ইরান – ইসরাইল যুদ্ধ
ড. মো. আদনান আরিফ সালিম
মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতায় ইসরাইল একক কোনো দেশ না, তারা পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিনিধি। নিয়মনীতি, লোকদেখানো মানবাধিকার আর নানা চুক্তির কারণে পশ্চিমারা যেই কাজগুলো করতে পারছে না, তাদের হয়ে সেই ‘ডার্টি গেম’ খেলে দিচ্ছে ইসরাইল।
পশ্চিমাদের প্রচ্ছন্ন অংশগ্রহণ, পূর্ণ সমর্থন আর ইশারায় তারা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনকে। সেখানকার হাজার-লাখো শিশুর কান্না, আহতের আর্তনাদ আর মরণচিৎকার বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ার আগেই ইসরাইলকে নতুনভাবে ইরানে হামলার জন্য মাঠে নামিয়েছে পশ্চিমারা। তারা চাইছে তেলের স্বর্গ নামে পরিচিত এই এলাকায় নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার করতে। আমেরিকা কিংবা ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলো সরাসরি হামলা করে ইরানকে গুঁড়িয়ে দিতে পারছে না। তাই তারা তাদের পক্ষ থেকে ইসরাইলকে মাঠে নামিয়েছে। তাদের হয়ে দুর্বিনীত এই নোংরা কাজটা ইসরাইল করে দিচ্ছে দেখে কমবেশি তারা সবাই খুশি এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা তা প্রকাশও করছেন।
অনেকে ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা বললেও জার্মান চ্যান্সেলর সম্প্রতি যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা সেখানে তার এই খোলামেলা বক্তব্য বাস্তবতার নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চিন্তার খোরাক জোগায়। তিনি সরাসরি বলেই ফেললেন—‘ইসরাইল আমাদের হয়ে যেই দুর্গন্ধী কাজটি করে দিচ্ছে, সেটা আমাদের সবার জন্যই করছে’। এখানে কোনো কূটনৈতিক ভণিতা নেই, বরং সরাসরি স্বীকারোক্তি। এই বক্তব্য আসলে ইসরাইলের প্রতি শুধু একক সমর্থনের প্রকাশ নয়—এটা গোটা পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গির নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। অর্থাৎ, ইসরাইল যা করছে, তা আসলে ওয়েস্টার্ন ইন্টারেস্টেরই প্রতিনিধিত্ব করছে।
এ জন্যই ইসরাইলকে নিছক একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে দেখা ঠিক নয়। এটি মূলত ইউরোপিয়ান উপনিবেশবাদের একটি সম্প্রসারণ—আরো নির্দিষ্ট করে বললে, আমেরিকার একটি কার্যকর অঙ্গরাজ্য বা সামরিক ফ্রন্টলাইন। তাই ইসরাইল ঠিক কী চায়, সেটা বোঝার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ওয়েস্ট কী চায় এবং আমেরিকা কী চায়, সেটা বোঝা।
মধ্যপ্রাচ্যকে পশ্চিম যেভাবে দেখতে চায়, তার সবচেয়ে পরিষ্কার রূপ আমরা দেখি আমিরাত, কাতার বা সাম্প্রতিক সৌদি আরবের মতো রাজতান্ত্রিক দেশে। প্রভুভক্ত কুকুর যেমন এক টুকরো রুটি কিংবা বিস্কুটের জন্য তার প্রভুর পা চেটে দেয় সারা দিন। তেমনি এই দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা তাদের অনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তাদের জিহ্বা সবসময় মার্কিনিদের জুতার শুকতালুর নিচে দিয়ে রাখে। আর এ জন্যই হয়তো এখানে গণতন্ত্র নেই, তবু এই দেশগুলো পশ্চিমাদের জিগরি দোস্ত। কারণ তাদের এই ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী রাজতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা তাদের জন্য তুলনামূলক সহজ।
পক্ষান্তরে যেসব দেশে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়, সেখানে ইসলামিক পরিচয় ও ধর্মীয় অনুভূতি রাজনৈতিক চাহিদার সঙ্গে মিশে গিয়ে পশ্চিমের কাছে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হয়ে ওঠে। আমরা জানি, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইরান—এই দেশগুলোয় নানা ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও কিছুটা হলেও জনগণের প্রতিনিধিত্ব ছিল। সেখানে আর যাই হোক সৌদি আরব, কাতার, জর্দান কিংবা আমিরাতের মতো নির্লজ্জ রাজতন্ত্র ছিল না। তাদের দেশে সামান্য হলেও মানবাধিকারের অস্তিত্ব ছিল।
এই দেশগুলোর ওপরেই নানা অজুহাতে হামলে পড়েছে পশ্চিমা শক্তি। তারা এ দেশগুলোকেই বিভিন্ন অজুহাতে ধ্বংস করেছে। তাদের নানা অজুহাতের কারণে-অকারণে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা। অথচ রাজতান্ত্রিক কোনো রাষ্ট্রে পশ্চিমা হস্তক্ষেপ দেখা যায় না। কারণ সেসব দেশ খেয়াল খুশিমতো তাদের জন্য পরিচালনাযোগ্য। আর এই দেশগুলোর কথিত রাষ্ট্রপ্রধানরা তাদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকে পশ্চিমাদের পদলেহন করার জন্য। ওদিকে ইসলামিক বিশ্বের যে অংশে কিছুটা হলেও রাজনৈতিক সচেতনতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ছোঁয়া আছে, সেটাই পশ্চিমের আসল শঙ্কার উৎস। আর তাদের সেই শঙ্কা থেকে ধ্বংস করা হয়েছিল লিবিয়া, মিসর, ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানকে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইরানের নামটিও।
এখানে কোনো বিশ্লেষণ কিংবা ব্যাখ্যা এ জন্যই জরুরি নয় যে, সভ্যতার সংঘাতের প্রাচীনতম সূত্র মেনে সেই ক্রুসেড এখনো চলমান। বাস্তবে ইসরাইলের ইরান আক্রমণ মূলত এক রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেক রাষ্ট্রের নিছক সংঘাত নয়। বরং এটি ইসলামি সভ্যতার সঙ্গে পশ্চিমা জুদিও বাইব্লিক্যাল সভ্যতার চিরন্তন সংঘাতে বর্তমান রূপ। তবে আজকের জুদিও-বাইব্লিক্যাল আক্রমণকারীরা তাদের সভ্যতাকে চিরচেনা ধর্মীয় অনুশাসনের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখতে পারেনি। তারা বাস্তবে তাদের ধর্মকে তারা সংস্কৃতির অংশ হিসেবে রূপান্তর করেছে। তাদের এই সংস্কৃতির চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে হিংসা, জিঘাংসা আর সীমাহীন রক্তপাত।
তাহলে তারা যে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতা এই বুলি ফেরি করে বেড়াচ্ছে, তার বাস্তব উৎস কোথায়? বাস্তবে এগুলো অনেকটা প্রতিষ্ঠিত গালগল্পের মতো, যা মূলত তাদের ধর্ম তথা রূপান্তরিত ধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত। আর তাদের চিরচেনা সংঘাতময়, রক্তাক্ত দখলের সংস্কৃতির আধুনিক ব্যাখ্যা তুলে ধরার চেষ্টা করেছে এভাবেই। বাস্তবে সুন্দর এই ব্যাখ্যা নিয়েই তারা আজকের বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করছে। আর ফলাফল হিসেবে দখল করছে একের পর এক দেশ।
নানা কারণে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো এখন এক ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছে। কারণ এদের অধিকাংশের আইন ও রাষ্ট্রকাঠামোয় ইসলামের অস্তিত্ব নেই। তারা যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে নামে ইসলামি, কাজে-কর্মে-আইনে-বিচারে এখনো পোস্ট-কলোনিয়াল ইউরোপিয়ান ফ্রেমওয়ার্কের অধীন।
নবগঠিত এই রাষ্ট্রকাঠামো একদিকে যেমন পুরোপুরি পশ্চিমের প্রতিনিধিত্ব করে না, অন্যদিকে তারা ইসলামি চিন্তা ও চর্চাকে পুরোপুরি ধারণ করতে পারে না। ফলে এই দেশগুলোর অবস্থা সেই ক্ষিপ্র গতির কুকুরের মতো, যে দৌড়ে পার হতে দিয়ে কোনো বেড়ার ফাটা বাঁশের চিপায় তার অণ্ডকোষ আটকে ফেলে মরণচিৎকার দিচ্ছে। কারণ পশ্চিম কোনো প্রতিষ্ঠিত, শিক্ষিত ও সভরেইন মুসলিম কিংবা লিবারেল ইসলামি রাষ্ট্রকে সহ্য করে না। তাদের খুব পছন্দ বাদশাহী, গোলামি কিংবা শরণার্থীর সারিতে দাঁড়িয়ে অশ্রুজল ফেলতে থাকা মুসলিম সম্প্রদায়কে।
ইসলামি রাষ্ট্রগুলো না পারছে ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে পুরোপুরি আলাদা করে দিতে, না পারছে আইনি কাঠামো ও রাজনীতি ইসলামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুনর্গঠন করতে। প্রথম পথটি ধীরে ধীরে গ্রহণ করছে কিছু দেশ। তারা পশ্চিমের পুরোপুরি ভৃত্য হিসেবে বেশ নন্দিত হয়েছে। তারা হাজারো অপকর্ম করলে কেউ তাদের টিকি স্পর্শ করতে পারছে না। যার ফলে এক ধরনের হাইব্রিড সিস্টেম দেখা যাচ্ছে ইসলামি রাষ্ট্রের নামে আর তার বেনিফিট পুরোটাই যাচ্ছে পশ্চিমাদের ঘরে।
পুরাতন এই দ্বন্দ্ব আরো জটিল হয়ে ওঠে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। এ যুদ্ধকে শুধু মুসলিম বনাম ইহুদি রাষ্ট্রের লড়াই হিসেবে দেখলে তা ভুল হবে। এটি পশ্চিমা ব্লকের একটি পরিকল্পিত ও কাঠামোগত অভিযানের অংশ। জি-৭ তাদের বৈঠকের পর কোনো ধরনের ভিন্নমত পোষণ না করে ইসরাইলের হিংস্রতার পক্ষেই একপেশে বিবৃতি দিচ্ছে। এই যে তাদের অন্ধ সমর্থন, অনৈতিকভাবে খুনিদের পাশে থাকা, তা আসলে তাদের এই দীর্ঘমেয়াদি সভ্যতাগত অবস্থানেরই অংশ।
আমরা তর্কের প্রয়োজনে মেনে নিচ্ছি ইরান নিখুঁত রাষ্ট্র নয়—তবু আন্তর্জাতিক আইনের বিচারে তার আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, ইরানের যেসব মিত্র আছে—রাশিয়া, চীন বা কিছু আরব রাষ্ট্র—তারা প্রকাশ্যে ইরানের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। কারণ এদের সম্পর্ক আদর্শগত নয়, বরং শুধু স্বার্থনির্ভর। চীন, রাশিয়া ও ইরানের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক বিভাজন আজও স্পষ্ট। ইরান পারসিয়ান—আরব নয়, আবার পশ্চিমাও নয়। এই বিভাজনের মুখে দাঁড়িয়ে ইরান সাংস্কৃতিক দিক থেকে পুরোপুরি একা এক নিঃসঙ্গ শেরপা।
ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার মূল কারণ ইরান সম্ভবত একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, যাকে এখনো পশ্চিম ও আমেরিকা রাজনৈতিক ইসলাম বিষয়ে অবস্থানের সূত্র ধরে চরম মাথাব্যথার কারণ মনে করে। তাদের হিসাবে তাই ইরানকে যদি সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া যায়, ইরানকে যদি পুরোপুরি বোমা মেরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যায়; তাহলে আর কিছু না হোক পশ্চিমা সভ্যতার এক নিরঙ্কুশ জয় বলে তারা মনে করে।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার নিযুক্ত ইসরাইলের খুনে বাহিনীর আক্রমণে ইরান ভূলুণ্ঠিত হলেই কী তাদের হাজার বছরের সভ্যতার সংঘাত শেষ হবে? ওদিকে ইরান যদি ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে কি এতে ইসলামিক বিশ্ব নীরব থাকবে? শিয়া-সুন্নি মতবাদ সামনে এনে পেট্রোডলার খাওয়া সারমেয়েতুল্য মুফতিরা আনন্দে হাততালি দেবে? নাকি তখন হয়তো নতুন নতুন মোড়কে, নতুন নতুন ইনসার্জেন্সির জন্ম হবে। কারণটা আমি আগেই বলে দিয়েছি, নব্য ক্রুসেডের এই যুদ্ধ রাষ্ট্রের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়—এটা আদর্শ, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের মধ্যে লড়াই।
আমি মনে করি, হান্টিংটনকে ভুল প্রমাণ করে এই যুদ্ধ এত সহজে শেষ হবে না। আমরা সবাই চেয়ে দেখব সবার চোখের সামনেই এই সংঘর্ষ গভীর থেকে গভীরতর হয়ে উঠবে। এতদিন ইসরাইল একা মেরে এসেছে। নতুন করে বিশ্ব দেখবে তাদেরও মার খেতে হচ্ছে। আর আঘাত পাল্টা আঘাতে জন্ম নেবে নিত্যনতুন হিংস্রতা। তবে ইসরাইলের লাগাতার হামলার ও হত্যাযজ্ঞের বিপরীতে পাল্টা আঘাত কিংবা আত্মরক্ষার গল্পগুলো অনেক ক্লিশে হয়ে গেছে। তাদের ভয়ানক হিংস্রতার বিপরীতে প্রতিপক্ষের জবাব এতটাই ঠুনকো ছিল যে এতদিন ধর্তব্যের মধ্যেই ছিল না। এই প্রথম দেখা যাচ্ছে ইসরাইলে গিয়ে মিসাইল পড়ছে।
সেখানকার ভবনগুলোর দু-একটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেকে ভাবছেন ইউক্রেন-রাশিয়ার লড়াই যে পরিস্থিতির দিকে গিয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতি তেমনও হতে পারে। তবে এই অনন্ত যুদ্ধের ফলাফল নিয়ে হুট করে মন্তব্যের দিকে না যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। আত্মরক্ষায় ব্যস্ত ইরানের হামলার প্রতিদিন দু-চারটি ইসরাইলি বাড়িঘর যে ধ্বংস হচ্ছে, পত্রিকার শিরোনাম হচ্ছে, তাতেই বা মন্দ কী? আবহমানকাল থেকে আদর্শ, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের সেই ক্রুসেড এখনো চলছে নিঃসন্দেহে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতায় ইসরাইল একক কোনো দেশ না, তারা পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিনিধি। নিয়মনীতি, লোকদেখানো মানবাধিকার আর নানা চুক্তির কারণে পশ্চিমারা যেই কাজগুলো করতে পারছে না, তাদের হয়ে সেই ‘ডার্টি গেম’ খেলে দিচ্ছে ইসরাইল।
পশ্চিমাদের প্রচ্ছন্ন অংশগ্রহণ, পূর্ণ সমর্থন আর ইশারায় তারা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনকে। সেখানকার হাজার-লাখো শিশুর কান্না, আহতের আর্তনাদ আর মরণচিৎকার বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ার আগেই ইসরাইলকে নতুনভাবে ইরানে হামলার জন্য মাঠে নামিয়েছে পশ্চিমারা। তারা চাইছে তেলের স্বর্গ নামে পরিচিত এই এলাকায় নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার করতে। আমেরিকা কিংবা ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলো সরাসরি হামলা করে ইরানকে গুঁড়িয়ে দিতে পারছে না। তাই তারা তাদের পক্ষ থেকে ইসরাইলকে মাঠে নামিয়েছে। তাদের হয়ে দুর্বিনীত এই নোংরা কাজটা ইসরাইল করে দিচ্ছে দেখে কমবেশি তারা সবাই খুশি এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা তা প্রকাশও করছেন।
অনেকে ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা বললেও জার্মান চ্যান্সেলর সম্প্রতি যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা সেখানে তার এই খোলামেলা বক্তব্য বাস্তবতার নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চিন্তার খোরাক জোগায়। তিনি সরাসরি বলেই ফেললেন—‘ইসরাইল আমাদের হয়ে যেই দুর্গন্ধী কাজটি করে দিচ্ছে, সেটা আমাদের সবার জন্যই করছে’। এখানে কোনো কূটনৈতিক ভণিতা নেই, বরং সরাসরি স্বীকারোক্তি। এই বক্তব্য আসলে ইসরাইলের প্রতি শুধু একক সমর্থনের প্রকাশ নয়—এটা গোটা পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গির নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। অর্থাৎ, ইসরাইল যা করছে, তা আসলে ওয়েস্টার্ন ইন্টারেস্টেরই প্রতিনিধিত্ব করছে।
এ জন্যই ইসরাইলকে নিছক একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে দেখা ঠিক নয়। এটি মূলত ইউরোপিয়ান উপনিবেশবাদের একটি সম্প্রসারণ—আরো নির্দিষ্ট করে বললে, আমেরিকার একটি কার্যকর অঙ্গরাজ্য বা সামরিক ফ্রন্টলাইন। তাই ইসরাইল ঠিক কী চায়, সেটা বোঝার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ওয়েস্ট কী চায় এবং আমেরিকা কী চায়, সেটা বোঝা।
মধ্যপ্রাচ্যকে পশ্চিম যেভাবে দেখতে চায়, তার সবচেয়ে পরিষ্কার রূপ আমরা দেখি আমিরাত, কাতার বা সাম্প্রতিক সৌদি আরবের মতো রাজতান্ত্রিক দেশে। প্রভুভক্ত কুকুর যেমন এক টুকরো রুটি কিংবা বিস্কুটের জন্য তার প্রভুর পা চেটে দেয় সারা দিন। তেমনি এই দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা তাদের অনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তাদের জিহ্বা সবসময় মার্কিনিদের জুতার শুকতালুর নিচে দিয়ে রাখে। আর এ জন্যই হয়তো এখানে গণতন্ত্র নেই, তবু এই দেশগুলো পশ্চিমাদের জিগরি দোস্ত। কারণ তাদের এই ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী রাজতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা তাদের জন্য তুলনামূলক সহজ।
পক্ষান্তরে যেসব দেশে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়, সেখানে ইসলামিক পরিচয় ও ধর্মীয় অনুভূতি রাজনৈতিক চাহিদার সঙ্গে মিশে গিয়ে পশ্চিমের কাছে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হয়ে ওঠে। আমরা জানি, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইরান—এই দেশগুলোয় নানা ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও কিছুটা হলেও জনগণের প্রতিনিধিত্ব ছিল। সেখানে আর যাই হোক সৌদি আরব, কাতার, জর্দান কিংবা আমিরাতের মতো নির্লজ্জ রাজতন্ত্র ছিল না। তাদের দেশে সামান্য হলেও মানবাধিকারের অস্তিত্ব ছিল।
এই দেশগুলোর ওপরেই নানা অজুহাতে হামলে পড়েছে পশ্চিমা শক্তি। তারা এ দেশগুলোকেই বিভিন্ন অজুহাতে ধ্বংস করেছে। তাদের নানা অজুহাতের কারণে-অকারণে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা। অথচ রাজতান্ত্রিক কোনো রাষ্ট্রে পশ্চিমা হস্তক্ষেপ দেখা যায় না। কারণ সেসব দেশ খেয়াল খুশিমতো তাদের জন্য পরিচালনাযোগ্য। আর এই দেশগুলোর কথিত রাষ্ট্রপ্রধানরা তাদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকে পশ্চিমাদের পদলেহন করার জন্য। ওদিকে ইসলামিক বিশ্বের যে অংশে কিছুটা হলেও রাজনৈতিক সচেতনতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ছোঁয়া আছে, সেটাই পশ্চিমের আসল শঙ্কার উৎস। আর তাদের সেই শঙ্কা থেকে ধ্বংস করা হয়েছিল লিবিয়া, মিসর, ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানকে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইরানের নামটিও।
এখানে কোনো বিশ্লেষণ কিংবা ব্যাখ্যা এ জন্যই জরুরি নয় যে, সভ্যতার সংঘাতের প্রাচীনতম সূত্র মেনে সেই ক্রুসেড এখনো চলমান। বাস্তবে ইসরাইলের ইরান আক্রমণ মূলত এক রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেক রাষ্ট্রের নিছক সংঘাত নয়। বরং এটি ইসলামি সভ্যতার সঙ্গে পশ্চিমা জুদিও বাইব্লিক্যাল সভ্যতার চিরন্তন সংঘাতে বর্তমান রূপ। তবে আজকের জুদিও-বাইব্লিক্যাল আক্রমণকারীরা তাদের সভ্যতাকে চিরচেনা ধর্মীয় অনুশাসনের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখতে পারেনি। তারা বাস্তবে তাদের ধর্মকে তারা সংস্কৃতির অংশ হিসেবে রূপান্তর করেছে। তাদের এই সংস্কৃতির চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে হিংসা, জিঘাংসা আর সীমাহীন রক্তপাত।
তাহলে তারা যে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতা এই বুলি ফেরি করে বেড়াচ্ছে, তার বাস্তব উৎস কোথায়? বাস্তবে এগুলো অনেকটা প্রতিষ্ঠিত গালগল্পের মতো, যা মূলত তাদের ধর্ম তথা রূপান্তরিত ধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত। আর তাদের চিরচেনা সংঘাতময়, রক্তাক্ত দখলের সংস্কৃতির আধুনিক ব্যাখ্যা তুলে ধরার চেষ্টা করেছে এভাবেই। বাস্তবে সুন্দর এই ব্যাখ্যা নিয়েই তারা আজকের বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করছে। আর ফলাফল হিসেবে দখল করছে একের পর এক দেশ।
নানা কারণে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো এখন এক ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছে। কারণ এদের অধিকাংশের আইন ও রাষ্ট্রকাঠামোয় ইসলামের অস্তিত্ব নেই। তারা যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে নামে ইসলামি, কাজে-কর্মে-আইনে-বিচারে এখনো পোস্ট-কলোনিয়াল ইউরোপিয়ান ফ্রেমওয়ার্কের অধীন।
নবগঠিত এই রাষ্ট্রকাঠামো একদিকে যেমন পুরোপুরি পশ্চিমের প্রতিনিধিত্ব করে না, অন্যদিকে তারা ইসলামি চিন্তা ও চর্চাকে পুরোপুরি ধারণ করতে পারে না। ফলে এই দেশগুলোর অবস্থা সেই ক্ষিপ্র গতির কুকুরের মতো, যে দৌড়ে পার হতে দিয়ে কোনো বেড়ার ফাটা বাঁশের চিপায় তার অণ্ডকোষ আটকে ফেলে মরণচিৎকার দিচ্ছে। কারণ পশ্চিম কোনো প্রতিষ্ঠিত, শিক্ষিত ও সভরেইন মুসলিম কিংবা লিবারেল ইসলামি রাষ্ট্রকে সহ্য করে না। তাদের খুব পছন্দ বাদশাহী, গোলামি কিংবা শরণার্থীর সারিতে দাঁড়িয়ে অশ্রুজল ফেলতে থাকা মুসলিম সম্প্রদায়কে।
ইসলামি রাষ্ট্রগুলো না পারছে ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে পুরোপুরি আলাদা করে দিতে, না পারছে আইনি কাঠামো ও রাজনীতি ইসলামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুনর্গঠন করতে। প্রথম পথটি ধীরে ধীরে গ্রহণ করছে কিছু দেশ। তারা পশ্চিমের পুরোপুরি ভৃত্য হিসেবে বেশ নন্দিত হয়েছে। তারা হাজারো অপকর্ম করলে কেউ তাদের টিকি স্পর্শ করতে পারছে না। যার ফলে এক ধরনের হাইব্রিড সিস্টেম দেখা যাচ্ছে ইসলামি রাষ্ট্রের নামে আর তার বেনিফিট পুরোটাই যাচ্ছে পশ্চিমাদের ঘরে।
পুরাতন এই দ্বন্দ্ব আরো জটিল হয়ে ওঠে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। এ যুদ্ধকে শুধু মুসলিম বনাম ইহুদি রাষ্ট্রের লড়াই হিসেবে দেখলে তা ভুল হবে। এটি পশ্চিমা ব্লকের একটি পরিকল্পিত ও কাঠামোগত অভিযানের অংশ। জি-৭ তাদের বৈঠকের পর কোনো ধরনের ভিন্নমত পোষণ না করে ইসরাইলের হিংস্রতার পক্ষেই একপেশে বিবৃতি দিচ্ছে। এই যে তাদের অন্ধ সমর্থন, অনৈতিকভাবে খুনিদের পাশে থাকা, তা আসলে তাদের এই দীর্ঘমেয়াদি সভ্যতাগত অবস্থানেরই অংশ।
আমরা তর্কের প্রয়োজনে মেনে নিচ্ছি ইরান নিখুঁত রাষ্ট্র নয়—তবু আন্তর্জাতিক আইনের বিচারে তার আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, ইরানের যেসব মিত্র আছে—রাশিয়া, চীন বা কিছু আরব রাষ্ট্র—তারা প্রকাশ্যে ইরানের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। কারণ এদের সম্পর্ক আদর্শগত নয়, বরং শুধু স্বার্থনির্ভর। চীন, রাশিয়া ও ইরানের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক বিভাজন আজও স্পষ্ট। ইরান পারসিয়ান—আরব নয়, আবার পশ্চিমাও নয়। এই বিভাজনের মুখে দাঁড়িয়ে ইরান সাংস্কৃতিক দিক থেকে পুরোপুরি একা এক নিঃসঙ্গ শেরপা।
ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার মূল কারণ ইরান সম্ভবত একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, যাকে এখনো পশ্চিম ও আমেরিকা রাজনৈতিক ইসলাম বিষয়ে অবস্থানের সূত্র ধরে চরম মাথাব্যথার কারণ মনে করে। তাদের হিসাবে তাই ইরানকে যদি সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া যায়, ইরানকে যদি পুরোপুরি বোমা মেরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যায়; তাহলে আর কিছু না হোক পশ্চিমা সভ্যতার এক নিরঙ্কুশ জয় বলে তারা মনে করে।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার নিযুক্ত ইসরাইলের খুনে বাহিনীর আক্রমণে ইরান ভূলুণ্ঠিত হলেই কী তাদের হাজার বছরের সভ্যতার সংঘাত শেষ হবে? ওদিকে ইরান যদি ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে কি এতে ইসলামিক বিশ্ব নীরব থাকবে? শিয়া-সুন্নি মতবাদ সামনে এনে পেট্রোডলার খাওয়া সারমেয়েতুল্য মুফতিরা আনন্দে হাততালি দেবে? নাকি তখন হয়তো নতুন নতুন মোড়কে, নতুন নতুন ইনসার্জেন্সির জন্ম হবে। কারণটা আমি আগেই বলে দিয়েছি, নব্য ক্রুসেডের এই যুদ্ধ রাষ্ট্রের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়—এটা আদর্শ, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের মধ্যে লড়াই।
আমি মনে করি, হান্টিংটনকে ভুল প্রমাণ করে এই যুদ্ধ এত সহজে শেষ হবে না। আমরা সবাই চেয়ে দেখব সবার চোখের সামনেই এই সংঘর্ষ গভীর থেকে গভীরতর হয়ে উঠবে। এতদিন ইসরাইল একা মেরে এসেছে। নতুন করে বিশ্ব দেখবে তাদেরও মার খেতে হচ্ছে। আর আঘাত পাল্টা আঘাতে জন্ম নেবে নিত্যনতুন হিংস্রতা। তবে ইসরাইলের লাগাতার হামলার ও হত্যাযজ্ঞের বিপরীতে পাল্টা আঘাত কিংবা আত্মরক্ষার গল্পগুলো অনেক ক্লিশে হয়ে গেছে। তাদের ভয়ানক হিংস্রতার বিপরীতে প্রতিপক্ষের জবাব এতটাই ঠুনকো ছিল যে এতদিন ধর্তব্যের মধ্যেই ছিল না। এই প্রথম দেখা যাচ্ছে ইসরাইলে গিয়ে মিসাইল পড়ছে।
সেখানকার ভবনগুলোর দু-একটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেকে ভাবছেন ইউক্রেন-রাশিয়ার লড়াই যে পরিস্থিতির দিকে গিয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতি তেমনও হতে পারে। তবে এই অনন্ত যুদ্ধের ফলাফল নিয়ে হুট করে মন্তব্যের দিকে না যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। আত্মরক্ষায় ব্যস্ত ইরানের হামলার প্রতিদিন দু-চারটি ইসরাইলি বাড়িঘর যে ধ্বংস হচ্ছে, পত্রিকার শিরোনাম হচ্ছে, তাতেই বা মন্দ কী? আবহমানকাল থেকে আদর্শ, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের সেই ক্রুসেড এখনো চলছে নিঃসন্দেহে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৮ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৮ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৮ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে