নোভার্টিসকে হয়রানির অভিযোগ আরজেএসসির বিরুদ্ধে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৮: ৪৭

বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রোফাইল হঠাৎ করে নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলেছে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি)। এখন কোম্পানিটির নাম লিখে সার্চ দিলেও ওয়েবসাইটে কোনো তথ্য দেখা যাচ্ছে না, এমনকি নামও পাওয়া যাচ্ছে না।

আইন অনুযায়ী কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা, আদালতের নিষেধাজ্ঞা কিংবা তদন্ত চললে সাধারণত তাদের প্রোফাইল ‘লকড’ থাকে—এতে কোম্পানির নাম পাওয়া গেলেও বিস্তারিত তথ্য দেখা যায় না। কিন্তু নোভার্টিসের ক্ষেত্রে নামই দেখা যাচ্ছে না, যা আইনজীবীদের মতে, সম্পূর্ণ অবৈধ এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ নাজমুল কবির আমার দেশকে বলেন, কোনো আইনি নিষেধাজ্ঞা ছাড়া কারো তথ্য সরিয়ে ফেলা অপরাধ। এই বেআইনি কাজ যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর করলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি আইনের আশ্রয় নিতে পারে এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে। এভাবে তথ্য সরিয়ে রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রোফাইল গায়েব থাকলে কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর বা অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে পড়ে—যা নোভার্টিসের মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য একপ্রকার হয়রানি ও অধিকার হরণ।

নোভার্টিসের পক্ষ থেকে জানা গেছে, তারা ২৫ ও ২৬ জুন দুই দফা চিঠির মাধ্যমে আরজেএসসিকে অনুরোধ করেছে তাদের প্রোফাইল পুনরায় ওয়েবসাইটে চালু করতে। চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে যে, কোম্পানিটির বিরুদ্ধে কোনো মামলাও চলমান নেই। কিন্তু তারপরও প্রোফাইলটি চালু করা হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয় আরজেএসসির নিবন্ধক একেএম নূরুন্নবী কবিরের সঙ্গে। কিন্তু ফোনে তাকে পাওয়া যায়নি। এসএমএসে তার কাছে লিখিত কয়েকটি প্রশ্ন পাঠানো হয়।

নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রোফাইল ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলার সুনির্দিষ্ট কারণ কী? কোনো লিখিত নির্দেশনা বা সরকারি আদেশের ভিত্তিতে কি এটি করা হয়েছে? কোম্পানিটির বিরুদ্ধে কি কোনো আইনি প্রক্রিয়া, মামলা বা তদন্ত চলমান রয়েছে?– যদি না থাকে, তবে তথ্য সরানোর সিদ্ধান্ত কীভাবে এবং কার অনুমোদনে নেওয়া হয়েছে? যদি প্রোফাইল ‘লকড’ করা হয়ে থাকে, তবে কেন কোম্পানির নাম পর্যন্ত ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে না?

সাধারণত লকড প্রোফাইলে অন্তত নাম দেখা যায়। নোভার্টিসের দেওয়া চিঠির জবাবে এখন পর্যন্ত কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?– ২৫ ও ২৬ জুন চিঠি পাওয়ার পর কেন পোর্টাল পুনরায় চালু করা হয়নি? এটি কি প্রশাসনিক কোনো ত্রুটি, নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কোনো সিদ্ধান্ত?

তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আমরা এর কোনো জবাব পায়নি।

কোম্পানি আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন আচরণ দেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। কোন ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষায় কেউ এ ধরনের কাজ করলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত