবেন, সেটা সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা আছে। এক্ষেত্রে কোন কোন পদে বিকল্পও রয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত