ফিল্ম স্কুলিং
শারীফ অনির্বাণ
স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পার করেছে বাংলাদেশ। তবু নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ‘শিক্ষা’র ন্যূনতম স্তর ‘সাক্ষরতা’ সবার জন্য অর্জন করা সক্ষম হয়নি। বছর যায়, বছর আসে, ইশতেহার আসে, সরকার বদলায়, মাস্টারপ্ল্যান, মেগা প্রজেক্ট, বাজেট বরাদ্দ হয়, সময়মতো বার্নও হয়, তবু যেন কোনো অজানা কারণে আজও শতভাগ সাক্ষরতা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ আজ এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে শিক্ষা তথা সাক্ষরতা শুধু মৌলিক অধিকার নয়, বরং একটি জাতীয় কর্তব্য। যদিও সরকারি খাতাকলমে দেশের সাক্ষরতার হার উল্লেখযোগ্য হারে (প্রায় ৭৬ শতাংশ) বেড়েছে (বিবিএস, ২০২৩), তবুও এখনো প্রায় ৩ কোটির বেশি মানুষ মৌলিক পড়ালেখা না জানায় নিরক্ষরতার অন্ধকারে নিমজ্জিত।
অন্যদিকে যাদের আমরা সাক্ষরতার আওতায় গণনা করছি, তারাও বৈশ্বিক হালনাগাদ সাক্ষরতা দক্ষতার সন্তোষজনক পর্যায়ে আছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ অবান্তর নয়। বিশেষ করে প্রান্তিক, দরিদ্র, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও দুর্গম এলাকার জনগণের মধ্যে এই নিরক্ষরতা কিংবা ব্যবহারিক সাক্ষরতার মাত্রা চিন্তার বিষয়ই বটে।
শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর প্রচলিত শিক্ষা কার্যক্রম আর পাঠ্যপুস্তক নির্ভর প্রথাগত শিক্ষার মডেল বৃহৎ এই গোষ্ঠীর জীবনে ন্যূনতম মৌলিক শিক্ষা পৌঁছে দিতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এই বাস্তবতায় এখন সময় এসেছে বিকল্প এবং কার্যকর কৌশল খুঁজে বের করার, যার মধ্যে ফিল্ম স্কুলিং বা ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলিংয়ের সমন্বয়ে সাক্ষরতা কার্যক্রম হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় বিকল্প মাধ্যম।
ফিল্ম কেবল বিনোদনের জন্য নয়, এটি হতে পারে এক শক্তিশালী শিক্ষা মাধ্যম। গবেষণা বলছে, ভিজুয়াল মিডিয়া-যেমন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, অ্যানিমেশন ভিডিও, ইউটিউব কনটেন্ট, মোবাইল অ্যাপস, ইন্টার্যাক্টিভ ভিডিও ইত্যাদি শিক্ষা গ্রহণে মনোযোগ আকর্ষণ, বোঝার দক্ষতা বৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদে স্মরণশক্তি বাড়াতে কার্যকর।
বিশ্বব্যাপী এই মাধ্যমগুলো 'এডুটেইনমেন্ট' বা শিক্ষা ও বিনোদনের সমন্বয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আফ্রিকার কিছু দেশে মোবাইল-ভিত্তিক অ্যানিমেটেড গল্পের মাধ্যমে শিশুদের সাক্ষরতা শেখানো হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও ডিজিটাল শিক্ষা ত্বরান্বিত করতে ‘প্রথম’ ও ‘টাটা ট্রাস্টের’ মতো প্রতিষ্ঠান মিলে বহু ডিজিটাল উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে।
ইউনেস্কোর গবেষণায় বলা হয়েছে, ভিজ্যুয়াল ও অডিও-ভিজ্যুয়াল মাধ্যম শিক্ষার্থীদের মধ্যে অংশগ্রহণ, উপলব্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কেননা, শব্দ, দৃশ্য, আবেগ ও বাস্তবতা যখন মিলিত হয়, তখন তা শেখার জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে; বিশেষ করে নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর জন্য যারা পাঠ্যবইয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে বা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
বিটিআরসির (২০২৪) তথ্যমতে, বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে এখন প্রায় ১৩ কোটিরও বেশি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে, সেখানে ফিল্মের মাধ্যমে উদ্দেশ্যভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার একটি অসাধারণ সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। একদিকে স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা, অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের প্রযুক্তি অভ্যস্ততা- দু’টোই সুযোগ তৈরি করেছে ভিজ্যুয়াল শিক্ষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার।
এই প্রেক্ষাপটে একটি জাতীয় পর্যায়ের “ফিল্ম-নির্ভর সাক্ষরতা মাস্টারপ্ল্যান” নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। তবে সবার আগে অবশ্যই নির্দিষ্ট লক্ষ্যদল বা ক্লায়েন্টেল নির্ধারণপূর্বক সারাদেশের সম্ভাব্য জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ও বৈশিষ্ট্যগত ভিন্নতা বিবেচনায় রেখে এ বিষয়ে একটি উপযুক্ত বেসলাইন গবেষণা পরিচালনা করতে হবে। সে গবেষণার ফলাফল ও সুপারিশের উপর ভিত্তি করে প্রথমত, ১৫–৪৫ বছর বয়স্ক নিরক্ষর প্রাপ্তবয়স্ক, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ভাষাভিত্তিক সংখ্যালঘু, গ্রামীণ ও পাহাড়ি অঞ্চলের নারী ও তরুণ, পথশিশু ও শ্রমজীবী জনগণসহ অন্যান্য নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে চূড়ান্ত লক্ষ্যদল নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য, বিষয়বস্তু ও পাঠ্যসূচি নির্বাচন করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তি, শিক্ষার রীতিনীতি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়জ্ঞান সম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যভিত্তিক কনটেন্ট তৈরি করা যেতে পরে। সে ক্ষেত্রে, গ্রামীণ জনগোষ্ঠী, নারী, শ্রমজীবী মানুষ, পথশিশু কিংবা পাহাড়ি অঞ্চলের জনগণের অভিজ্ঞতা, ভাষা ও দৈনন্দিন জীবনের গল্প বিবেচনায় নিয়ে তাতে শিক্ষার উপাদান মিশিয়ে তৈরি হতে পারে অ্যানিমেটেড গল্প, শর্ট ফিল্ম বা নাট্যধর্মী ভিডিও।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি অ্যানিমেশন ভিডিওতে চরিত্রকে দোকানে গিয়ে জিনিস কিনতে দেখিয়ে বাংলা বর্ণ, সংখ্যা, হিসাব শেখানো যেতে পারে, যেখানে বিনোদনের সঙ্গে অক্ষরজ্ঞান শেখানো হবে। কিংবা কোন স্বল্পদৈর্ঘ্য ফিল্ম বা তথ্যচিত্রের মাধ্যমে জীবন দক্ষতাসহ তথ্য সাক্ষরতা, ডিজিটাল সাক্ষরতা শেখানো যেতে পারে।
তৃতীয়ত, ‘ভ্রাম্যমাণ ছবিঘর’ বা মোবাইল ফিল্ম ইউনিট চালু করা যেতে পারে, যারা একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যদল বা শিক্ষার্থী ইউনিটের উদ্দেশ্যে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে খোলা মাঠে কিংবা বাজারে শিক্ষামূলক ভিডিও দেখাবে। সোলার চালিত প্রজেক্টর এবং অফলাইন ভিডিও কনটেন্ট ব্যবহার করে এসব ইউনিট বিদ্যুৎ বা ইন্টারনেট ছাড়াও কার্যকর হবে।
এ কার্যক্রমকে লজিস্টিক সহায়তা দেয়ার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা যেতে পারে “কমিউনিটি ফিল্ম ফ্যাসিলিটেটর স্কোয়াড”, যারা কিনা এ কার্যক্রমের নির্দিষ্ট শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন উদ্দেশ্যে বর্ণনা করবেন, ভিডিও প্রদর্শন করবেন, আলোচনা করবেন এবং শিক্ষার্থীদের শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবেন।
এমনকি গণসাক্ষরতা কার্যক্রমের ‘একজন-প্রতিজন’ মডেল অনুসরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কারিকুলামের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের এ ধরনের ভলান্টিয়ারিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। ফলে, এ ধরনের কার্যক্রমে শিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন কিংবা জনবল নিয়োগে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় না করেই প্রচলিত অবকাঠামো সুবিধা যেমন - ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার বা কোনো বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করে ফ্যাসিলিটেটর উপযুক্ত সম্মানীর মাধ্যমে খুব সামান্য অর্থ ব্যয় করেই যথাযথ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হতে পারে।
এ ছাড়া উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ‘সাক্ষরতা নাটক’, ‘সাক্ষরতা শর্টফিল্ম’ এবং ‘এসো দেখে শিখি’ শিরোনামে ধারাবাহিক ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট প্রচার করা যেতে পারে। একই কনটেন্ট ইউটিউব, ফেসবুক পেইজে বা মোবাইল অ্যাপে প্রকাশ করলে তা আরও বিস্তৃত দর্শকগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাবে। সেসব কন্টেন্টকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যদলের জন্য সাক্ষরতা পাঠ্যসূচির সহযোগী কন্টেন্ট হিসেবে বিবেচনার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এভাবে ফিল্ম ও ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলিং একযোগে গণশিক্ষাকে গতিশীল করতে পারে।
এই উদ্যোগের ফলে শুধু অক্ষরজ্ঞানই বাড়বে না, বরং শেখার প্রতি এক নতুন আগ্রহ তৈরি হবে। যারা কখনো স্কুলে যাননি, তারাও সিনেমার মতো গল্প দেখে পড়া, লেখা ও হিসাব করতে আগ্রহী হবেন। এতে শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক বার্তা, যেমন-স্বাস্থ্য, নাগরিক অধিকার, নারী সুরক্ষা, ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষা, সুন্দর সমাজ গঠনে করণীয়, সর্বস্তরে নৈতিকতা চর্চা ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় বিষয়ও সহজে মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
তবে ফলপ্রসূ মনে হলেও এ ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন, অনেক অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত; সমাধান হিসেবে সোলার চালিত প্রজেক্টর ও অফলাইন কনটেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। ভাষাগত বৈচিত্র্যও একটি বিষয়। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষায় ডাবিং বা সাবটাইটেলিং সমাধান হতে পারে।
আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থায়ন, যা সরকারি বাজেট, এসডিজি ফান্ড, সিএসআর প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে কেবল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জনবল কাজে লাগিয়ে অতিরঞ্জিত বাজেট বরাদ্দ ছাড়াই এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে, প্রকল্পভিত্তিক ‘প্রসেস মডেলে’ না গিয়ে ‘প্রোডাক্ট মডেলে’ কর্মসূচি পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে আন্তরিক হতে হবে।
সর্বোপরি, বেসলাইন গবেষণার পাশাপাশি এই পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রমাণে সংক্ষিপ্ত সময়ের একটি পাইলটিং কর্মসূচি পরিচালনা করা যেতে পারে। যেখানে উদাহরণস্বরূপ কুড়িগ্রাম, বান্দরবান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সাতক্ষীরার চারটি উপজেলায় ছয় মাসব্যাপী ‘এসো ছবি দেখি, পড়ি- লিখি- শিখি’ শিরোনামে কার্যক্রম চালু করা যেতে পারে। এতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যদলের সামর্থ্য বিবেচনায় নির্দিষ্ট শিক্ষাক্রমের আওতায় ২০টি শিক্ষামূলক অ্যানিমেটেড ভিডিও, ৪টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ফিল্ম, ভ্রাম্যমাণ স্ক্রিনিং দল ও প্রশিক্ষিত স্থানীয় ফ্যাসিলিটেটর স্কোয়াড অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কোর্সে শেষান্তে ফলাফল বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ কর্মসূচি ধাপে ধাপে জাতীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।
সাক্ষরতা অর্জন শুধু একটি শিক্ষা-সূচক নয়; এটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সুশাসন, নারী ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও নাগরিক অধিকারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ফিল্ম ও ডিজিটাল মিডিয়া বর্তমান প্রযুক্তি-নির্ভর সমাজে এই সাক্ষরতা অর্জনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে, বিশেষ করে যখন প্রচলিত পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান। তবে এর পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে প্রযুক্তির সমতা, প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং সরকার-বিশ্ববিদ্যালয়-প্রযুক্তি খাতের সমন্বিত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এই উদ্যোগ জাতীয় সাক্ষরতা কর্মসূচিকে আরও গতিশীল করে তুলতে পারে এবং স্বনির্ভর বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে পারে।
লেখকঃ স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা, শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক, দোকুজ এয়লুল ইউনিভার্সিটি, ইজমির, তুরস্ক
ই-মেইল: sharifulislam@primeuniversity.edu.bd
স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পার করেছে বাংলাদেশ। তবু নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ‘শিক্ষা’র ন্যূনতম স্তর ‘সাক্ষরতা’ সবার জন্য অর্জন করা সক্ষম হয়নি। বছর যায়, বছর আসে, ইশতেহার আসে, সরকার বদলায়, মাস্টারপ্ল্যান, মেগা প্রজেক্ট, বাজেট বরাদ্দ হয়, সময়মতো বার্নও হয়, তবু যেন কোনো অজানা কারণে আজও শতভাগ সাক্ষরতা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ আজ এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে শিক্ষা তথা সাক্ষরতা শুধু মৌলিক অধিকার নয়, বরং একটি জাতীয় কর্তব্য। যদিও সরকারি খাতাকলমে দেশের সাক্ষরতার হার উল্লেখযোগ্য হারে (প্রায় ৭৬ শতাংশ) বেড়েছে (বিবিএস, ২০২৩), তবুও এখনো প্রায় ৩ কোটির বেশি মানুষ মৌলিক পড়ালেখা না জানায় নিরক্ষরতার অন্ধকারে নিমজ্জিত।
অন্যদিকে যাদের আমরা সাক্ষরতার আওতায় গণনা করছি, তারাও বৈশ্বিক হালনাগাদ সাক্ষরতা দক্ষতার সন্তোষজনক পর্যায়ে আছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ অবান্তর নয়। বিশেষ করে প্রান্তিক, দরিদ্র, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও দুর্গম এলাকার জনগণের মধ্যে এই নিরক্ষরতা কিংবা ব্যবহারিক সাক্ষরতার মাত্রা চিন্তার বিষয়ই বটে।
শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর প্রচলিত শিক্ষা কার্যক্রম আর পাঠ্যপুস্তক নির্ভর প্রথাগত শিক্ষার মডেল বৃহৎ এই গোষ্ঠীর জীবনে ন্যূনতম মৌলিক শিক্ষা পৌঁছে দিতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এই বাস্তবতায় এখন সময় এসেছে বিকল্প এবং কার্যকর কৌশল খুঁজে বের করার, যার মধ্যে ফিল্ম স্কুলিং বা ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলিংয়ের সমন্বয়ে সাক্ষরতা কার্যক্রম হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় বিকল্প মাধ্যম।
ফিল্ম কেবল বিনোদনের জন্য নয়, এটি হতে পারে এক শক্তিশালী শিক্ষা মাধ্যম। গবেষণা বলছে, ভিজুয়াল মিডিয়া-যেমন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, অ্যানিমেশন ভিডিও, ইউটিউব কনটেন্ট, মোবাইল অ্যাপস, ইন্টার্যাক্টিভ ভিডিও ইত্যাদি শিক্ষা গ্রহণে মনোযোগ আকর্ষণ, বোঝার দক্ষতা বৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদে স্মরণশক্তি বাড়াতে কার্যকর।
বিশ্বব্যাপী এই মাধ্যমগুলো 'এডুটেইনমেন্ট' বা শিক্ষা ও বিনোদনের সমন্বয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আফ্রিকার কিছু দেশে মোবাইল-ভিত্তিক অ্যানিমেটেড গল্পের মাধ্যমে শিশুদের সাক্ষরতা শেখানো হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও ডিজিটাল শিক্ষা ত্বরান্বিত করতে ‘প্রথম’ ও ‘টাটা ট্রাস্টের’ মতো প্রতিষ্ঠান মিলে বহু ডিজিটাল উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে।
ইউনেস্কোর গবেষণায় বলা হয়েছে, ভিজ্যুয়াল ও অডিও-ভিজ্যুয়াল মাধ্যম শিক্ষার্থীদের মধ্যে অংশগ্রহণ, উপলব্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কেননা, শব্দ, দৃশ্য, আবেগ ও বাস্তবতা যখন মিলিত হয়, তখন তা শেখার জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে; বিশেষ করে নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর জন্য যারা পাঠ্যবইয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে বা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
বিটিআরসির (২০২৪) তথ্যমতে, বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে এখন প্রায় ১৩ কোটিরও বেশি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে, সেখানে ফিল্মের মাধ্যমে উদ্দেশ্যভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার একটি অসাধারণ সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। একদিকে স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা, অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের প্রযুক্তি অভ্যস্ততা- দু’টোই সুযোগ তৈরি করেছে ভিজ্যুয়াল শিক্ষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার।
এই প্রেক্ষাপটে একটি জাতীয় পর্যায়ের “ফিল্ম-নির্ভর সাক্ষরতা মাস্টারপ্ল্যান” নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। তবে সবার আগে অবশ্যই নির্দিষ্ট লক্ষ্যদল বা ক্লায়েন্টেল নির্ধারণপূর্বক সারাদেশের সম্ভাব্য জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ও বৈশিষ্ট্যগত ভিন্নতা বিবেচনায় রেখে এ বিষয়ে একটি উপযুক্ত বেসলাইন গবেষণা পরিচালনা করতে হবে। সে গবেষণার ফলাফল ও সুপারিশের উপর ভিত্তি করে প্রথমত, ১৫–৪৫ বছর বয়স্ক নিরক্ষর প্রাপ্তবয়স্ক, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ভাষাভিত্তিক সংখ্যালঘু, গ্রামীণ ও পাহাড়ি অঞ্চলের নারী ও তরুণ, পথশিশু ও শ্রমজীবী জনগণসহ অন্যান্য নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে চূড়ান্ত লক্ষ্যদল নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য, বিষয়বস্তু ও পাঠ্যসূচি নির্বাচন করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তি, শিক্ষার রীতিনীতি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়জ্ঞান সম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যভিত্তিক কনটেন্ট তৈরি করা যেতে পরে। সে ক্ষেত্রে, গ্রামীণ জনগোষ্ঠী, নারী, শ্রমজীবী মানুষ, পথশিশু কিংবা পাহাড়ি অঞ্চলের জনগণের অভিজ্ঞতা, ভাষা ও দৈনন্দিন জীবনের গল্প বিবেচনায় নিয়ে তাতে শিক্ষার উপাদান মিশিয়ে তৈরি হতে পারে অ্যানিমেটেড গল্প, শর্ট ফিল্ম বা নাট্যধর্মী ভিডিও।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি অ্যানিমেশন ভিডিওতে চরিত্রকে দোকানে গিয়ে জিনিস কিনতে দেখিয়ে বাংলা বর্ণ, সংখ্যা, হিসাব শেখানো যেতে পারে, যেখানে বিনোদনের সঙ্গে অক্ষরজ্ঞান শেখানো হবে। কিংবা কোন স্বল্পদৈর্ঘ্য ফিল্ম বা তথ্যচিত্রের মাধ্যমে জীবন দক্ষতাসহ তথ্য সাক্ষরতা, ডিজিটাল সাক্ষরতা শেখানো যেতে পারে।
তৃতীয়ত, ‘ভ্রাম্যমাণ ছবিঘর’ বা মোবাইল ফিল্ম ইউনিট চালু করা যেতে পারে, যারা একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যদল বা শিক্ষার্থী ইউনিটের উদ্দেশ্যে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে খোলা মাঠে কিংবা বাজারে শিক্ষামূলক ভিডিও দেখাবে। সোলার চালিত প্রজেক্টর এবং অফলাইন ভিডিও কনটেন্ট ব্যবহার করে এসব ইউনিট বিদ্যুৎ বা ইন্টারনেট ছাড়াও কার্যকর হবে।
এ কার্যক্রমকে লজিস্টিক সহায়তা দেয়ার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা যেতে পারে “কমিউনিটি ফিল্ম ফ্যাসিলিটেটর স্কোয়াড”, যারা কিনা এ কার্যক্রমের নির্দিষ্ট শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন উদ্দেশ্যে বর্ণনা করবেন, ভিডিও প্রদর্শন করবেন, আলোচনা করবেন এবং শিক্ষার্থীদের শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবেন।
এমনকি গণসাক্ষরতা কার্যক্রমের ‘একজন-প্রতিজন’ মডেল অনুসরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কারিকুলামের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের এ ধরনের ভলান্টিয়ারিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। ফলে, এ ধরনের কার্যক্রমে শিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন কিংবা জনবল নিয়োগে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় না করেই প্রচলিত অবকাঠামো সুবিধা যেমন - ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার বা কোনো বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করে ফ্যাসিলিটেটর উপযুক্ত সম্মানীর মাধ্যমে খুব সামান্য অর্থ ব্যয় করেই যথাযথ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হতে পারে।
এ ছাড়া উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ‘সাক্ষরতা নাটক’, ‘সাক্ষরতা শর্টফিল্ম’ এবং ‘এসো দেখে শিখি’ শিরোনামে ধারাবাহিক ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট প্রচার করা যেতে পারে। একই কনটেন্ট ইউটিউব, ফেসবুক পেইজে বা মোবাইল অ্যাপে প্রকাশ করলে তা আরও বিস্তৃত দর্শকগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাবে। সেসব কন্টেন্টকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যদলের জন্য সাক্ষরতা পাঠ্যসূচির সহযোগী কন্টেন্ট হিসেবে বিবেচনার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এভাবে ফিল্ম ও ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলিং একযোগে গণশিক্ষাকে গতিশীল করতে পারে।
এই উদ্যোগের ফলে শুধু অক্ষরজ্ঞানই বাড়বে না, বরং শেখার প্রতি এক নতুন আগ্রহ তৈরি হবে। যারা কখনো স্কুলে যাননি, তারাও সিনেমার মতো গল্প দেখে পড়া, লেখা ও হিসাব করতে আগ্রহী হবেন। এতে শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক বার্তা, যেমন-স্বাস্থ্য, নাগরিক অধিকার, নারী সুরক্ষা, ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষা, সুন্দর সমাজ গঠনে করণীয়, সর্বস্তরে নৈতিকতা চর্চা ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় বিষয়ও সহজে মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
তবে ফলপ্রসূ মনে হলেও এ ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন, অনেক অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত; সমাধান হিসেবে সোলার চালিত প্রজেক্টর ও অফলাইন কনটেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। ভাষাগত বৈচিত্র্যও একটি বিষয়। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষায় ডাবিং বা সাবটাইটেলিং সমাধান হতে পারে।
আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থায়ন, যা সরকারি বাজেট, এসডিজি ফান্ড, সিএসআর প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে কেবল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জনবল কাজে লাগিয়ে অতিরঞ্জিত বাজেট বরাদ্দ ছাড়াই এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে, প্রকল্পভিত্তিক ‘প্রসেস মডেলে’ না গিয়ে ‘প্রোডাক্ট মডেলে’ কর্মসূচি পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে আন্তরিক হতে হবে।
সর্বোপরি, বেসলাইন গবেষণার পাশাপাশি এই পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রমাণে সংক্ষিপ্ত সময়ের একটি পাইলটিং কর্মসূচি পরিচালনা করা যেতে পারে। যেখানে উদাহরণস্বরূপ কুড়িগ্রাম, বান্দরবান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সাতক্ষীরার চারটি উপজেলায় ছয় মাসব্যাপী ‘এসো ছবি দেখি, পড়ি- লিখি- শিখি’ শিরোনামে কার্যক্রম চালু করা যেতে পারে। এতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যদলের সামর্থ্য বিবেচনায় নির্দিষ্ট শিক্ষাক্রমের আওতায় ২০টি শিক্ষামূলক অ্যানিমেটেড ভিডিও, ৪টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ফিল্ম, ভ্রাম্যমাণ স্ক্রিনিং দল ও প্রশিক্ষিত স্থানীয় ফ্যাসিলিটেটর স্কোয়াড অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কোর্সে শেষান্তে ফলাফল বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ কর্মসূচি ধাপে ধাপে জাতীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।
সাক্ষরতা অর্জন শুধু একটি শিক্ষা-সূচক নয়; এটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সুশাসন, নারী ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও নাগরিক অধিকারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ফিল্ম ও ডিজিটাল মিডিয়া বর্তমান প্রযুক্তি-নির্ভর সমাজে এই সাক্ষরতা অর্জনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে, বিশেষ করে যখন প্রচলিত পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান। তবে এর পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে প্রযুক্তির সমতা, প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং সরকার-বিশ্ববিদ্যালয়-প্রযুক্তি খাতের সমন্বিত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এই উদ্যোগ জাতীয় সাক্ষরতা কর্মসূচিকে আরও গতিশীল করে তুলতে পারে এবং স্বনির্ভর বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে পারে।
লেখকঃ স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা, শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক, দোকুজ এয়লুল ইউনিভার্সিটি, ইজমির, তুরস্ক
ই-মেইল: sharifulislam@primeuniversity.edu.bd
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৮ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৮ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৮ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে