বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানদের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যে

মীর সালমান শামিল
প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯: ৫৯

‘বাঙালি’ শব্দটি শুনলেই আপনার মনে কীসের ছবি ভেসে ওঠে—চ্যাটজিপিটি এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে, ‘বাঙালি’। শব্দটি শুনলেই আমার মনে যে ছবিটা ভেসে ওঠে, তা খুবই রঙিন, প্রাণবন্ত আর আবেগঘন। আমি কল্পনা করি—একটি সংস্কৃতিমনস্ক সমাজ, যেখানে রবীন্দ্রসংগীত বাজছে; বইয়ের গন্ধে ভরা এক বিকাল, চায়ের কাপ হাতে একদল মানুষ তর্ক করছে রাজনীতি, সাহিত্য ও সিনেমা নিয়ে। মনে পড়ে দুর্গাপুজোর ভিড়, ধুনুচি নাচ, খিচুড়ি আর লাবড়া। একদিকে ভোজনরসিকতা—ইলিশ, ভাত, আলু পোস্ত; অন্যদিকে এক গভীর আবেগ—ভাষার প্রতি, মাটির প্রতি, ইতিহাস আর স্বাধীনতার লড়াইয়ের প্রতি।

বিজ্ঞাপন

বাঙালি মানে একদিকে বিদ্যাসাগর, নজরুল, সত্যজিৎ রায়; আবার অন্যদিকে পাড়ার মোড়ে আড্ডা, হাসি-ঠাট্টা আর অন্তরে একধরনের স্নিগ্ধ আবেগ।

আর ডিপসিকের উত্তর, আমাদের মনে ভেসে ওঠে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, দুর্গাপূজা, পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা, রবীন্দ্রসংগীত কিংবা ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত এক উৎসবমুখর সমাজের ছবি।

কিন্তু প্রশ্ন হলো—বাংলা ভাষায় কথা বলা সব মানুষ কি এই একই সংস্কৃতির ধারক? যদি তাই হয়, তাহলে বাংলাদেশের মুসলমানরা, যারা বাংলায় কথা বলে, কিন্তু তাদের জীবনাচার, উৎসব, বিশ্বাস, জাতীয় বীর, খাবার ও ইতিহাস কলকাতাকেন্দ্রিক ‘বাঙালিয়ানা’ থেকে ভিন্ন—তাদের পরিচয় কী?

ভাষা সংস্কৃতির একটি উপাদান মাত্র, কিন্তু সংস্কৃতি গঠিত হয় ইতিহাস, ধর্ম, খাদ্যাভ্যাস, উৎসব, শিল্প ও রাজনৈতিক সংগ্রামের সমন্বয়ে। বিশ্বজুড়ে এর অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে:

  • মেক্সিকো : স্প্যানিশ ভাষা ব্যবহার করলেও তাদের সংস্কৃতি আজটেক-মায়া সভ্যতা ও ক্যাথলিক ধর্মের মিশ্রণে গঠিত।
  • আমেরিকা : ইংরেজি ভাষার দেশ হলেও তাদের সংস্কৃতি আদিবাসী, আফ্রিকান ও ইউরোপীয় প্রভাবের সমন্বয়।
  • আলজেরিয়া : আরবি ভাষায় কথা বলে, কিন্তু তাদের সংস্কৃতি ফরাসি উপনিবেশ ও বিভিন্ন যাযাবর জাতির ঐতিহ্য দ্বারা প্রভাবিত।

এমন আরো ডজন খানেক জাতি ও দেশের উদাহরণ দেওয়া যাবে। একইভাবে বাংলাদেশের মুসলমানরা বাংলা ভাষায় কথা বলে, কিন্তু তাদের সংস্কৃতি ইসলামিক ঐতিহ্য, বঙ্গীয় লোকায়ত সংস্কৃতি এবং বাংলা সালতানাত, সুবাহ বাংলা, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজি, ইলিয়াস শাহ, মুনশি মোহাম্মাদ মেহেরুল্লাহ, শরিয়াতুল্লাহ, ফকির মজনু শাহ্‌র মতো ঐতিহাসিক ব্যক্তি ও ঘটনাবলি দ্বারা গঠিত।

এই বাঙালিয়ানার সূচনা হলো কীভাবে?

এজন্য আমাদের এই এলাকার সামাজিক ইতিহাস বিবেচনায় রাখা জরুরি। আমরা এখন হিন্দু ধর্মকে যেমন সংগঠিত ধর্ম হিসেবে দেখি, ৩০০-৪০০ বছর আগে ব্যাপারটা এমন ছিল না, এই নামটাও ছিল না। এই উপমহাদেশে বিভিন্ন প্রকৃতি ও প্রতিমা পূজারি সম্প্রদায় ছিল। তারা নিজেদের এক ধর্মের মানুষ হিসেবেও বিবেচনা করত না। আল বিরুনী তার মাস্টারপিস ভারততত্ত্ব বইয়ে এই ব্যাপারটা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেছেন।

ব্রিটিশরা পাক-ভারতে প্রথম আদমশুমারি করার সময় ধর্মের হিসাব করতে সিংহভাগ মূর্তি পূজারিদের ‘হিন্দু ধর্ম’ নামক টার্মের নিচে রাখে। কিন্তু তখনো উপমহাদেশের মূর্তি পূজারিরা কখনো নিজেদের হিন্দু বলত না। হিন্দু সমাজের বড় বড় পণ্ডিতেরা যেমন স্বামী বিবেকানন্দ, দয়ানন্দ সরস্বতী প্রমুখ এই ‘হিন্দু’ শব্দ ব্যবহারের বিরোধিতা করেন। এখনো বড় বড় হিন্দু গুরু ‘হিন্দু’ শব্দ ব্যবহার করে না।

কারণ এই ‘হিন্দু’ শব্দটা সংস্কৃত শব্দ নয়, এটা মুসলমানি ফারসি শব্দ। ইরান-আরব মুসলমানেরা হিন্দুকুশ পর্বতের আশেপাশে বসবাসকারীদের হিন্দু বলত; মুসলমান, পৌত্তলিক, বৌদ্ধ সবাইকেই হিন্দু বলত। পরে আস্তে আস্তে কিছু পৌত্তলিকদের হিন্দু বলা শুরু হয়। ব্রিটিশরা সেই টার্ম গ্রহণ করে।

প্রথমে কিছু মূর্তি পূজারি সম্প্রদায়কে হিন্দু হিসেবে অধিভুক্ত করে। পরে আস্তে আস্তে অন্য সম্প্রদায়কেও হিন্দু বলে অধিভুক্ত করা হয়। এই প্রক্রিয়া এখনো চলমান। যেমন সিলেটের প্রকৃতি পূজারি পাত্র সম্প্রদায়কে মাত্র বছর বিশেক আগে হিন্দু বলে অধিভুক্ত করা হয়। এভাবে ব্রিটিশরা হিন্দু ধর্মকে সংগঠিত করে।

ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইংরেজি শিখে, ইংরেজদের সহায়তা করে কোলকাতার হিন্দুরা অর্থনৈতিকভাবে বেশ শক্তিশালী হয়ে যায়। তার প্রভাব পড়ে সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, উৎসব, গান, স্থাপত্য, জীবনাচারসহ অন্য সব ক্ষেত্রে। হিন্দুদের মাঝে কলকাতাকে কেন্দ্র করে একটা রেনেসাঁস হয়। এই রেনেসাঁসের প্রধান অর্জনগুলো হলো—

১. সতীদাহ প্রথা বিলাপ।

২. বিধবা বিবাহের প্রচলন।

৩. ব্রাহ্মণদের একাধিক বিয়ে—কৌলীন্য প্রথার বিলোপ।

৪. ব্রাহ্ম ধর্মের সূচনা।

৫. বাংলা গদ্যের সূচনা।

৬. বাংলা মঞ্চনাটক, নাট্যদলের সূচনা।

৭. দুর্গাপূজার ব্যাপক বিস্তার।

এ রেনেসাঁসের পুরোধা হলেন রামমোহন, ঈশ্বরচন্দ্র, দেবেন্দ্রনাথ প্রমুখ। এই রেনেসাঁসকে কেন্দ্র করে একটা সাংস্কৃতিক ধারা গড়ে ওঠে। এই রেনেসাঁস পুরোপুরি হিন্দু ধর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মুসলমান সমাজে সতীদাহ, বিধবাবিবাহ বা কৌলীন্যের ব্যাপার কখনো ছিল না।

কিন্তু রেনেসাঁসের কেষ্টুবিষ্টুরা একে হিন্দু রেনেসাঁস এবং হিন্দু সংস্কৃতি না বলে অভিহিত করেছিল বাংলা রেনেসাঁস এবং বাঙালি সংস্কৃতি বলেছিল এবং সেখান থেকেই হালের এই ‘বাঙালিয়ানা’র শুরু।

তাদের কাজের যুক্তি আছে, কারণ হিন্দু সংস্কৃতি বললে সেটা অর্থবহ হয় না, গান্ধার থেকে আরাকান পর্যন্ত হিন্দুরা ছড়িয়ে আছে। বঙ্গের হিন্দুদের সঙ্গে তামিলনাড়ু, গুজরাট বা ইউপির হিন্দুদের সাংস্কৃতিক ভেদ বিস্তর।

উপরন্তু এই রেনেসাঁসের রথী-মহারথীরা একটা নতুন ধর্মের প্রচলন করেছিল। নাম ব্রাহ্ম ধর্ম। তারা নিজেকে বলত ব্রাহ্ম। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে রবীন্দ্রনাথ বা সত্যজিৎ রায়েরাও সবাই নিজেদের বলতেন ব্রাহ্ম।

ব্রাহ্ম ধর্মের সূচনা নিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার প্রথম আলো উপন্যাসে স্বামী বিবেকানন্দের মুখ দিয়ে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করেছে। অনেকটা এই রকম—‘ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাঙালি হিন্দুরা শিক্ষা-দীক্ষায় ব্রিটিশদের সমকক্ষ হয়ে যায়। তাদের মাঝে বন্ধুত্ব ও সামাজিক সম্পর্ক তৈরি হয়। শুধু একটা জায়গাতে তারা লজ্জায় পরে যেত, তা হলো ৩২ কোটি দেবতা। এটা নিয়ে ব্রিটিশরা হাসাহাসি করত। এই লজ্জা থেকে বাঁচতে তারা একেশ্বরের উপাসনা করার তত্ত্ব নিয়ে আসে।’

তবে বাস্তবে ব্রাহ্ম ধর্ম ছিল। আসলে এটা একটা নামপদ মাত্র। এই ব্রাহ্ম ধর্মের কোনো মেটাফিজিক্স নেই, জীবনবোধ নেই, নেই উৎসব। এই ধর্মের হোতারা সবাই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনাচারে কঠোরভাবে হিন্দু ধর্মের রীতি মেনে চলত। যেমন ব্রাহ্ম সমাজের ঠাকুর বা মহির্ষি ছিল দেবেন ঠাকুর। কিন্তু ঠাকুর পরিবারে জাত-পাত উগ্রভাবে মানা হতো। প্রতিটি পূজা পালন করা হতো। ছেলেমেয়েদের বিয়েও হয়েছে ব্রাহ্মণদের সঙ্গেই।

ব্রাহ্মরা পূজাপার্বণ পালন করত, এটা আমাদের বাঙালিদের ‘কালচার’ বলে। এভাবেই হিন্দু ধর্ম ও বাঙালিয়ানা অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়। কালচার একটা বিশাল কনসেপ্ট, ভাষা তার অনুষঙ্গ মাত্র। রবীন্দ্রনাথ যখন নওয়াব আলী চৌধুরীকে বলেছিলেন, ‘মুসলমানবিদ্বেষী বলিয়া আমরা আমাদের জাতীয় সাহিত্য (বঙ্কিমের লেখা) পরিত্যাগ করিতে পারিনে। মুসলমানদের উচিত তাদের নিজেদেরই নিজেদের জাতীয় সাহিত্য তৈরি করা।’

কিংবা শরৎ লেখেন, ‘মুসলমান আর বাঙালির ফুটবল খেলা হচ্ছে।’

রবীন্দ্রনাথ কিংবা শরৎ ভালোভাবেই জানেন, এই মুসলমানও বাংলা ভাষাতেই কথা বলে, কিন্তু সেটা তাদের কাছে বাঙালি হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় এবং তাই গত ১ হাজার ১০০ বছর ধরে এই দেশের মুসলমানরা জুব্বা-টুপি কিংবা বোরকা পরার পরেও এগুলো কলকাতার স্টাবলিশমেন্টের কাছে ‘বাঙালির পোশাক না’।

বাংলাদেশের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক ধারা

পূর্ববঙ্গ (বর্তমান বাংলাদেশ) কখনোই কলকাতাকেন্দ্রিক সংস্কৃতির অংশ ছিল না। এখানকার সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হলো:

(ক) ইসলামিক প্রভাব

  • সুফিবাদ : লালন শাহ, হাসন রাজা, বাউলদের গানে ইসলাম ও মানবতাবাদের মিশ্রণ।
  • ঈদ, রমজান, শবে বরাত : প্রধান সামাজিক উৎসব, যা হিন্দু সংস্কৃতিতে অনুপস্থিত।
  • শিক্ষা-সংস্কৃতি : মাদরাসা শিক্ষা, ইসলামি সাহিত্য (যেমন মরমী কবিতা)।
  • গজল, হামদ, নাথ

(খ) লোকসংস্কৃতি

  • ভাটিয়ালি, মারফতি, জারি-সারি : ধর্মনিরপেক্ষ লোকসংগীত, যা হিন্দু দেবদেবী থেকে মুক্ত।
  • পালাগান ও যাত্রা : ইসলামিক ও ঐতিহাসিক কাহিনিভিত্তিক নাট্যকলা।

(গ) ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা

  • ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজির বাংলা বিজয় থেকে শুরু করে, বাংলা সালতানাত ও সুবাহ বাংলা।
  • হাজী শরিয়াতুল্লাহ, ফকির মজনু শাহ, মুনশি মোহাম্মাদ মেহেরুল্লাহ।

(ঘ) ভাষাগত পার্থক্য

  • পূর্ব বাংলার বাংলায় আরবি-ফারসি শব্দের প্রাচুর্য (যেমন ‘খোদা হাফেজ’, ‘মাশাল্লাহ’)।
  • আত্মীয়বাচক শব্দে পার্থক্য (কলকাতায় ‘জ্যাঠা’, ঢাকায় ‘চাচা’)।

প্রশ্ন : তাহলে বাংলাদেশের মুসলমানরা কি ‘বাঙালি’?

উত্তর : বাংলা ভাষার কারণে তারা ভাষাগতভাবে বাঙালি, কিন্তু সংস্কৃতিগতভাবে বাংলাদেশি বা বঙ্গসংস্কৃতির ধারক।

(এটা ১৫৪০ সালে পর্তুগিজ শিল্পীর আঁকা বাঙালি দম্পতির ছবি)

আমিও মোটেও বলছি না এই পার্থক্য নিয়ে আমাদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত হওয়া উচিত। অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক সাহেব বলেছিলেন, ১২০৩ থেকে ১৭৫৭ সাল পর্যন্ত এই ৫০০ বছরের মুসলমান শাসনামলে অনেক যুদ্ধ হয়েছে, মগার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা একটিও হয়নি। আগে যেভাবে সম্ভব হয়েছিল এখনো সেভাবে সম্ভব। শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থানের জন্য মিথ্যা বায়ান প্রচার করে কোনো রকম ভান ধরার দরকার নেই। মিথ্যা দিয়ে মহৎ কিছু করা সম্ভব নয়।

‘বাঙালি’ শব্দটি যদি কলকাতাকেন্দ্রিক হিন্দু সংস্কৃতিকে নির্দেশ করে, তাহলে বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য ‘বাংলাদেশি সংস্কৃতি’ বা ‘বঙ্গ সংস্কৃতি’ একটি যথার্থ পরিচয়। ভাষা আমাদের যুক্ত করেছে, কিন্তু সংস্কৃতি আমাদের স্বতন্ত্র করেছে। ‘ভাষা এক, সংস্কৃতি অনেক—এই বহুত্বের স্বীকৃতিই হলো আধুনিক সমাজের মাপকাঠি।’ বাংলাদেশের মুসলমানদের সংস্কৃতি বাংলা ভাষা, ইসলামিক মূল্যবোধ, বঙ্গীয় লোকঐতিহ্য ও সালতানাত বাংলার চেতনার সমন্বয়ে গঠিত। এটিকে অন্যের সংজ্ঞায় আবদ্ধ না করে নিজস্ব পরিচয়ে গর্বিত হওয়ার সময় এসেছে।

মীর সালমান শামিল

গবেষক, ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানি

sabbirmir@hotmail.com

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বহন করা সেই প্রিজন ভ্যানে কী আছে

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের নেয়া হয়েছে ক্যান্টনমেন্টের অস্থায়ী কারাগারে

গাজায় স্বাস্থ্য সংকট কয়েক প্রজন্ম থাকবে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত