ছাত্ররাজনীতি ও ছাত্র সংসদ : সময়-অসময়

আবদুল লতিফ মাসুম
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯: ৪২

উপনিবেশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে গোটা পৃথিবীতেই ছাত্রসমাজের একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্রসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাকিস্তানের আন্তঃঔপনিবেশিক (Internal Colonialism) আমলে এতদঞ্চলের ছাত্রসমাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিপূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের পর সংগতভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এর পরও কি ছাত্রসমাজকে রাজনীতি করতে হবে, শাসকদল-বিরোধী সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে এবং যুদ্ধ চালিয়ে যেতেই হবে? উত্তরটি আপেক্ষিক।

যারা আদর্শিক রাজনীতি করেন, সমাজ পরিবর্তনের আহ্বান জানান এবং ন্যায়ের সংগ্রামে অংশীদার হতে চান, তারা বলেন, ছাত্রদের অবশ্যই এসব বিষয়ে নিরন্তর সংগ্রামশীল হতে হবে। তারা স্লোগান দেন, ‘এ সমাজ ভাঙতে হবে নতুন সমাজ গড়তে হবে।’ নতুন সমাজ গড়ার সংগ্রামে ছাত্রদের নিত্যসাথি হতে বলেন তারা।

বিজ্ঞাপন

সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনকে তারা যথার্থ যুদ্ধ মনে করেন। তারা আহ্বান জানান, ‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় তার।’ অপরদিকে সমাজের একটি অংশ সেই চিরায়ত আপ্তবাক্য উচ্চারণ করেন—‘ছাত্রনং অধ্যয়ন তপঃ।’ ছাত্রজীবনে পড়াশোনাই ধ্যান-মন-সাধনা। প্রগতিশীলরা এ ধরনের বক্তব্যকে রক্ষণশীল, আরেকটু বাড়িয়ে প্রতিক্রিয়াশীল বলতে চান। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের সমাজ ও রাষ্ট্রে এই দ্বিবিধ তত্ত্বকথা এবং এর পক্ষে-বিপক্ষে যৌক্তিক বক্তব্য রয়েছে।

বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল অতীত রয়েছে। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন, সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান এবং অবশেষে ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে ছাত্রসমাজের দিকনির্দেশক ভূমিকা না থাকলে স্বাধীনতার বিজয় সম্ভব ছিল না।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই ছাত্রসমাজের স্বাভাবিক ভূমিকার প্রশ্নে বিতর্কের অবসান ঘটেনি। রাষ্ট্রিক দায় ছিল ছাত্রসমাজকে দায়িত্বশীলতার পথে, দেশ গড়ার পথে এবং মানুষের সেবায় উদ্বুদ্ধ করা। আর এসবই একটি আদর্শ রাষ্ট্র গড়ার পথে রাষ্ট্রবিজ্ঞান-নির্দেশিত জাতিগঠনের পথ (Nation Building Path)। মনীষী এরিস্টটল রাষ্ট্রকে একটি নৈতিক প্রতিষ্ঠান বা (Moral Institution) বলে বর্ণনা করেছেন।

দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক সাধারণ তথা ছাত্রসমাজ যাতে নৈতিক, দেশপ্রেমিক ও সেবাপরায়ণ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা সরকারেরই দায়িত্ব। দুর্ভাগ্যের বিষয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী সরকার ভবিষ্যৎ নাগরিকদের বিষয়ে কোনো চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করেনি। বরং তারা এই নতুন স্বাধীনতা-উদ্দীপ্ত প্রজন্মকে বিপথগামী করে। স্বাধীনতা-পরবর্তী অধ্যায় চিহ্নিত হয় চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও ডাণ্ডাবাজ জনগোষ্ঠী হিসেবে।

এসবের মাধ্যমে তারা মানুষ হওয়ার পথ ভুলে যায়। তাই আহ্বান আসে—‘আবার তোরা মানুষ হ।’ কী বিস্ময়কর ব্যাপার! আওয়ামী লীগের সেই চরিত্র-বৈশিষ্ট্য বদলায়নি কখনও। ২০০৯ সাল থেকে যখন তারা বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা করায়ত্ত করে, তখনও সেই পুরোনো চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের পুনরাবৃত্তি ঘটে। বিচারপতি হাবিবুর রহমানের মতো মানুষও বলেন, ‘দেশটি আজ বাজিকরদের হাতে।’ প্রয়াত প্রবীণ সাংবাদিক আরেকটু এগিয়ে বলেন, ‘এদের দেখলে চোর বলুন।’ বিগত ১৫ বছরের শাসনে তারা গোটা জাতির যে সর্বনাশ সাধন করেছে, তার সবচেয়ে বড় ক্ষতির বিষয় হচ্ছে ছাত্রসমাজের চরিত্রকে নষ্ট করে দেওয়া। তাদের সোনার ছেলেরা এ বিষয়ে এতটাই সুনাম অর্জন করে যে, লোকজন ‘ছাত্রলীগ’ শব্দটিকে ঘৃণার সঙ্গে উচ্চারণ করে।

যাদের কর্তব্য ছিল ছাত্রসমাজকে দেশের তরে ও দশের তরে নিযুক্ত করা, তারা অচিন্তনীয় লুটপাটতন্ত্রে শামিল হয়। বাংলাদেশের বিগত ৫৩ বছরের ইতিহাসে ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্রে এত ন্যক্কারজনক ইতিহাস কখনোই রচিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন এই ছাত্রলীগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ক্ষমতা রক্ষার আইনি লাঠিয়াল পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সবসময়ই সম্পৃক্ত থেকেছে বেআইনি হেলমেট বাহিনী।

কোনোরকম সরম-ভরম না রেখেই ‘কাউয়া কাদের’ ঘোষণা করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঠেকানোর জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। এভাবে অতীতের ছাত্ররাজনীতির গৌরবময় ইতিহাসকে তারা ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করেছে। আর সে কারণেই ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে বাংলাদেশ জনগোষ্ঠীর রুদ্ররোষে ভস্মীভূত হয় ছাত্রলীগ। সংগতভাবেই আজ তারা বেআইনি। ছাত্ররাজনীতির এই ভিন্ন ইতিহাসের পর খুব সংগতভাবেই বিষয়টি নিয়ে নাগরিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে সুশীল সমাজের মতামত প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ করে আন্দোলনরত ছাত্রনেতাদের এ সম্পর্কে বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

গণবিপ্লব-পরবর্তী পর্যায়ে দায়িত্বশীল ছাত্রনেতৃত্ব, শিক্ষক, রাজনীতিক ও সুশীল সমাজের বক্তব্যের বা সংবাদের কয়েকটি শিরোনাম ছিল এ রকম—ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত : হাসনাত আবদুল্লাহ, এনটিভি বিডি অনলাইন, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ । লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ মিছিল; বাংলাদেশ জার্নাল, ৮ নভেম্বর ২০২৪। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি অবসানে আমরা অটুট: আবু বাকের মজুমদার, কালবেলা, ৩১ অক্টোবর ২০২৪।

লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি চর্চার বিরুদ্ধে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ; দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪। জাবিতে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন; দৈনিক ইনকিলাব, ১০ নভেম্বর ২০২৪। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির পতনের সময় এসেছে: আসিফ মাহমুদ, দৈনিক ইত্তেফাক, ১২ আগস্ট। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি চবি শিক্ষকদের; সমকাল, ৯ আগস্ট ২০২৪। ক্যাম্পাসগুলোয় ছাত্ররাজনীতি থাকবে ছাত্র সংসদনির্ভর: হাসনাত আব্দুল্লাহ, চ্যানেল আই অনলাইন, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধে ছাত্রনেতাদের ঐকমত্য; দৈনিক ভোরের বার্তা, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হোক; দৈনিক মজলুমের কণ্ঠ, ২২ অক্টোবর ২০২৪।

এসব সংবাদ, মতামত ও উদ্ধৃতি ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্ত দেয়। ছাত্ররাজনীতি একেবারেই নিষিদ্ধ হোক, এটা কারও কাম্য নয়। ছাত্ররাজনীতি সর্বাত্মকভাবে নিষিদ্ধ হওয়াও উচিত নয়। বিগত অর্ধ শতাব্দীর খতিয়ান দেখে দেখে এখন আমরা একটি সমোঝোতায় আসতে পারি। আর সেটি হচ্ছে, ছাত্ররাজনীতি থাকবে, কিন্তু রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তি হিসেবে নয়।

এর মানে হলো ব্যক্তিগতভাবে ও সামষ্টিকভাবে ছাত্ররাজনীতি চর্চায় বাধা নেই। বাধা হলো সেখানে যেখানে ক্যাম্পাসে অথবা অন্যত্র কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন হিসেবে ছাত্ররাজনীতি সে দলের প্রতিনিধিত্ব করে। বিশেষ করে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক প্রাধান্য বিস্তারে দলীয় লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার যে নিন্দনীয় রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে, তা আর হতে দেওয়া উচিত নয়। অতীতে যেসব রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল তাদের রক্ষক ও ভক্ষক হিসেবে ছাত্রনেতারা ভূমিকা পালন করেছেন বলে প্রামাণ্য ইতিহাস আছে। সুতরাং সে ভুল ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেটি গোটা ছাত্রসমাজ তথা নাগরিক সাধারণের আকাঙ্ক্ষা।

ছাত্রনেতারা যেমন গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইতিহাস নির্মাণ করেছেন, এর ভবিষ্যৎ সীমা-পরিসীমাও তাদের নির্ণয় করতে হবে। বিষয়টি সংবেদনশীল এবং সেইসঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে প্রগতির পথে নিয়ে যেতে চান, শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভর দেখতে চান এবং বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের ব্রেন-ড্রেন বন্ধ করতে চান, তাদের অতি অবশ্যই একটি শক্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। দলীয় লেজুরবৃত্তির ছাত্ররাজনীতি আর থাকবে না, এটা নিশ্চিত করতে হবে।

জুলাই বিপ্লবের যে ঐতিহাসিক ঘোষণা আমরা প্রত্যাশা করি, সেখানেও যেন বিষয়টির অন্তর্ভুক্তি থাকে। শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে সবার কাছে বিনীত নিবেদন করি, দলীয় লেজুরবৃত্তির ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে না পারলে ভবিষ্যৎ দ্বন্দময় হয়ে উঠতে পারে। আমাদের ভবিষ্যৎ সন্তানদের শিক্ষার প্রশ্নে ও নিরাপত্তার স্বার্থে দলীয় লেজুরবৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি অতি অবশ্যই পরিহার করতে হবে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক নেতাদের সমঝোতায় আসতে হবে। আবারও বলছি, তত্ত্বকথার বিতর্কে না গিয়ে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে দল ও মতের ঊর্ধ্বে উঠে রাজনীতিকরা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই।

এতে কোনো সন্দেহ নেই, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ভবিষ্যৎ নাগরিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সোপান। এসব বিদ্যায়তনিক নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্ররা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণের শিক্ষা-দীক্ষা অর্জন করবে। বিগত ১৭ বছরে বাংলাদেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তার কারণ পতিত স্বৈরাচারের ভয় ছিল যখনই এরকম মুক্ত চিন্তা ও চেতনার প্রকাশ ঘটবে, তখনই তারা সেখানে তাদের পরাজয় নিশ্চিত জানবে। আশার কথা, ২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান এরই মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর কামরুল আহসান অনুরূপ ঘোষণা দিয়েছেন। রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি উত্থিত হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নির্বাচনের জন্য প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম ও কমিটি গঠন করেছে।

কিন্তু এখন গুরুতর বিতর্ক ও বিভেদ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে জুলাই বিপ্লবের ছাত্রনেতারা এবং ইসলামী ছাত্র শিবির বলছে, ‘এখনই সময়।’ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির ছাত্র অংশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বলছে, ‘এখন অসময়।’ তারা দাবি করছে ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চকসু নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট বিধিবিধানে পরিবর্তন আনার পরই নির্বাচন দেওয়া সঠিক হবে।

ছাত্রদল স্পষ্ট করেই বলছে, জাতীয় নির্বাচনের পরই কেবল ওই নির্বাচন অনুষ্ঠান যৌক্তিক হবে। অবশেষে এখানেও দেখা যাচ্ছে, রাজনীতির সমীকরণে সীমিত ছাত্ররাজনীতি। ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে স্বকীয় ও স্বাতন্ত্র্যপূর্ণ সত্তায় উদ্ভাসিত হোক ছাত্ররাজনীতি, এটাই নাগরিক প্রত্যাশা। অবশেষে কবি নজরুলের ভাষায় প্রার্থনা করি—‘এদের চক্ষে জ্বলুক জ্ঞানের মশাল বক্ষে দেশপ্রেম।’

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত