স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, কোনো কাজ করতে হলে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি (পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট) দরকার। কোভিড মহামারি শুরু হলে পাশের দেশ ভারত তাদের নিজস্ব সক্ষমতা দিয়ে মোকাবিলা করেছে। কিন্তু আমরা টাকা দিয়েও শুরুতে ভ্যাকসিন পাইনি। আমাদের গলদগুলো কোথায় তা বের করতে হবে। শতভাগ দুর্নীতি ও স্বচ্ছতা না থাকলে সফলতা পাওয়া কঠিন। আমাদের শস্যের মধ্যেই ভেজাল। আর স্বাস্থ্যে তো শুধু সমস্যা আর সমস্যা। ৫৪ বছরের জঞ্জাল এক থেকে দেড় বছরে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়।
শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যে নিয়ে যেকোনো গবেষণার আগে মানুষের জীবনে তার প্রভাব কতটা সেটি দেখতে হবে। গবেষণা কোন উদ্দেশ্যে হচ্ছে সেটি নির্দিষ্ট করতে হবে। যেহেতু স্বাস্থ্য একটা বড় জায়গা, তাই প্রায়োরিটি ঠিক করতে পারলে আমরা এগোতে পারব। যে গবেষণার কাজটা দেয়া হচ্ছে, মানুষের জীবনে তার প্রভাব কতটুকু সেটি দেখতে হবে।'
বিএমআরসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তারের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, গবেষণাগুলো যেন মানুষ, পশুপাখি ও প্রকৃতির ভারসাম্য নিয়ে হয়। আমরা যে গবেষণাই করিনা কেন, আমাদের জীবনে কতটা উপকারে আসছে, মানুষের ওপর কী ভূমিকা রাখছে তা ভাবতে হবে। প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকতে হবে। নারী ও স্বাস্থ্যকে আলাদা করে দেখতে হবে, তাদেরকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিএমআরসির চেয়ারম্যান সায়েবা আক্তার বলেন, দখল হওয়া জায়গা উদ্ধারে আমরা নানা তৎপরতা চালাচ্ছি। যে যেভাবে পারেন আমাদের সহযোগিতা করুন। বিএমআরসি সমস্ত কাজে সবাইকে সবার জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের গবেষণার বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
এ সময় বিশেষ অতিথি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, আমরা যেই চিকিৎসাই দেই তা পশ্চিমা বিশ্বের তথ্য ও গবেষণা ব্যবহার করে। কিন্তু নিজেদের কোনো গবেষণা তেমন নেই। বাংলাদেশের মানুষের গড় ওজন ৫৫ কেজি হলেও আমেরিকার মানুষের তা ৮০ কেজি। ৮০ কেজি মানুষের ওজনের ওপর ভিত্তি করে মানুষকে নিয়ে করা গবেষণালব্ধ ফল দিয়ে আমরা চিকিৎসা নিচ্ছি। এটি আমাদের জনগোষ্ঠীর জন্য কতটুকু যথোপযুক্ত তা নিয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অষ্টম বৃহৎ জনসংখ্যার দেশ হলেও অনেক ছোট দেশের চেয়ে গবেষণায় পিছিয়ে বাংলাদেশ। তবে বিশ্বাস করি যেসব বাধা ও চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব এবং আগামীতে গবেষণায় বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

