কাওসার আলম
বেসরকারি খাত, তৈরি পোশাকশিল্প, জনশক্তি রপ্তানি ও কৃষি খাতকে বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূলত এ চালিকাশক্তির ওপর নির্ভর করছে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। অন্যদিকে এসব চালিকাশক্তির ভিত্তি হিসেবে রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে উদারীকরণ নীতি এবং মুক্তবাজার অর্থনীতি।
বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশে এসব চালিকাশক্তির সূচনা যেমন বিএনপির হাত ধরে হয়েছে, তেমনি যে নীতির ওপর ভিত্তি করে চালিকাশক্তিগুলোর বিকাশ ঘটেছে, তারও প্রবর্তন ঘটে একই রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে। সে হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি বিনির্মাণে ক্ষমতায় থাকা অন্য রাজনৈতিক দলের তুলনায় বিএনপির ভূমিকা অনেক বেশি গৌরবোজ্জ্বল।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি ৪৭ বছর পার করেছে। ১ সেপ্টেম্বর দলটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে। অর্থনীতিতে এই রাজনৈতিক দলের ভূমিকা কতটা, তা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আজকের দিনে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে যেসব শিল্প গ্রুপ, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে, তার পেছনেও রয়েছে এ দলের অনন্য ভূমিকা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শাসনামলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বিএনপির ভূমিকা নিয়ে আলাপ হয় অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে। তাদের বিশ্লেষণ, আজকের বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে বিএনপির বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মসূচি ও উদ্যোগের কারণে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আহ্বায়ক ড. মাহবুব উল্লাহ জানান, জিয়াউর রহমানের আমলেই দেশে পোশাকশিল্পের সূচনা ঘটে এবং জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়। কৃষির উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। জিয়াউর রহমানের পর এরশাদ ক্ষমতায় এসে লুণ্ঠনের অর্থনীতি চালু করেন।
অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদের বিশ্লেষণ, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিনির্মাণে বিএনপির অবদান অপরিসীম। স্বাধীনতা লাভের পর ক্ষমতায় এসে শেখ মুজিব সমাজতন্ত্রের নামে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। সব কলকারখানা জাতীয়করণ করা হয়। লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে সেগুলোর অধিকাংশই লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। তার মতে, রাষ্ট্র ব্যবসা করতে পারে না, এটা রাষ্ট্রের কাজ নয়।
জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বেসরকারিকরণ নীতি গ্রহণ করেন এবং বেসরকারি মালিকদের হাতে তাদের প্রতিষ্ঠান ফিরিয়ে দেন। জিয়াউর রহমান একজন সৎলোক ছিলেন এবং তার মতো নেতা পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। তিনি একজন সৈনিক হয়েও আঞ্চলিক অর্থনীতির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন এবং সার্ক গঠন করেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান সার্কের প্রতিষ্ঠাতা হওয়ার কারণে শেখ হাসিনা এটির গুরুত্ব দেননি। সার্ক কার্যকর হলে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভূত উন্নতি হতে পারত। অন্যদিকে ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার আমলে মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে নতুন গতিপথ তৈরি হয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা বজায় ছিল। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল খুবই সীমিত। তার শাসনামলে রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো ধরনের ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খালেদা জিয়া অর্থমন্ত্রী বা গভর্নরের কাজে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতেন না। তার দুই আমলে (১৯৯১-৯৬ এবং ২০০১-০৬) দেশের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির মধ্যেই ছিল। কিন্তু যিনি (শেখ হাসিনা) ভারতে পালিয়ে গেছেন, তিনি দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। দেশের ওপর ১০৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়ে সেগুলোর বড় অংশই পাচার করা হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ড. এম মাসরুর রিয়াজের মন্তব্য, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের কত বড় উপকার করেছেন, এটা কল্পনাও করা যায় না। বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করেছেন। বেসরকারি খাতই এখন অর্থনীতির চালিকাশক্তি। কর্মসংস্থান, আয়-উপার্জন ও জাতীয় সম্পদ গড়ার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বেসরকারি খাতের অবদানই সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি অর্থাৎ উদারীকরণ নীতি গ্রহণ করে। চালু করে ভ্যাটব্যবস্থা। সরকারের রাজস্ব আয়ের এখন বড় উৎসই হলো ভ্যাট। রাজস্ব আয়ের দুই-তৃতীয়াংশই আসছে এ খাত থেকে। এটি চালু না হলে সরকারের পক্ষে এত বড় আকারের বাজেট দেওয়া সম্ভব হতো না। সরকারের রাজস্ব আহরণে ভ্যাটের পর আর নতুন কোনো খাত যুক্ত হয়নি বলেও জানান এই বিশ্লেষক।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবুল কাশেম খানের ভাষ্য, বাংলাদেশের অর্থনীতির ৮০ শতাংশই বিএনপির অবদান। বেসরকারি খাতের বিকাশ ও খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি তৈরি এবং জনশক্তি রপ্তানির উদ্যোগÑসবকিছুই জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই হয়েছে। খুব স্বল্প সময়ের শাসনামলে তিনি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত থেকে দেশের অর্থনীতিকে টেনে তোলেন।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জিয়াউর রহমানের নেওয়া কর্মসূচিকে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক কর্মসূচি ও অনন্য উদ্যোগ আখ্যা দিয়ে এই অর্থনীতি বিশ্লেষক বলেন, তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষই ছিল দরিদ্র, অবকাঠামো দুর্বল, প্রতিষ্ঠান চলে না। তখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। তখন বিতর্ক হতো, অধিক জনসংখ্যার কারণে দরিদ্রতা না, দরিদ্রতার কারণে অধিক জনসংখ্যা। জিয়াউর রহমান সে বিতর্কে না গিয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আইইএম (ইনফরমেশন এডুকেশন মোটিভেশন) কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এ কর্মসূচির আওতায় ৩০ হাজার নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়, যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেন এবং এ জন্য বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ করেন। এ কর্মসূচির মাধ্যমে জিয়াউর রহমান দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে খুবই সফল হন এবং এ ক্ষেত্রে তিনি চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।
লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়। একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে লড়াই করেছিলেন এ দেশের আপামর জনতা। কিন্তু মুজিব আমলের অপশাসন, সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের কারণে স্বল্প সময়ে তাদের সে স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটে। স্বাধীনতার প্রথমবার্ষিকীতে অর্থাৎ ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ দেশের সব বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ঘোষণা দেন শেখ মুজিব। সমাজতন্ত্র কায়েমের নামে ১৫ লাখ টাকার বেশি মূল্যের স্থাবর সম্পত্তিসংবলিত সব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের পথ রুদ্ধ করা হয়। ব্যক্তি খাতে পুঁজির প্রয়োজনীয়তা না থাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশের শেয়ারবাজার। কিন্তু জাতীয়করণের নামে মূলত শিল্প কল-কারখানাগুলোয় দলীয়করণ এবং অবাধ লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটে স্বাধীনতার তিন বছরের মাথায় ১৯৭৪ সালে চরম এক দুর্ভিক্ষের শিকার হতে হয় এ দেশের জনগণকে। ‘দুর্ভিক্ষ খাদ্যের অভাবে হয় না, হয় বণ্টনের অভাবে’Ñভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দুর্ভিক্ষের কারণ পর্যালোচনা করে এ তত্ত্ব দিয়েছিলেন। মজুতদারি ও কালোবাজারি চক্রের শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। আর এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ছিল আওয়ামী লীগের শীর্ষ থেকে স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল, যাতে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী অবস্থায় পৌঁছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে খাবার কেনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সরকারি হিসাবেই ২৬ হাজার লোক দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারিয়েছিল। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা কয়েক লাখের মতো। চরম অনাচার, অরাজক পরিস্থিতি আর সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস ওঠে। সবদিকে হতাশা ও বঞ্চনার ক্ষোভ। দেশ আখ্যা পায় ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ মুজিব আমৃত্যু ক্ষমতার মসনদ ধরে রাখতে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল চালু করেন।
১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাকশাল গঠনের সাত মাসের মাথায় ১৫ আগস্ট সামরিক অভ্যুত্থানে সপরিবারে নিহত হন শেখ মুজিব। কিন্তু এমন এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলেও ছিল না কোনো শোকের আবহ। মানুষ যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচেÑওই সময় প্রকাশিত পত্র-পত্রিকা ঘাঁটলে এমন তথ্য পাওয়া যাবে। শেখ মুজিব নিহত হওয়ার পর বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হন জিয়াউর রহমান। তিনি সেই মুখ, মেজর জিয়া, যার কণ্ঠস্বরে ধ্বনিত হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। একটি দিশাহীন জাতি তার মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছিল তার সেই ঘোষণায়। তেমনি একটি হতোদ্যম জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। অর্থনীতিতে উদারীকরণের যাত্রা শুরু হয়। নেওয়া হয় বেসরকারিকরণের উদ্যোগ, রুদ্ধতার লাগাম খুলে দেওয়া হয় বেসরকারি বিনিয়োগে, আবার চালু হয় শেয়ারবাজার। শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধা না থাকায় কৃষকরা জমিতে ফসল ফলাতে পারত না। খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে সে সমস্যার সমাধান করেন জিয়াউর রহমান। শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধার ফলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাও ঘুরতে শুরু করে। ১৯৭৪ সালে খাদ্যাভাবে প্রাণ হারানো জাতি জিয়ার আমলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাই শুধু নয়, বার্মায় (বর্তমানে মিয়ানমার) চাল রপ্তানিও প্রত্যক্ষ করে।
১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আমাদের রপ্তানি পাটের ওপর নির্ভরশীল ছিল। জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই তৈরি পোশাক খাতের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। পোশাক খাতকে সহায়তা দেওয়ার জন্য বন্ডেড ওয়্যারহাউস এবং ব্যাক টু ব্যাক এলসি সুবিধা চালু করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত প্রবাসী আয়।
জিয়াউর রহমানের আমলে শুরু হয় জনশক্তি রপ্তানি। তিনি সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগে গ্রহণ করেন। মূলত সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে অন্য আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভাতৃত্ববোধের সম্পর্ক তৈরি করেন তিনি। তার সুফল ভোগ করছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ১৯৯১ সালে বিএনপি মুক্তবাজার অর্থনীতি গ্রহণ করে। অর্থনীতিতে বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাজেট বাস্তবায়নে বৈদেশিক সাহায্যনির্ভরতা কমাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯১ সালে ভ্যাট প্রথা চালু করা হয়।
লেখক : অর্থনৈতিক রিপোর্টার, আমার দেশ
বেসরকারি খাত, তৈরি পোশাকশিল্প, জনশক্তি রপ্তানি ও কৃষি খাতকে বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূলত এ চালিকাশক্তির ওপর নির্ভর করছে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। অন্যদিকে এসব চালিকাশক্তির ভিত্তি হিসেবে রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে উদারীকরণ নীতি এবং মুক্তবাজার অর্থনীতি।
বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশে এসব চালিকাশক্তির সূচনা যেমন বিএনপির হাত ধরে হয়েছে, তেমনি যে নীতির ওপর ভিত্তি করে চালিকাশক্তিগুলোর বিকাশ ঘটেছে, তারও প্রবর্তন ঘটে একই রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে। সে হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি বিনির্মাণে ক্ষমতায় থাকা অন্য রাজনৈতিক দলের তুলনায় বিএনপির ভূমিকা অনেক বেশি গৌরবোজ্জ্বল।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি ৪৭ বছর পার করেছে। ১ সেপ্টেম্বর দলটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে। অর্থনীতিতে এই রাজনৈতিক দলের ভূমিকা কতটা, তা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আজকের দিনে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে যেসব শিল্প গ্রুপ, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে, তার পেছনেও রয়েছে এ দলের অনন্য ভূমিকা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শাসনামলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বিএনপির ভূমিকা নিয়ে আলাপ হয় অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে। তাদের বিশ্লেষণ, আজকের বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে বিএনপির বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মসূচি ও উদ্যোগের কারণে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আহ্বায়ক ড. মাহবুব উল্লাহ জানান, জিয়াউর রহমানের আমলেই দেশে পোশাকশিল্পের সূচনা ঘটে এবং জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়। কৃষির উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। জিয়াউর রহমানের পর এরশাদ ক্ষমতায় এসে লুণ্ঠনের অর্থনীতি চালু করেন।
অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদের বিশ্লেষণ, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিনির্মাণে বিএনপির অবদান অপরিসীম। স্বাধীনতা লাভের পর ক্ষমতায় এসে শেখ মুজিব সমাজতন্ত্রের নামে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। সব কলকারখানা জাতীয়করণ করা হয়। লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে সেগুলোর অধিকাংশই লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। তার মতে, রাষ্ট্র ব্যবসা করতে পারে না, এটা রাষ্ট্রের কাজ নয়।
জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বেসরকারিকরণ নীতি গ্রহণ করেন এবং বেসরকারি মালিকদের হাতে তাদের প্রতিষ্ঠান ফিরিয়ে দেন। জিয়াউর রহমান একজন সৎলোক ছিলেন এবং তার মতো নেতা পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। তিনি একজন সৈনিক হয়েও আঞ্চলিক অর্থনীতির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন এবং সার্ক গঠন করেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান সার্কের প্রতিষ্ঠাতা হওয়ার কারণে শেখ হাসিনা এটির গুরুত্ব দেননি। সার্ক কার্যকর হলে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভূত উন্নতি হতে পারত। অন্যদিকে ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার আমলে মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে নতুন গতিপথ তৈরি হয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা বজায় ছিল। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল খুবই সীমিত। তার শাসনামলে রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো ধরনের ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খালেদা জিয়া অর্থমন্ত্রী বা গভর্নরের কাজে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতেন না। তার দুই আমলে (১৯৯১-৯৬ এবং ২০০১-০৬) দেশের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির মধ্যেই ছিল। কিন্তু যিনি (শেখ হাসিনা) ভারতে পালিয়ে গেছেন, তিনি দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। দেশের ওপর ১০৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়ে সেগুলোর বড় অংশই পাচার করা হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ড. এম মাসরুর রিয়াজের মন্তব্য, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের কত বড় উপকার করেছেন, এটা কল্পনাও করা যায় না। বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করেছেন। বেসরকারি খাতই এখন অর্থনীতির চালিকাশক্তি। কর্মসংস্থান, আয়-উপার্জন ও জাতীয় সম্পদ গড়ার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বেসরকারি খাতের অবদানই সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি অর্থাৎ উদারীকরণ নীতি গ্রহণ করে। চালু করে ভ্যাটব্যবস্থা। সরকারের রাজস্ব আয়ের এখন বড় উৎসই হলো ভ্যাট। রাজস্ব আয়ের দুই-তৃতীয়াংশই আসছে এ খাত থেকে। এটি চালু না হলে সরকারের পক্ষে এত বড় আকারের বাজেট দেওয়া সম্ভব হতো না। সরকারের রাজস্ব আহরণে ভ্যাটের পর আর নতুন কোনো খাত যুক্ত হয়নি বলেও জানান এই বিশ্লেষক।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবুল কাশেম খানের ভাষ্য, বাংলাদেশের অর্থনীতির ৮০ শতাংশই বিএনপির অবদান। বেসরকারি খাতের বিকাশ ও খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি তৈরি এবং জনশক্তি রপ্তানির উদ্যোগÑসবকিছুই জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই হয়েছে। খুব স্বল্প সময়ের শাসনামলে তিনি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত থেকে দেশের অর্থনীতিকে টেনে তোলেন।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জিয়াউর রহমানের নেওয়া কর্মসূচিকে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক কর্মসূচি ও অনন্য উদ্যোগ আখ্যা দিয়ে এই অর্থনীতি বিশ্লেষক বলেন, তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষই ছিল দরিদ্র, অবকাঠামো দুর্বল, প্রতিষ্ঠান চলে না। তখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। তখন বিতর্ক হতো, অধিক জনসংখ্যার কারণে দরিদ্রতা না, দরিদ্রতার কারণে অধিক জনসংখ্যা। জিয়াউর রহমান সে বিতর্কে না গিয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আইইএম (ইনফরমেশন এডুকেশন মোটিভেশন) কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এ কর্মসূচির আওতায় ৩০ হাজার নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়, যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেন এবং এ জন্য বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ করেন। এ কর্মসূচির মাধ্যমে জিয়াউর রহমান দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে খুবই সফল হন এবং এ ক্ষেত্রে তিনি চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।
লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়। একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে লড়াই করেছিলেন এ দেশের আপামর জনতা। কিন্তু মুজিব আমলের অপশাসন, সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের কারণে স্বল্প সময়ে তাদের সে স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটে। স্বাধীনতার প্রথমবার্ষিকীতে অর্থাৎ ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ দেশের সব বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ঘোষণা দেন শেখ মুজিব। সমাজতন্ত্র কায়েমের নামে ১৫ লাখ টাকার বেশি মূল্যের স্থাবর সম্পত্তিসংবলিত সব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের পথ রুদ্ধ করা হয়। ব্যক্তি খাতে পুঁজির প্রয়োজনীয়তা না থাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশের শেয়ারবাজার। কিন্তু জাতীয়করণের নামে মূলত শিল্প কল-কারখানাগুলোয় দলীয়করণ এবং অবাধ লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটে স্বাধীনতার তিন বছরের মাথায় ১৯৭৪ সালে চরম এক দুর্ভিক্ষের শিকার হতে হয় এ দেশের জনগণকে। ‘দুর্ভিক্ষ খাদ্যের অভাবে হয় না, হয় বণ্টনের অভাবে’Ñভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দুর্ভিক্ষের কারণ পর্যালোচনা করে এ তত্ত্ব দিয়েছিলেন। মজুতদারি ও কালোবাজারি চক্রের শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। আর এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ছিল আওয়ামী লীগের শীর্ষ থেকে স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল, যাতে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী অবস্থায় পৌঁছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে খাবার কেনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সরকারি হিসাবেই ২৬ হাজার লোক দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারিয়েছিল। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা কয়েক লাখের মতো। চরম অনাচার, অরাজক পরিস্থিতি আর সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস ওঠে। সবদিকে হতাশা ও বঞ্চনার ক্ষোভ। দেশ আখ্যা পায় ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ মুজিব আমৃত্যু ক্ষমতার মসনদ ধরে রাখতে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল চালু করেন।
১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাকশাল গঠনের সাত মাসের মাথায় ১৫ আগস্ট সামরিক অভ্যুত্থানে সপরিবারে নিহত হন শেখ মুজিব। কিন্তু এমন এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলেও ছিল না কোনো শোকের আবহ। মানুষ যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচেÑওই সময় প্রকাশিত পত্র-পত্রিকা ঘাঁটলে এমন তথ্য পাওয়া যাবে। শেখ মুজিব নিহত হওয়ার পর বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হন জিয়াউর রহমান। তিনি সেই মুখ, মেজর জিয়া, যার কণ্ঠস্বরে ধ্বনিত হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। একটি দিশাহীন জাতি তার মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছিল তার সেই ঘোষণায়। তেমনি একটি হতোদ্যম জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। অর্থনীতিতে উদারীকরণের যাত্রা শুরু হয়। নেওয়া হয় বেসরকারিকরণের উদ্যোগ, রুদ্ধতার লাগাম খুলে দেওয়া হয় বেসরকারি বিনিয়োগে, আবার চালু হয় শেয়ারবাজার। শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধা না থাকায় কৃষকরা জমিতে ফসল ফলাতে পারত না। খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে সে সমস্যার সমাধান করেন জিয়াউর রহমান। শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধার ফলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাও ঘুরতে শুরু করে। ১৯৭৪ সালে খাদ্যাভাবে প্রাণ হারানো জাতি জিয়ার আমলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাই শুধু নয়, বার্মায় (বর্তমানে মিয়ানমার) চাল রপ্তানিও প্রত্যক্ষ করে।
১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আমাদের রপ্তানি পাটের ওপর নির্ভরশীল ছিল। জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই তৈরি পোশাক খাতের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। পোশাক খাতকে সহায়তা দেওয়ার জন্য বন্ডেড ওয়্যারহাউস এবং ব্যাক টু ব্যাক এলসি সুবিধা চালু করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত প্রবাসী আয়।
জিয়াউর রহমানের আমলে শুরু হয় জনশক্তি রপ্তানি। তিনি সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগে গ্রহণ করেন। মূলত সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে অন্য আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভাতৃত্ববোধের সম্পর্ক তৈরি করেন তিনি। তার সুফল ভোগ করছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ১৯৯১ সালে বিএনপি মুক্তবাজার অর্থনীতি গ্রহণ করে। অর্থনীতিতে বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাজেট বাস্তবায়নে বৈদেশিক সাহায্যনির্ভরতা কমাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯১ সালে ভ্যাট প্রথা চালু করা হয়।
লেখক : অর্থনৈতিক রিপোর্টার, আমার দেশ
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৪ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৫ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৫ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে