আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

আমি আজ থেকে হাদির কালচারাল সেন্টারের দায়িত্ব নিলাম: মাহমুদুর রহমান

প্রতিনিধি, ঢাবি
আমি আজ থেকে হাদির কালচারাল সেন্টারের দায়িত্ব নিলাম: মাহমুদুর রহমান

হাদি শুধু একজন ব্যক্তি নয়, তিনি জুলাই বিপ্লবের প্রতিচ্ছবি- এই মন্তব্য করে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা হাদির প্রতিষ্ঠিত কালচারাল সেন্টারের দায়িত্ব গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

তিনি বলেন, হাদির ওপর হামলা করেও জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে থামিয়ে দেওয়া যাবে না।

বিজ্ঞাপন

শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত এক সমাবেশে আবেগঘন কণ্ঠে তিনি এ ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি ১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ আয়োজন এবং সেখান থেকেই আগামী দিনের আন্দোলনের নতুন অধ্যায় সূচনার কথাও জানান।

সমাবেশে বক্তব্যের শুরুতে ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতেই আমি জনসমক্ষে আন্দোলনে শামিল হয়েছি।

হাদির সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরে আসার সময় হাদিই আমাকে রিসিভ করতে বিমানবন্দরে চলে যায়। মাত্র পাঁচ মাস আগে আমরা একসঙ্গে আমার মায়ের দাফন সম্পন্ন করেছি। আজ সেই হাদি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে।”

তিনি বলেন, “ফজরের নামাজে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছি- আমার সবকিছুর বিনিময়ে হলেও হাদিকে ফিরিয়ে দিন। কারণ আমাদের আর দেশকে দেওয়ার কিছু নেই, কিন্তু হাদির দেওয়ার এখনও অনেক কিছু বাকি।”

ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, বহু ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও জুলাই বিপ্লব পরাজিত হয়নি- হাদি তারই প্রমাণ।

যারা জুলাইকে ‘বিপ্লব’ বলতে অস্বীকার করে, তারা মূলত নিজেদের রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার কাছে জুলাই স্পষ্টভাবেই একটি বিপ্লব, এবং সেই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করেই আমাদের এগোতে হবে।

তিনি তথাকথিত সুশীল সমাজের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তারা কখনোই ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের পক্ষে দাঁড়ায়নি। নতুন প্রজন্মকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই লড়াই তরুণদেরই এগিয়ে নিতে হবে।

বক্তব্যের একপর্যায়ে ড. মাহমুদুর রহমান হাদির কালচারাল উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, “এই সময়ে যখন তরুণরা বই পড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তখন হাদি মানুষের কাছ থেকে বই সংগ্রহ করে একটি কালচারাল সেন্টার গড়ে তুলেছে- কালচারাল ফ্যাসিজম মোকাবেলার জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রস্তুত করার জন্য।”

তিনি ঘোষণা দিয়ে বলেন, “আজ থেকে আমি হাদির সেই কালচারাল সেন্টারের দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। হাদি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার অসমাপ্ত কাজ আমি চালিয়ে নিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।”

সমাবেশে ড. মাহমুদুর রহমান জানান, ১৫ ডিসেম্বর শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকেই আগামী দিনের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, “১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের আগের দিন আমরা ঘোষণা করবো- এই বিজয় দিল্লির কাছ থেকে পাওয়া নয়, এবং এই বিজয় দিল্লির কাছে সমর্পণও করা হবে না।”

তিনি বলেন, দেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে, যা প্রতিহত করতে সর্বদলীয় ঐক্য অপরিহার্য।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দিতে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

হাদির ওপর হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হামলার আগেই একাধিকবার হুমকির তথ্য সরকারকে জানানো হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। হামলার পরেও অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান কোনো অভিযান নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এ সময় সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, এই সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে ১৫ ডিসেম্বর শহীদ মিনার থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “একজন হাদিকে গুলি করে আমাদের লড়াই থামানো যাবে না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের আবার রুখে দাঁড়াতে হবে। জুলাই বিল্পবকে পূর্ণ করতে হবে।"

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন