সুমুদ ফ্লোটিলার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ঢাকায় মানববন্ধন

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ২৯
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৪০

গাজায় চলমান গণহত্যা ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা-র সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ঢাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহবাগ মোড়ে Community for Freedom and Justice- এর ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা ইসরায়েলের হামলা ও অবরোধকে ‘নির্মম গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। এসময় তারা স্লোগান দেন “ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সী, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রী”, “লাব্বাইক ইয়া আকসা”, “ইন্তিফাদা জিন্দাবাদ”, “জায়োনবাদ নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তিপাক”, “ ওয়ান ট্যু থ্রি ফোর জায়োনিজম নো মোর" প্রভৃতি।

বিজ্ঞাপন

এসময় বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অন্যায় নির্যাতন-অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। একজন মুসলিম হিসেবে তাদের ব্যথা বাংলাদেশও অনুভব করে। স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই বাংলাদেশ সরকার ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে আসছে।

1758fa4f-b86c-4cb7-9898-5460050c0559

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ফ্লোটিলা আটকের নিন্দা

এদিকে গতকাল মধ্যরাতে ইসরায়েলি নৌ-কমান্ডোরা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা-র ৪৪টি জাহাজের মধ্যে প্রায় ৪০টিতে উঠে পড়ে। তারা জিপিএস সিগন্যাল বন্ধ করে দিয়ে শত শত কর্মীকে আটক করে ইসরায়েলে নিয়ে যায়। মানববন্ধনে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান বিক্ষোভকারীরা।

রয়টার্সের যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সৈন্যবেষ্টিত এক ডেকের ওপর বসে আছেন সুইডিশ জলবায়ু ও মানবাধিকার কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। আটককৃতদের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাও রয়েছেন।

এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগে ৫৭ দেশের প্রায় ৫০০ মানবাধিকার কর্মী, চিকিৎসক, শিল্পী, আইনজীবী, ধর্মীয় নেতা ও নাবিক অংশ নেন। ৪৪টি জাহাজে করে খাদ্য, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ গাজার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ঝুঁকি জেনেও তারা ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে এ যাত্রায় অংশ নেন।

GAZA3

এদিন মানববন্ধনে বক্তারা ইসরায়েল কর্তৃক গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানান।

রাজনৈতিক কর্মী ফারজানা লিপি বলেন, “ইসরায়েল সাত দশক ধরে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। আজ পুরো গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই গণহত্যার বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

ছাত্ররাজনীতিবীদ বিএম কাউসার বলেন, “ফিলিস্তিনে এভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকলে পৃথিবীতে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না।"

এক্টিভিস্ট নাহিয়ান বলেন, “গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের হামলা মানব ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই গণহত্যায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটানো হচ্ছে। এই গণহত্যা দেখেও পশ্চিমা বিশ্ব নির্বিকার। ফিলিস্তিনকে বাঁচাতে জাতিসংঘ, পশ্চিমা দেশ, ওআইসি ও আরব নেতাদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

এক্টিভিস্ট হাফিজ উল্লাহ বলেন, “ইসরায়েলের আগ্রাসন রুখতে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পুরো বিশ্বে ইসরায়েলি সব পণ্য বয়কট করতে হবে। ইসরায়েলের ওপর বৈশ্বিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে।”

অন্যদিকে সাবিহা জাকির বলেন, “গাজায় যে নারকীয় গণহত্যা চলছে তার বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেক নীরব। এই নীরবতা ভাঙতে হবে আমাদেরই।”

প্লাটফর্মের সংগঠক ও এক্টিভিস্ট নিজাম উদ্দীন বলেন, “ফিলিস্তিনের গণহত্যা এখন কেবল সংখ্যায় পরিণত হয়েছে। আজ কতজন মারা গেল, সেই হিসাবই সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে। পৃথিবী নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।”

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কোনো ধর্মবিশ্বাসের প্রয়োজন নেই। যাদের মধ্যে ন্যূনতম মানবতা আছে, তারা অবশ্যই ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়াবে। তারা ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানান।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত