
সরদার আনিছ

বছরের ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপার ওয়ার্কঅর্ডার এখনো শেষ হয়নি। এতে নতুন বছরের শুরুতে, অর্থাৎ আগামী ১ জানুয়ারি মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছানো নিয়ে বড় ধরনের কেলেঙ্কারির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া পাঠ্যবইয়ের অনেক কনটেন্ট নিয়েও রয়ে গেছে বিতর্ক।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) বিপদে রেখেই আজ বৃহস্পতিবার অবসরে যাচ্ছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী। সংস্থাটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) হিসেবে এক বছর এবং চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ছয়মাস দায়িত্ব পালন শেষে আজ তিনি বিদায় নিচ্ছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনসিটিবির একাধিক সূত্র। গতকাল বুধবার রাতে পিএ টু চেয়ারম্যান (সেকশন অফিসার) মো. সোলায়মানের সঙ্গে কথা বলেও প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরীর অবসরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারই স্যারের শেষ কর্মদিবস।
এদিকে এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৭ অক্টোবর নবম শ্রেণির বইয়ের কার্যাদেশ (ওয়ার্কঅর্ডার) হলেও বুধবার পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বইয়ের কোনো কার্যাদেশ (ওয়ার্কঅর্ডার) হয়নি। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের অনুমতি প্রাপ্তির পরও অজ্ঞাত কারণে এখনো কার্যাদেশ (ওয়ার্কঅর্ডার) হয়নি।
অপর একটি সূত্র বলছে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব বই ছাপার কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তিন শ্রেণীর বইয়ের কার্যাদেশ না হওয়ায় যথাসময়ে বই ছাপা ও বিতরণের কাজ ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। এতে নতুন বছরের শুরুতে, অর্থাৎ আগামী ১ জানুয়ারি মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছানো নিয়ে বড় ধরনের কেলেঙ্কারির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ন্যায় এবারও পাঠ্যবইয়ের অনেক কনটেন্ট ও ত্রুটি নিয়েও বিতর্কের সমূহ শঙ্ক রয়ে গেছে।
প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী আজ অবসরে গেলেও অনেক সংকট ও বিতর্ক রেখেই বিদায় নিচ্ছেন বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তাকে নিয়েও বিতর্ক ছিল সংশ্লিষ্ট মহলে। সম্প্রতি সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার এক ফেসবুক পোস্টেও রবিউল কবির চৌধুরীকে জাবি ছাত্রলীগের সাবেক ক্যাডার ছিলেন বলে উল্লেখ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রবিউল কবির চৌধুরী ১৯৮৯ সালের জাকসু নির্বাচনে ভিপি-প্রার্থী ছাত্রলীগের সভাপতি এনামুল হক শামীম এর পক্ষে পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন। ফলে বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবেই সুবিধাভোগী ছিলেন তিনি। জুলাই বিপ্লবের পরও রবিউল কবির চৌধুরীর এনসিটিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদে আসীন হওয়াকে অনেকে ভালো চোখে দেখেনি। পাঠ্যবই ছাপা ও কনটেন্ট সংশোধন নিয়ে এই পরিস্থিতির জন্য অনেকেই তাকে দায়ি করে থাকেন। তবে এনসিটিবির প্রফেসর চৌধুরীর ভক্তদের ভাষ্য, নানা বিতর্কের মধ্যে কাজে খুবই আন্তরিক ও দক্ষ ছিলেন তিনি।
তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সদস্য আমান সুলাইমান আমার দেশকে বলেন, গত ১০ মাসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি; এ বিষয়ে তিনি কতটা আন্তরিক ছিলেন সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এছাড়া আমান সুলাইমান বলেন, পাঠ্যবই যথাসময়ে ছাপা ও বিতরণ নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে এ জন্য শুধু প্রফেসর রবিউল কবির চৌধুরীই দায়ী নন; সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে অনেকেই দায়ী। এমন কি জুলাই বিপ্লবের পর জাতির মেরুদন্ড শিক্ষা নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। এমন কি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের শিক্ষার বিষয়ে কোনো আন্তরিকতা দেখছি না। ফলে শিক্ষার সর্বস্তরে অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির শীর্ষ পর্যায়ের নাম ও পদবি প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, যেখানে আগের বছরের অভিজ্ঞতায় এবার জুলাই-আগস্টে বই ছাপার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল সেখানে এখনো মাধ্যমিকের কার্যাদেশই হয়নি; ফলে সহজেই অনুমান করা যায়- এবার পাঠ্যবই নিয়ে কী ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, এবার মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ দেরি হওয়ার পেছনের দায় এনসিটিবির নয়; মন্ত্রণালয়ের। এ প্রসঙ্গে নাম ও পদবি প্রকাশ না করার শর্তে এক শীর্ষ কর্তাব্যক্তি আমার দেশকে বলেন, আগের বছরের অভিজ্ঞতায় এবার বই ছাপানোর কাজের প্রক্রিয়া আগেভাগেই শুরু করেছিল এনসিটিবি। নভেম্বরের মধ্যে সব বই ছাপিয়ে মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ সময়ে মাধ্যমিকের তিন শ্রেণির (ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম) পাঠ্যবইয়ের দরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া এবং নবম-দশম শ্রেণির কার্যাদেশ যথাসময়ে অনুমোদন না হওয়ায় সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলতে চান না। চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্বে) প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে বুধবার রাতে এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) প্রফেসর ড. রিয়াদ চৌধুরী আমার দেশকে বলেন, বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার ব্যাপারে আমরা সবাই আশাবাদী। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমরা তা করতে পারবো বলে আশা করছি।
এনসিটিবির সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২৫) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই তুলে দিতে তিন মাসেরও বেশি সময় দেরি হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ শিক্ষা বিভাগ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। সঠিক সময়ে বই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ভুলে ভরা বইয়ে নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়েও বছরজুড়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়।
এবারও নতুন বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের সম্পূর্ণ সেট তুলে দেওয়া নিয়ে সন্দিহান এনসিটিবির কর্মকর্তারাই। তাদের ভাষ্যমতে, লক্ষ্যপূরণে চলতি বছরের ৫ মে প্রথম দরপত্র আহ্বান করা হলেও তা বাতিল হয়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের দ্বিতীয় দফা দরপত্রের কার্যাদেশ দিয়ে সব বই ছাপিয়ে বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছে দেওয়া অকেটাই কঠিন হবে।
এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৬ সালের নতুন শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই প্রায় আট কোটি ৪৯ লাখ ২৫ হাজার এবং মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ২১ কোটি ৪০ লাখ বইয়ের চাহিদা রয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এবার মোট বইয়ের সংখ্যা কিছুটা কম।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা চার কোটি ৪৩ লাখ ২১ হাজার ৯০৬টি; সপ্তম শ্রেণির চার কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯২ এবং অষ্টম শ্রেণির চার কোটি দুই লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮। এর মধ্যে ২৮০টি লটের মধ্যে ১১ কোটির বেশি বই ছাপানোর দরপত্র বাতিল হওয়ার পর তা দ্বিতীয় দফার প্রক্রিয়া শেষে কার্যাদেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই মুদ্রণে পুনরায় দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে অনুমোদনও পাওয়া গেছে। আজ কিংবা রোববারের মধ্যে কার্যাদেশ হয়ে যাবে। ফলে আশা করা যায় যথাসময়েই শিক্ষার্থীদের হাতে বই দিতে পারব; যদিও এখনো কিছুটা শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ শেষে বই ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ফলে প্রাথমিকের বই যথাসময়েই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে পারবে সংস্থাটি। তবে বছরের শুরুতে মাধ্যমিকের পুরো বই প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।

বছরের ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপার ওয়ার্কঅর্ডার এখনো শেষ হয়নি। এতে নতুন বছরের শুরুতে, অর্থাৎ আগামী ১ জানুয়ারি মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছানো নিয়ে বড় ধরনের কেলেঙ্কারির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া পাঠ্যবইয়ের অনেক কনটেন্ট নিয়েও রয়ে গেছে বিতর্ক।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) বিপদে রেখেই আজ বৃহস্পতিবার অবসরে যাচ্ছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী। সংস্থাটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) হিসেবে এক বছর এবং চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ছয়মাস দায়িত্ব পালন শেষে আজ তিনি বিদায় নিচ্ছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনসিটিবির একাধিক সূত্র। গতকাল বুধবার রাতে পিএ টু চেয়ারম্যান (সেকশন অফিসার) মো. সোলায়মানের সঙ্গে কথা বলেও প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরীর অবসরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারই স্যারের শেষ কর্মদিবস।
এদিকে এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৭ অক্টোবর নবম শ্রেণির বইয়ের কার্যাদেশ (ওয়ার্কঅর্ডার) হলেও বুধবার পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বইয়ের কোনো কার্যাদেশ (ওয়ার্কঅর্ডার) হয়নি। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের অনুমতি প্রাপ্তির পরও অজ্ঞাত কারণে এখনো কার্যাদেশ (ওয়ার্কঅর্ডার) হয়নি।
অপর একটি সূত্র বলছে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব বই ছাপার কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তিন শ্রেণীর বইয়ের কার্যাদেশ না হওয়ায় যথাসময়ে বই ছাপা ও বিতরণের কাজ ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। এতে নতুন বছরের শুরুতে, অর্থাৎ আগামী ১ জানুয়ারি মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছানো নিয়ে বড় ধরনের কেলেঙ্কারির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ন্যায় এবারও পাঠ্যবইয়ের অনেক কনটেন্ট ও ত্রুটি নিয়েও বিতর্কের সমূহ শঙ্ক রয়ে গেছে।
প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী আজ অবসরে গেলেও অনেক সংকট ও বিতর্ক রেখেই বিদায় নিচ্ছেন বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তাকে নিয়েও বিতর্ক ছিল সংশ্লিষ্ট মহলে। সম্প্রতি সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার এক ফেসবুক পোস্টেও রবিউল কবির চৌধুরীকে জাবি ছাত্রলীগের সাবেক ক্যাডার ছিলেন বলে উল্লেখ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রবিউল কবির চৌধুরী ১৯৮৯ সালের জাকসু নির্বাচনে ভিপি-প্রার্থী ছাত্রলীগের সভাপতি এনামুল হক শামীম এর পক্ষে পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন। ফলে বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবেই সুবিধাভোগী ছিলেন তিনি। জুলাই বিপ্লবের পরও রবিউল কবির চৌধুরীর এনসিটিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদে আসীন হওয়াকে অনেকে ভালো চোখে দেখেনি। পাঠ্যবই ছাপা ও কনটেন্ট সংশোধন নিয়ে এই পরিস্থিতির জন্য অনেকেই তাকে দায়ি করে থাকেন। তবে এনসিটিবির প্রফেসর চৌধুরীর ভক্তদের ভাষ্য, নানা বিতর্কের মধ্যে কাজে খুবই আন্তরিক ও দক্ষ ছিলেন তিনি।
তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সদস্য আমান সুলাইমান আমার দেশকে বলেন, গত ১০ মাসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি; এ বিষয়ে তিনি কতটা আন্তরিক ছিলেন সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এছাড়া আমান সুলাইমান বলেন, পাঠ্যবই যথাসময়ে ছাপা ও বিতরণ নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে এ জন্য শুধু প্রফেসর রবিউল কবির চৌধুরীই দায়ী নন; সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে অনেকেই দায়ী। এমন কি জুলাই বিপ্লবের পর জাতির মেরুদন্ড শিক্ষা নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। এমন কি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের শিক্ষার বিষয়ে কোনো আন্তরিকতা দেখছি না। ফলে শিক্ষার সর্বস্তরে অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির শীর্ষ পর্যায়ের নাম ও পদবি প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, যেখানে আগের বছরের অভিজ্ঞতায় এবার জুলাই-আগস্টে বই ছাপার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল সেখানে এখনো মাধ্যমিকের কার্যাদেশই হয়নি; ফলে সহজেই অনুমান করা যায়- এবার পাঠ্যবই নিয়ে কী ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, এবার মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ দেরি হওয়ার পেছনের দায় এনসিটিবির নয়; মন্ত্রণালয়ের। এ প্রসঙ্গে নাম ও পদবি প্রকাশ না করার শর্তে এক শীর্ষ কর্তাব্যক্তি আমার দেশকে বলেন, আগের বছরের অভিজ্ঞতায় এবার বই ছাপানোর কাজের প্রক্রিয়া আগেভাগেই শুরু করেছিল এনসিটিবি। নভেম্বরের মধ্যে সব বই ছাপিয়ে মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ সময়ে মাধ্যমিকের তিন শ্রেণির (ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম) পাঠ্যবইয়ের দরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া এবং নবম-দশম শ্রেণির কার্যাদেশ যথাসময়ে অনুমোদন না হওয়ায় সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলতে চান না। চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্বে) প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে বুধবার রাতে এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) প্রফেসর ড. রিয়াদ চৌধুরী আমার দেশকে বলেন, বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার ব্যাপারে আমরা সবাই আশাবাদী। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমরা তা করতে পারবো বলে আশা করছি।
এনসিটিবির সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২৫) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই তুলে দিতে তিন মাসেরও বেশি সময় দেরি হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ শিক্ষা বিভাগ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। সঠিক সময়ে বই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ভুলে ভরা বইয়ে নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়েও বছরজুড়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়।
এবারও নতুন বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের সম্পূর্ণ সেট তুলে দেওয়া নিয়ে সন্দিহান এনসিটিবির কর্মকর্তারাই। তাদের ভাষ্যমতে, লক্ষ্যপূরণে চলতি বছরের ৫ মে প্রথম দরপত্র আহ্বান করা হলেও তা বাতিল হয়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের দ্বিতীয় দফা দরপত্রের কার্যাদেশ দিয়ে সব বই ছাপিয়ে বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছে দেওয়া অকেটাই কঠিন হবে।
এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৬ সালের নতুন শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই প্রায় আট কোটি ৪৯ লাখ ২৫ হাজার এবং মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ২১ কোটি ৪০ লাখ বইয়ের চাহিদা রয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এবার মোট বইয়ের সংখ্যা কিছুটা কম।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা চার কোটি ৪৩ লাখ ২১ হাজার ৯০৬টি; সপ্তম শ্রেণির চার কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯২ এবং অষ্টম শ্রেণির চার কোটি দুই লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮। এর মধ্যে ২৮০টি লটের মধ্যে ১১ কোটির বেশি বই ছাপানোর দরপত্র বাতিল হওয়ার পর তা দ্বিতীয় দফার প্রক্রিয়া শেষে কার্যাদেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই মুদ্রণে পুনরায় দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে অনুমোদনও পাওয়া গেছে। আজ কিংবা রোববারের মধ্যে কার্যাদেশ হয়ে যাবে। ফলে আশা করা যায় যথাসময়েই শিক্ষার্থীদের হাতে বই দিতে পারব; যদিও এখনো কিছুটা শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ শেষে বই ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ফলে প্রাথমিকের বই যথাসময়েই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে পারবে সংস্থাটি। তবে বছরের শুরুতে মাধ্যমিকের পুরো বই প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার ঘটনায় গভীর নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
৪ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ১০ হাজার ২১৯ জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এরফলে চাকরিপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রাথমিক শিক্ষায় বড় পরিসরে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হলো।
৬ ঘণ্টা আগে
সংগঠনটির মতে, এই শিল্পের সঙ্গে সারাদেশে প্রায় ২০ হাজার অনুমোদিত মোবাইল ফোন বিক্রেতা যুক্ত। যেখানে প্রায় ৮০ হাজার কর্মী সরাসরি কর্মরত। উৎপাদন ও বিতরণ পর্যায়ে মোট প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ সরাসরি এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। গড়ে প্রতি পরিবারের ৫ জন সদস্য হিসেবে ধরা হলো, কমপক্ষে ৬ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পর
৬ ঘণ্টা আগে
আসন্ন নির্বাচনে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে।
৭ ঘণ্টা আগে