মোহাম্মদ শাহ্ আলম
গণতন্ত্রে ‘উচ্চকক্ষ’ বা ‘আপার হাউস’-এর ধারণার উৎপত্তি প্রাচীন রাজতন্ত্রের অভিজাত পরিষদগুলোতে। ইংল্যান্ড এটির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যেখানে এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যারনদের সমাবেশ হিসেবে শুরু হয়েছিল। ইংল্যান্ডে বা ইউরোপে আধুনিক গণতন্ত্রের অভিযাত্রা শুরু হয় অভিজাততন্ত্রের হাত ধরে এবং আজকের দুনিয়ার সাংবিধানিক আইন ও আইনের শাসনের ভিত্তি তৈরি হয় যে ম্যাগনা কার্টাতে, সেটি ১২১৫ সালে ইংল্যান্ডের ব্যারনদের তৈরি দলিল। ব্যারনরা এই দলিলে স্বাক্ষর করতে সে সময়ের রাজা জনকে একপ্রকার অবরুদ্ধ করে বাধ্য করেন।
উচ্চকক্ষের ব্রিটিশ মডেল : ঐতিহ্য ও সীমিত ক্ষমতা
ব্রিটেনে হাউস অব লর্ডসের প্রধান কাজ হলো জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত নিম্নকক্ষ (হাউস অব কমন্স) কর্তৃক পাস করা আইন পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া। কমন্স সভার বিল আইনে পরিণত হওয়ার আগে লর্ডরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করেন এবং প্রয়োজনে সংশোধনের জন্য সুপারিশ বা মতামত দেন। তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, লর্ডদের চূড়ান্ত ভেটো ক্ষমতা নেই। কোনো বিল তারা অসমর্থন করলে সেটি চিরতরে বন্ধ করতে পারেন না। তাদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা হলো বিলটির কার্যকর হওয়া বা আইনে বলবৎ হওয়া সর্বোচ্চ দুই বছর পিছিয়ে দেওয়া। এই সময়সীমার পর লর্ডদের সম্মতি ছাড়াই বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইনে পরিণত হয়—যদিও ইতিহাসে এত দীর্ঘ বিরোধ বিরল ঘটনা।
ঐতিহাসিকভাবে লর্ডসভার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এটি দেশের সর্বোচ্চ আপিল আদালত, কার্যত সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব পালন করে থাকত। কিন্তু আধুনিক যুগে লর্ডসভার এই বিচারিক ভূমিকা ক্রমেই বিতর্কিত হয়ে ওঠে। লর্ডসভার বিচারিক ভূমিকাকে (judicial role) ‘আইনপ্রণেতারা যেন আইনের ব্যাখ্যাকারী বা প্রয়োগকারী না হন’—এই মৌলিক নীতির লঙ্ঘন বলে মনে করা হয়। যেহেতু লর্ডরা আইনপ্রণয়ন প্রক্রিয়া ও সংসদেরই অংশ, তাই আদালতের ভূমিকা পালন তাদের জন্য অসংগতিপূর্ণ বিবেচিত হয়। ফলত, ২০০৯ সালে লর্ডসভার এই বিচারিক কার্যাবলি বাতিল করে যুক্তরাজ্যের জন্য একটি পৃথক সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৯ সালের আগে ইংল্যান্ডের আলাদা কোনো সুপ্রিম কোর্ট ছিল না; লর্ডসভাই সেই দায়িত্ব পালন করে থাকত।
ফেডারেল মডেল : রাজ্য/প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব
অভিজাততন্ত্রভিত্তিক ব্রিটিশ মডেলের বিপরীতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, পাকিস্তান বা ইন্ডিয়ার মতো ফেডারেল বা ইউনিয়ন রাষ্ট্রগুলোয় তাদের উচ্চকক্ষ ব্যবহার করা হয় অঙ্গরাজ্য বা প্রদেশগুলোর প্রতিনিধিত্বের জন্য। এই কক্ষটি আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের একটি পরিষদ হিসেবে কাজ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট, জার্মানির বুন্ডেসরাট (federal council), পাকিস্তানের সিনেট এবং ইন্ডিয়ার রাজ্যসভা এসব উচ্চকক্ষ মূলত ফেডারেল কাউন্সিল বা প্রদেশ কিংবা ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রতিনিধি পরিষদ।
বাংলাদেশ : এক স্বতন্ত্র প্রেক্ষাপট ও এক বিকল বাস্তবতা
বাংলাদেশের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ওপরের কোনো শ্রেণিতে নেই, Neither fish nor fowl। আয়তনে ক্ষুদ্র, একটি একক-ইউনিট রাষ্ট্র। এখানে কোনো ঐতিহ্যবাহী রাজতন্ত্র বা অভিজাত শ্রেণি নেই। এটি উপনিবেশবাদ থেকে জন্ম নেয় একটি নামিক ‘গণপ্রজাতন্ত্র’ হিসেবে। অন্যদিকে বাস্তবতা কিন্তু এই নামিক অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলাদেশ কার্যত জন্ম থেকেই ‘প্রাতিষ্ঠানিক উপনিবেশবাদ’ (institutional colonialism)-এর শৃঙ্খলে আবদ্ধ, যার বৈশিষ্ট্য হলোÑ১. ক্ষমতার চরম কেন্দ্রীকরণ; ২. জবাবদিহিহীনতা; ৩. সরকারপ্রধানের সীমানাবিহীন ক্ষমতা (power without boundary) এবং কর্তৃত্বের বাধাহীন প্রয়োগ; ৪. ঔপনিবেশিক প্রোথিত আমলাতান্ত্রিক কাঠামো; ৫. ঔপনিবেশিক যুগের চর্চা ও মূল্যবোধের স্থায়িত্ব; ৬. নিপীড়ন ও দমনমূলক সামাজিক নিয়ন্ত্রণ কৌশল (পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর আচরণ এবং ক্ষমতা এবং নির্বাহী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আদালত)।
বাংলাদেশের জন্য উচ্চকক্ষ
এই প্রেক্ষাপটে মৌলিক প্রশ্ন ওঠে : বাংলাদেশের জন্য কি উচ্চকক্ষ দরকার? আমাদের কি নতুন করে একটি অভিজাত শ্রেণি সৃষ্টি করতে হবে? বাংলাদেশের কোনো ঐতিহাসিক সামন্ততান্ত্রিক বা ফেডারেল ভিত্তি না থাকায় এখানে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে একটি অপ্রয়োজনীয় কৃত্রিম কাঠামো চাপিয়ে দেওয়া, যা হবে জনগণের করের টাকা আর প্রবাসীদের ঘামে রক্তে অর্জিত বিদেশি মুদ্রায় সঞ্চিত রাষ্ট্রীয় ভান্ডারের ব্যয়ে পোষা একটি সাদা হাতি যা সম্ভবত বিলেতের বিদ্যমান অভিজাতদের প্রতিমূর্তি তৈরি করবে বা নতুন অভিজাত শ্রেণি তৈরি করবে। এক কক্ষের পার্লামেন্টের প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংস্কার না করে আরেকটি উচ্চকক্ষ, যা হবে বিদ্যমান গোদের উপর আরেকটা বিষফোঁড়া।
বাংলাদেশের জন্য জরুরি প্রয়োজন হলো প্রাতিষ্ঠানিক উপনিবেশবাদ থেকে মুক্ত হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাওয়া, ৫৪ বছরে যে পথে আমরা এক কদমও এগোতে পারিনি—অন্য দেশের অনুকরণে শখের বশে অপ্রয়োজনীয় নতুন প্রতিষ্ঠান চাপিয়ে দেওয়া নয়। গণতন্ত্রের পথে এগোতে হলে বিদ্যমান পার্লামেন্টকে পার্লামেন্টারি ভূমিকায় কার্যকর সচল করতে হবে।
সংস্কার চাই এক কক্ষের : নতুন কক্ষ যোগ নয়
উচ্চকক্ষের উৎকল্পনার বদলে, অবিলম্বে এই পার্লামেন্টারি লুণ্ঠন বন্ধ করার কথা আগে ভাবতে হবে। সংস্কারের অগ্রাধিকার হলো সংসদ বা আইনসভার মর্যাদা ফিরিয়ে আনা, লুটপাটের সেই সব বিশেষ বিধান বাতিল করতে হবে, যা ক্ষমতার এই রূপ অপব্যবহারের সুযোগ দেয়। আইনসভাকে তার যথাযথ ভূমিকায় ফিরিয়ে আনা চাই, যার কাজ হলো লুটপাট নয়, আইনপ্রণয়ন এবং নির্বাহী বিভাগকে জবাবদিহি করানো। সরকারপ্রধানের দপ্তরে থাকার ভিত্তি হতে হবে সংসদের আস্থা। নিজ নিজ কনস্টিটুয়েন্সির জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্টে ভূমিকা রাখা, বিভিন্ন বিষয়ে নিজ নিজ এলাকার জনগণের মতো জাতীয় সংসদে অবহিত করা বা জনমতের প্রতিনিধিত্ব করা, দলপ্রধান ও সরকারপ্রধানের তোষণ নয়, এ জন্য বিদ্যমান ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল কাম্য।
প্যারাডক্স ও সামনের পথ
বাংলাদেশ একটি অসত্যাভাস (প্যারাডক্স)। আয়তনে ছোট কিন্তু জনসংখ্যায় বিশাল। ৭৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার জন্য ৩০০ সংসদ সদস্য (এমপি) দিয়ে শুরু হলেও, এখন জনসংখ্যা ১৭০ মিলিয়নে পৌঁছেছে। জনসংখ্যার অনুপাতে সংসদীয় প্রতিনিধির সংখ্যা বাড়ানো যৌক্তিক ও যথাযথ বলে মনে করি। তবে এই বৃদ্ধি শর্তসাপেক্ষ। লুটপাটের যত বিধান, যা জনগণের কর এবং প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্সে গড়া জাতীয় কোষাগার লুণ্ঠনের সুযোগ দেয়—সেসব অবশ্যই বিলুপ্ত করতে হবে।
প্রফেসর ইউনূসের সংস্কার উদ্যোগ
প্রফেসর ইউনূস গভীর সংস্কার চান। সংস্কারের কমিশন করলেন; কিন্তু সরকার জানেই না কোথায় তারা কী সংস্কার চায়। কমিশন করে দিল ১৭ কোটি মানুষের দেশে ঢাকার শহরের কিছু চেনা ব্যক্তিদের নিয়ে, কমিশনের কোনো সদস্য রাষ্ট্রের অসংগতিজনিত যে দুর্গতি জনমানুষের, তা নিয়ে কোনো চিন্তা করেছেন বা কোনো আওয়াজ তুলেছেনÑএমনটি দেখা যায়নি। বিশাল বাংলার মানুষের নানা শ্রেণি-পেশার কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না কোনো কমিশনে। না ছিল ২৪-এর ছাত্র-জনতার কোনো প্রতিনিধিত্ব। কমিশনের ভাসা ভাসা সুপারিশ তিনি কীভাবে গভীর সংস্কারটা করবেন!
এখন কথিত সংস্কারের ঐকমত্যের আলোচনা চলছে, তাও শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। এসব আলোচনায় দলীয় কাঠামোর বাইরের বিপুল জনগণের নানা শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব বাদ দেওয়া হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল মিলে দেশের কত শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে? দলের সঙ্গে সক্রিয় বা যুক্ত নয় নাগরিকদের এ অংশের প্রতিনিধিত্ব কোথায়? তেতো হলেও কঠিন সত্য হলো, রাজনৈতিক দলগুলো ব্যতিক্রম ছাড়া গুন্ডা, প্রতারক, ঠগ, লোভী ও মিথ্যাবাদী ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত, চলিত, চালিত ও নিয়ন্ত্রিত, যাদের কাছে রাজনীতি সম্পদ অর্জন, মর্যাদা ও ক্ষমতার উৎস।
মৌলিক সাংবিধানিক প্রশ্ন : ক্ষমতা পৃথককরণ নাকি সংমিশ্রণ
জনগণের ক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদাকে সম্মান করে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশকে অবশ্যই একটি স্পষ্ট সাংবিধানিক মডেল বেছে নিতে হবে : ১. আমেরিকান মডেল : (ক্ষমতা পৃথককরণ—seperation of power)। আইনপ্রণয়ন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার স্পষ্ট বিভাজন ও সীমারেখা নির্দেশন। ২. ব্রিটিশ মডেল : (ক্ষমতার সংমিশ্রণ—fusion of power)। যেখানে নির্বাহী বিভাগ (প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা) নির্বাচিত আইনসভা (সংসদ) থেকে আসেন এবং কিন্তু আইনসভার কাছে জবাবদিহি করেন। নির্বাহী বিভাগের এ অংশ তথা সরকারের সর্বোচ্চ দপ্তরবাহীরা পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে গণ্য হন। তারা এমপি হলেও তাদের পার্লামেন্টারি ভূমিকা গৌণ এবং তারা পার্লামেন্ট এবং জনগণের কাছে জবাবদিহি।
প্রধানমন্ত্রী শুধু সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিদের আস্থা থাকাকালেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকেন। আস্থা হারালে সাধারণত পদত্যাগ বা আস্থাভোটের মুখোমুখি হতে হয়—যেমন সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের দায়িত্ব মাত্র ৪৯ দিনের মেয়াদে শেষ হয়ে গিয়েছিল। পার্লামেন্টের অনাস্থার কথা উপলব্ধি করে ভোটাভুটির আগেই তিনি রাস্তা ছেড়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশের বাস্তবতা
বাংলাদেশের বর্তমান ব্যবস্থা এক বিশৃঙ্খল, অকার্যকর মিশ্রণের এক চরম অনিয়ন্ত্রিত ও অসীম ক্ষমতার স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থা। ওয়েস্টমিনিস্টার ডেমোক্রেসির নামে তার মূর্খতান্ত্রিক (kakistocratic) পারিষদবর্গের চাপিয়ে দেওয়া এক ব্যবস্থা, যা না ক্ষমতা পৃথককরণ (seperation), না ক্ষমতার সংমিশ্রণ (fusion)। সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধানের হাতে; পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র তার একক অভিপ্রায় ও সন্তোষ বা অসন্তোষের ভিত্তিতে চলে। এটা কি গণতন্ত্র? ব্রিটিশ ইন্ডিয়াতে ভাইসরয় বা গভর্নর জেনারেলকে জবাবদিহি করতে হতো ব্রিটিশ ক্রাউনের কাছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কার কাছে জবাবদিহি?
গণতন্ত্রের নাম এই স্বৈরতান্ত্রিক জগাখিচুড়ি
২৪ সালের জুলাইও ইতিহাসের শেষ কাণ্ড নয়। এক মাঘ যেমন শীতের সমাপ্তি ঘটায় না, এক জুলাইও ইতিহাসকে সংজ্ঞায়িত করে না। এই শিক্ষা না নিলে অনাগত অন্য সংখ্যার আড়ালে ২৪ আসবে, জুলাই বা আগস্ট আসবে।
উচ্চকক্ষের ধারণা বাদ দিয়ে, লুণ্ঠনের কাঠামো ভেঙে ফেলে জবাবদিহিমূলক ক্ষমতার প্রকৃত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে মনোনিবেশ করুন। এক ব্যক্তির নিরঙ্কুশ ক্ষমতা বিকেন্দ্রিত করার কথা ভাবুন। সীমানা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তৈরি করুন! পার্লামেন্টের নির্বাহী দায়িত্ব ছেঁটে ফেলুন! যাবতীয় বেতন-ভাতার নামে লুটতরাজের রাস্তা বাতিল করুন! আইন সভাকে যথা মর্যাদাপূর্ণ আইন সভায় ফিরিয়ে আনুন!
লেখক : শিক্ষাবিদ, সিটিজেন অ্যাকটিভিস্ট, ইংল্যান্ড
গণতন্ত্রে ‘উচ্চকক্ষ’ বা ‘আপার হাউস’-এর ধারণার উৎপত্তি প্রাচীন রাজতন্ত্রের অভিজাত পরিষদগুলোতে। ইংল্যান্ড এটির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যেখানে এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যারনদের সমাবেশ হিসেবে শুরু হয়েছিল। ইংল্যান্ডে বা ইউরোপে আধুনিক গণতন্ত্রের অভিযাত্রা শুরু হয় অভিজাততন্ত্রের হাত ধরে এবং আজকের দুনিয়ার সাংবিধানিক আইন ও আইনের শাসনের ভিত্তি তৈরি হয় যে ম্যাগনা কার্টাতে, সেটি ১২১৫ সালে ইংল্যান্ডের ব্যারনদের তৈরি দলিল। ব্যারনরা এই দলিলে স্বাক্ষর করতে সে সময়ের রাজা জনকে একপ্রকার অবরুদ্ধ করে বাধ্য করেন।
উচ্চকক্ষের ব্রিটিশ মডেল : ঐতিহ্য ও সীমিত ক্ষমতা
ব্রিটেনে হাউস অব লর্ডসের প্রধান কাজ হলো জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত নিম্নকক্ষ (হাউস অব কমন্স) কর্তৃক পাস করা আইন পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া। কমন্স সভার বিল আইনে পরিণত হওয়ার আগে লর্ডরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করেন এবং প্রয়োজনে সংশোধনের জন্য সুপারিশ বা মতামত দেন। তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, লর্ডদের চূড়ান্ত ভেটো ক্ষমতা নেই। কোনো বিল তারা অসমর্থন করলে সেটি চিরতরে বন্ধ করতে পারেন না। তাদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা হলো বিলটির কার্যকর হওয়া বা আইনে বলবৎ হওয়া সর্বোচ্চ দুই বছর পিছিয়ে দেওয়া। এই সময়সীমার পর লর্ডদের সম্মতি ছাড়াই বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইনে পরিণত হয়—যদিও ইতিহাসে এত দীর্ঘ বিরোধ বিরল ঘটনা।
ঐতিহাসিকভাবে লর্ডসভার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এটি দেশের সর্বোচ্চ আপিল আদালত, কার্যত সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব পালন করে থাকত। কিন্তু আধুনিক যুগে লর্ডসভার এই বিচারিক ভূমিকা ক্রমেই বিতর্কিত হয়ে ওঠে। লর্ডসভার বিচারিক ভূমিকাকে (judicial role) ‘আইনপ্রণেতারা যেন আইনের ব্যাখ্যাকারী বা প্রয়োগকারী না হন’—এই মৌলিক নীতির লঙ্ঘন বলে মনে করা হয়। যেহেতু লর্ডরা আইনপ্রণয়ন প্রক্রিয়া ও সংসদেরই অংশ, তাই আদালতের ভূমিকা পালন তাদের জন্য অসংগতিপূর্ণ বিবেচিত হয়। ফলত, ২০০৯ সালে লর্ডসভার এই বিচারিক কার্যাবলি বাতিল করে যুক্তরাজ্যের জন্য একটি পৃথক সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৯ সালের আগে ইংল্যান্ডের আলাদা কোনো সুপ্রিম কোর্ট ছিল না; লর্ডসভাই সেই দায়িত্ব পালন করে থাকত।
ফেডারেল মডেল : রাজ্য/প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব
অভিজাততন্ত্রভিত্তিক ব্রিটিশ মডেলের বিপরীতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, পাকিস্তান বা ইন্ডিয়ার মতো ফেডারেল বা ইউনিয়ন রাষ্ট্রগুলোয় তাদের উচ্চকক্ষ ব্যবহার করা হয় অঙ্গরাজ্য বা প্রদেশগুলোর প্রতিনিধিত্বের জন্য। এই কক্ষটি আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের একটি পরিষদ হিসেবে কাজ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট, জার্মানির বুন্ডেসরাট (federal council), পাকিস্তানের সিনেট এবং ইন্ডিয়ার রাজ্যসভা এসব উচ্চকক্ষ মূলত ফেডারেল কাউন্সিল বা প্রদেশ কিংবা ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রতিনিধি পরিষদ।
বাংলাদেশ : এক স্বতন্ত্র প্রেক্ষাপট ও এক বিকল বাস্তবতা
বাংলাদেশের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ওপরের কোনো শ্রেণিতে নেই, Neither fish nor fowl। আয়তনে ক্ষুদ্র, একটি একক-ইউনিট রাষ্ট্র। এখানে কোনো ঐতিহ্যবাহী রাজতন্ত্র বা অভিজাত শ্রেণি নেই। এটি উপনিবেশবাদ থেকে জন্ম নেয় একটি নামিক ‘গণপ্রজাতন্ত্র’ হিসেবে। অন্যদিকে বাস্তবতা কিন্তু এই নামিক অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলাদেশ কার্যত জন্ম থেকেই ‘প্রাতিষ্ঠানিক উপনিবেশবাদ’ (institutional colonialism)-এর শৃঙ্খলে আবদ্ধ, যার বৈশিষ্ট্য হলোÑ১. ক্ষমতার চরম কেন্দ্রীকরণ; ২. জবাবদিহিহীনতা; ৩. সরকারপ্রধানের সীমানাবিহীন ক্ষমতা (power without boundary) এবং কর্তৃত্বের বাধাহীন প্রয়োগ; ৪. ঔপনিবেশিক প্রোথিত আমলাতান্ত্রিক কাঠামো; ৫. ঔপনিবেশিক যুগের চর্চা ও মূল্যবোধের স্থায়িত্ব; ৬. নিপীড়ন ও দমনমূলক সামাজিক নিয়ন্ত্রণ কৌশল (পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর আচরণ এবং ক্ষমতা এবং নির্বাহী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আদালত)।
বাংলাদেশের জন্য উচ্চকক্ষ
এই প্রেক্ষাপটে মৌলিক প্রশ্ন ওঠে : বাংলাদেশের জন্য কি উচ্চকক্ষ দরকার? আমাদের কি নতুন করে একটি অভিজাত শ্রেণি সৃষ্টি করতে হবে? বাংলাদেশের কোনো ঐতিহাসিক সামন্ততান্ত্রিক বা ফেডারেল ভিত্তি না থাকায় এখানে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে একটি অপ্রয়োজনীয় কৃত্রিম কাঠামো চাপিয়ে দেওয়া, যা হবে জনগণের করের টাকা আর প্রবাসীদের ঘামে রক্তে অর্জিত বিদেশি মুদ্রায় সঞ্চিত রাষ্ট্রীয় ভান্ডারের ব্যয়ে পোষা একটি সাদা হাতি যা সম্ভবত বিলেতের বিদ্যমান অভিজাতদের প্রতিমূর্তি তৈরি করবে বা নতুন অভিজাত শ্রেণি তৈরি করবে। এক কক্ষের পার্লামেন্টের প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংস্কার না করে আরেকটি উচ্চকক্ষ, যা হবে বিদ্যমান গোদের উপর আরেকটা বিষফোঁড়া।
বাংলাদেশের জন্য জরুরি প্রয়োজন হলো প্রাতিষ্ঠানিক উপনিবেশবাদ থেকে মুক্ত হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাওয়া, ৫৪ বছরে যে পথে আমরা এক কদমও এগোতে পারিনি—অন্য দেশের অনুকরণে শখের বশে অপ্রয়োজনীয় নতুন প্রতিষ্ঠান চাপিয়ে দেওয়া নয়। গণতন্ত্রের পথে এগোতে হলে বিদ্যমান পার্লামেন্টকে পার্লামেন্টারি ভূমিকায় কার্যকর সচল করতে হবে।
সংস্কার চাই এক কক্ষের : নতুন কক্ষ যোগ নয়
উচ্চকক্ষের উৎকল্পনার বদলে, অবিলম্বে এই পার্লামেন্টারি লুণ্ঠন বন্ধ করার কথা আগে ভাবতে হবে। সংস্কারের অগ্রাধিকার হলো সংসদ বা আইনসভার মর্যাদা ফিরিয়ে আনা, লুটপাটের সেই সব বিশেষ বিধান বাতিল করতে হবে, যা ক্ষমতার এই রূপ অপব্যবহারের সুযোগ দেয়। আইনসভাকে তার যথাযথ ভূমিকায় ফিরিয়ে আনা চাই, যার কাজ হলো লুটপাট নয়, আইনপ্রণয়ন এবং নির্বাহী বিভাগকে জবাবদিহি করানো। সরকারপ্রধানের দপ্তরে থাকার ভিত্তি হতে হবে সংসদের আস্থা। নিজ নিজ কনস্টিটুয়েন্সির জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্টে ভূমিকা রাখা, বিভিন্ন বিষয়ে নিজ নিজ এলাকার জনগণের মতো জাতীয় সংসদে অবহিত করা বা জনমতের প্রতিনিধিত্ব করা, দলপ্রধান ও সরকারপ্রধানের তোষণ নয়, এ জন্য বিদ্যমান ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল কাম্য।
প্যারাডক্স ও সামনের পথ
বাংলাদেশ একটি অসত্যাভাস (প্যারাডক্স)। আয়তনে ছোট কিন্তু জনসংখ্যায় বিশাল। ৭৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার জন্য ৩০০ সংসদ সদস্য (এমপি) দিয়ে শুরু হলেও, এখন জনসংখ্যা ১৭০ মিলিয়নে পৌঁছেছে। জনসংখ্যার অনুপাতে সংসদীয় প্রতিনিধির সংখ্যা বাড়ানো যৌক্তিক ও যথাযথ বলে মনে করি। তবে এই বৃদ্ধি শর্তসাপেক্ষ। লুটপাটের যত বিধান, যা জনগণের কর এবং প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্সে গড়া জাতীয় কোষাগার লুণ্ঠনের সুযোগ দেয়—সেসব অবশ্যই বিলুপ্ত করতে হবে।
প্রফেসর ইউনূসের সংস্কার উদ্যোগ
প্রফেসর ইউনূস গভীর সংস্কার চান। সংস্কারের কমিশন করলেন; কিন্তু সরকার জানেই না কোথায় তারা কী সংস্কার চায়। কমিশন করে দিল ১৭ কোটি মানুষের দেশে ঢাকার শহরের কিছু চেনা ব্যক্তিদের নিয়ে, কমিশনের কোনো সদস্য রাষ্ট্রের অসংগতিজনিত যে দুর্গতি জনমানুষের, তা নিয়ে কোনো চিন্তা করেছেন বা কোনো আওয়াজ তুলেছেনÑএমনটি দেখা যায়নি। বিশাল বাংলার মানুষের নানা শ্রেণি-পেশার কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না কোনো কমিশনে। না ছিল ২৪-এর ছাত্র-জনতার কোনো প্রতিনিধিত্ব। কমিশনের ভাসা ভাসা সুপারিশ তিনি কীভাবে গভীর সংস্কারটা করবেন!
এখন কথিত সংস্কারের ঐকমত্যের আলোচনা চলছে, তাও শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। এসব আলোচনায় দলীয় কাঠামোর বাইরের বিপুল জনগণের নানা শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব বাদ দেওয়া হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল মিলে দেশের কত শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে? দলের সঙ্গে সক্রিয় বা যুক্ত নয় নাগরিকদের এ অংশের প্রতিনিধিত্ব কোথায়? তেতো হলেও কঠিন সত্য হলো, রাজনৈতিক দলগুলো ব্যতিক্রম ছাড়া গুন্ডা, প্রতারক, ঠগ, লোভী ও মিথ্যাবাদী ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত, চলিত, চালিত ও নিয়ন্ত্রিত, যাদের কাছে রাজনীতি সম্পদ অর্জন, মর্যাদা ও ক্ষমতার উৎস।
মৌলিক সাংবিধানিক প্রশ্ন : ক্ষমতা পৃথককরণ নাকি সংমিশ্রণ
জনগণের ক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদাকে সম্মান করে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশকে অবশ্যই একটি স্পষ্ট সাংবিধানিক মডেল বেছে নিতে হবে : ১. আমেরিকান মডেল : (ক্ষমতা পৃথককরণ—seperation of power)। আইনপ্রণয়ন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার স্পষ্ট বিভাজন ও সীমারেখা নির্দেশন। ২. ব্রিটিশ মডেল : (ক্ষমতার সংমিশ্রণ—fusion of power)। যেখানে নির্বাহী বিভাগ (প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা) নির্বাচিত আইনসভা (সংসদ) থেকে আসেন এবং কিন্তু আইনসভার কাছে জবাবদিহি করেন। নির্বাহী বিভাগের এ অংশ তথা সরকারের সর্বোচ্চ দপ্তরবাহীরা পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে গণ্য হন। তারা এমপি হলেও তাদের পার্লামেন্টারি ভূমিকা গৌণ এবং তারা পার্লামেন্ট এবং জনগণের কাছে জবাবদিহি।
প্রধানমন্ত্রী শুধু সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিদের আস্থা থাকাকালেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকেন। আস্থা হারালে সাধারণত পদত্যাগ বা আস্থাভোটের মুখোমুখি হতে হয়—যেমন সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের দায়িত্ব মাত্র ৪৯ দিনের মেয়াদে শেষ হয়ে গিয়েছিল। পার্লামেন্টের অনাস্থার কথা উপলব্ধি করে ভোটাভুটির আগেই তিনি রাস্তা ছেড়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশের বাস্তবতা
বাংলাদেশের বর্তমান ব্যবস্থা এক বিশৃঙ্খল, অকার্যকর মিশ্রণের এক চরম অনিয়ন্ত্রিত ও অসীম ক্ষমতার স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থা। ওয়েস্টমিনিস্টার ডেমোক্রেসির নামে তার মূর্খতান্ত্রিক (kakistocratic) পারিষদবর্গের চাপিয়ে দেওয়া এক ব্যবস্থা, যা না ক্ষমতা পৃথককরণ (seperation), না ক্ষমতার সংমিশ্রণ (fusion)। সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধানের হাতে; পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র তার একক অভিপ্রায় ও সন্তোষ বা অসন্তোষের ভিত্তিতে চলে। এটা কি গণতন্ত্র? ব্রিটিশ ইন্ডিয়াতে ভাইসরয় বা গভর্নর জেনারেলকে জবাবদিহি করতে হতো ব্রিটিশ ক্রাউনের কাছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কার কাছে জবাবদিহি?
গণতন্ত্রের নাম এই স্বৈরতান্ত্রিক জগাখিচুড়ি
২৪ সালের জুলাইও ইতিহাসের শেষ কাণ্ড নয়। এক মাঘ যেমন শীতের সমাপ্তি ঘটায় না, এক জুলাইও ইতিহাসকে সংজ্ঞায়িত করে না। এই শিক্ষা না নিলে অনাগত অন্য সংখ্যার আড়ালে ২৪ আসবে, জুলাই বা আগস্ট আসবে।
উচ্চকক্ষের ধারণা বাদ দিয়ে, লুণ্ঠনের কাঠামো ভেঙে ফেলে জবাবদিহিমূলক ক্ষমতার প্রকৃত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে মনোনিবেশ করুন। এক ব্যক্তির নিরঙ্কুশ ক্ষমতা বিকেন্দ্রিত করার কথা ভাবুন। সীমানা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তৈরি করুন! পার্লামেন্টের নির্বাহী দায়িত্ব ছেঁটে ফেলুন! যাবতীয় বেতন-ভাতার নামে লুটতরাজের রাস্তা বাতিল করুন! আইন সভাকে যথা মর্যাদাপূর্ণ আইন সভায় ফিরিয়ে আনুন!
লেখক : শিক্ষাবিদ, সিটিজেন অ্যাকটিভিস্ট, ইংল্যান্ড
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৭ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৭ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৮ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে