Ad T1

ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন করা হবে: আইন উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৫, ১৮: ২১
আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ১৯: ৪১

ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ, ২০২৫ (দ্বিতীয় খসড়া) এর ওপর একটি মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের পরে যারা আসবে তারা এটি করবে কিনা আমি নিশ্চিত নই, তাই এটি আমরা করে যাব। ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে শীঘ্রই প্রধান বিচারপতিকে সাথে নিয়ে আমি দক্ষিন আফ্রিকা যাব।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ফরহাদ (ফরহাদ মজহার) ভাই বারবার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের কথা বলেছেন। ট্রুথ জাস্টিস কমিশন অথবা ট্রুথ রিকনসিলিয়েশন কমিশনের খুব দরকার আছে। এটা সম্ভবত আমাদের দেশে ১৯৭২ সাল থেকে থাকলেই ভালো হতো। আমরা সবকিছুই খুব প্রফেশনালভাবে নিষ্পত্তি করতে চাই।’

মায়ের ডাকের সংগঠক সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলির সঞ্চালনায় আইন উপদেস্টা বলেন, অনন্তকাল হানাহানি করে এ জাতির মুক্তি হবে না মন্তব্য করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। যারা গণহত্যার মতো, মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো ঘৃণ্য অপরাধ করেছে, তারা খুব বেশিসংখ্যক না। তাদের উপযুক্ত, যথেষ্ট পরিমাণ শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই আমাদের করতে হবে। তারা যে এ জাতির মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন, সেটাকে এস্টাবলিশ করার জন্য হলেও আমাদের ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন করতে হবে।’

অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন করে যাব, যাতে বড় বড় গণহত্যাকারী, মানবতাবিরোধী অপরাধকারী, তারা যে আসলে বিচ্ছিন্ন এই সমাজে, সেটাও এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এস্টাবলিস্ট হবে।’

আসিফ নজরুল আরও বলেন, সংস্কার কার্যক্রমের কথা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বলে থাকেন। সেটারই অব্যাহত সংস্কার কার্যক্রমের একটা পার্ট হিসেবে আমরা এটাকে দেখছি। এখানে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কথা এসেছে, তারমধ্যে প্রিয়ামবেল-এর কথা বলেছেন, অবশ্যই আমরা সেটা করব। কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার। আজকে বেশিরভাগ আলোচকরা পৃথক আইন ও কমিশনের কথা বলেছেন, সেটা প্রয়োজন আছে। আর আইসিটি ও কনভেনশনাল কোর্ট, এই দুইটা কোর্টের মধ্যে যেসব সাংর্ঘষিক বিষয় আছে, সেগুলো আমরা পরিষ্কার করার চেষ্টা করব।

আলোচনার শুরুতে বিশিস্ট অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্রাচার্জ গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশের শিরোনাম পরিবর্তন, গুমের কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি নিদিস্টকরন এবং গুমের শিকার পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরনের সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখাসহ কয়েকটি প্রস্তাব উপত্থাপন করেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেস্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অধ্যাদেশে গুমের সুনিদিস্ট করা, হিউম্যান রাইটস পেনাল কোড ধারাগুলোর বিশ্লেষন এ অধ্যাদেশে যুক্ত করার পরামর্শ দেন।

আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অধ্যাদেশটিতে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়ের গুমের পটভূমিগুলো তুলে ধরা, সুপিরিয়র কমান্ড কাউন্সির বিষয়টি সুনিদিস্ট করা এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলের গুমগুলোর বিচার প্রস্তাবিত আইনে নিয়ে আসার কথা জানান।

এটনী জেনালের মো. আসাদুজ্জামান বিদ্যমান ফৌজদারী কার্যবিধিতেও গুমের আইনগুলো আরো আপডেট করার আহবান জানান।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মাঝে আরো মতামত ব্যক্ত করেন শিক্ষা উপদেস্টা সি আর আবরার, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি ফরহাদ মজহার বিশিস্ট আইনজীবি ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অধিকারের সাধারন সম্পাদক ড.সায়রা রহমান খান প্রমুখ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত