জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি (ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারী কমিটি) গঠন করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি), এ কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে এই প্রথম ইনকোয়ারি কমিটিকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে।
রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসিরউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর বিধান মতে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের দিয়ে দেশের প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় একটি করে ৩০০টি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে। নির্বাচনে কোন প্রার্থী, তার কর্মী-সমর্থক নির্বাচনী আচরণ বিধি ভাঙলে এবং অপরাধ স্বীকার করলে সামারী ট্রায়ালের মাধ্যমে ওই কমিটি তাদের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে শাস্তি বা ক্ষেত্রবিশেষে জেল-জরিমানা দিতে পারবে। একই সঙ্গে, তফসিল ঘোষণার পর প্রথম দিকে সীমিত সংখ্যাক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে নিয়োগ করা হবে। ভোটের আগে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। প্রতিটি উপজেলার জন্য দুইজন, প্রতি নয়টি ওয়ার্ডের জন্য দুইজন, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটির জন্য ১৫জন, এবং চট্টগ্রাম সিটির জন্য ১০জন। নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রার্থী বা কর্ম-সমর্থকদের আচরণবিধি তদারকি করবেন।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দশম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ব্যালট পেপার আগের রাতেই কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে। সভার একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন আবুল ফজল মো সানাউল্লাহ নির্বাচনী সামগ্রীসহ নির্বাচনের ব্যালট ভোটের দিন সকালে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব রেখেছিলেন। কিন্তু বৈঠকে এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত আসে। পরে নিরাপত্তা শঙ্কা অগ্রাধিকার বিবেচনায় এই কমিশনারের প্রস্তাব নাকচ হয়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৪৮টি বাদে সবগুলোতে সকালে ব্যালট পাঠানো হয়। সভার সূত্র আরও জানায়, তফসিল ঘোষণার পর ওইদিনই রাতেই নির্বাচনের কর্মকর্তাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে জুম মিটিং করবে ইসি কমিশন।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সিইসির সভাপতিত্বে শুরু হওয়া কমিশন সভা দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত চলে। এর পর সভাটি দেড়টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। পরে দুপুরে আরেক দফা আলোচনার পর বিকেলে নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। এ সময় ইসির সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও এনআইডি উইংয়ের ডিজি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল জানান, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিল পূর্ব আনুষ্ঠানিক কাজের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সিইসির বক্তব্য রেকর্ড করতে বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভিকে আগামীকাল (সোমবার) পত্র পাঠানো হবে।

